মুক্তিযুদ্ধের খবর পূর্ব পাকিস্তানে কীভাবে প্রকাশিত হতো?
৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৪৩
উনিশশ একাত্তর সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রণাঙ্গনের পাশাপাশি প্রচার মাধ্যম, বিশেষ করে সংবাদপত্রও যুদ্ধকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর থেকে ১৯৭১ সালে যুদ্ধ-চলাকালীন নয় মাস সবগুলো সংবাদপত্রের নিয়ন্ত্রণ ছিল পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর হাতে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না।
বিবিসিতে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, পঁচিশে মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী ঢাকায় অভিযান চালানোর সময় থেকে শুরু করে ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয়ের আগ পর্যন্ত যুদ্ধের কোন প্রতিফলন সংবাদপত্রে উঠে আসেনি। পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ ছিল , সেটি উঠে আসে বিভিন্ন পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম এবং ভারতীয় সংবাদপত্রে।
পূর্ব কিংবা পশ্চিম পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোতে যুদ্ধের আঁচ মাত্র ছিল না। পাকিস্তান সরকারের দেওয়া প্রেসনোট এবং তাদের নির্দেশিত খবরা-খবর ছাপা হতো সংবাদপত্রে।
দৈনিক আজাদ
মার্চের মাসের প্রথম তিন সপ্তাহ
উনিশ’শ একাত্তর সালের ১লা মার্চ থেকে শুরু করে ২৫শে মার্চ পর্যন্ত প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোতে শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্য প্রাধান্য পেয়েছে। পাকিস্তান সরকারের প্রতি শেখ মুজিবের আল্টিমেটাম, ৭ই মার্চের জনসভা এবং মুজিব-ইয়াহিয়া আলোচনার নানা খুঁটিনাটি প্রকাশিত হতো সংবাদপত্রে। এক অর্থে বলা যায়, সংবাদপত্রগুলো ছিল বাঙালীর স্বাধিকার আন্দোলনের পক্ষে বেশ উচ্চকণ্ঠ।
সাতই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণ দেবার পরদিন সবগুলো পত্রিকায় সে খবর প্রাধান্য পায়। দৈনিক আজাদ পত্রিকায় ৮ই মার্চ শিরোনাম ছিল “এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।” সে সমাবেশের নানা খবরা খবর এবং ছবি ছাপা হয় বিভিন্ন সংবাদপত্রে। এরপর থেকে শেখ মুজিবের সাথে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের আলোচনার খবর প্রকাশিত হয়। সেখানেও শেখ মুজিব এবং আওয়ামী লীগের বক্তব্য ফলাও করে প্রকাশ করেছে সংবাদপত্রগুলো।
বাইশে মার্চ দৈনিক আজাদ পত্রিকায় শেখ মুজিবুর রহমানকে উদ্ধৃত করে শিরোনাম করা হয় – আন্দোলন শিথিল হইবে না: মুজিব। একদিকে শেখ মুজিবের ডাকে অসহযোগ আন্দোলন এবং অন্যদিকে মুজিব ইয়াহিয়া বৈঠক। এ দুটো ঘটনাপ্রবাহের নানা খবরা-খবরে পরিপূর্ণ ছিল তখনকার সংবাদপত্র।
আওয়ামী লীগ নেতা তাজউদ্দীনের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে ২৫শে মার্চ প্রকাশিত দৈনিক আজাদ পত্রিকায় শিরোনাম করা হয় – আলোচনা দীর্ঘ করিতে প্রস্তুত নহি।
২৫ মার্চের আক্রমণ ও তারপর
উনিশ’শ একাত্তর সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যেভাবে ঢাকার ঘুমন্ত মানুষের অতর্কিতে আক্রমণ শুরু করে। এরকম আচমকা আক্রমণের বিষয়ে কেউ কোন ধারণা করতে পারেনি। পঁচিশে মার্চের আগে সংবাদপত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কোন সংবাদপত্রে এ সংক্রান্ত আগাম কোন ধারণা করতে পারেনি।
পঁচিশে মার্চ রাতের হত্যাযজ্ঞ এবং এরপরই শেখ মুজিবুর রহমানকে আটকের বিষয়টি পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রে দেখা যায়নি। পঁচিশে এবং ২৬শে মার্চে ঢাকায় বেশ কয়েকটি পত্রিকা অফিস আক্রান্ত হবার পর অনেক সাংবাদিক আত্মগোপনে ছিলেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি বড় পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়। অন্যরা তখন পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। হত্যাযজ্ঞের খবর ছাপানোর কোন উপায় নেই।
ভরসা ছিল বিদেশী সংবাদপত্র
পঁচিশে মার্চ ঢাকাবাসীর উপর আক্রমণের খবর যাতে দেশের বাইরে প্রচারিত না হয় সেজন্য বন্দুকের মুখে সকল বিদেশী সাংবাদিককে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল আটকে রাখা হয় এবং ধরে করাচী পাঠিয়ে দেয়া হয়। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যায়, ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতের ঢাকার পরিস্থিতি ও শেখ মুজিবকে আটকের ঘটনা ২৭শে মার্চেই বিশ্বের অন্তত ২৫টি দেশের পত্রিকা বা সংবাদ সংস্থার খবরে প্রকাশিত হয়।
ব্রিটেনের ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকার ২৬ বছর বয়সী সাইমন ড্রিং পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর চোখ এড়িয়ে থেকে যেতে সক্ষম হন। পরে তিনি পূর্ব পাকিস্তান থেকে ব্যাংককে গিয়ে যে প্রতিবেদন পাঠান সেটি ১৯৭১ সালের ৩০শে মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ছাপা হয়।
বাংলাদেশ জেনোসাইড এন্ড ওয়ার্ল্ড প্রেস বইতে অনূদিত সে রিপোর্টের কয়েকটি লাইন তুলে ধরা হলো- “ঢাকা এখন ধ্বংস এবং ভীতির নগরী। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঠাণ্ডা মাথায় ২৪ ঘন্টাব্যাপী অবিরাম শেল বর্ষণে সেখানে সাত হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। ছাত্রাবাসে নিজেদের বিছানাতেই ছাত্রদের হত্যা করা হয়েছে। বাজারগুলোতে কসাইদেরকে নিজেদের দোকানের পিছনে হত্যা করা হয়েছে।”
দিল্লির দি স্টেটসম্যানের খবর ছিলো: “বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে, সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে রহমানের পদক্ষেপ। একটি গোপন বেতার থেকে প্রচারিত ভাষণে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের পূর্বাংশকে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে নতুন নামকরণ করেছেন।”
দি ডেইলি টেলিগ্রাফ, লন্ডন: ২৭শে মার্চ দি ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ‘সিভিল ওয়ার ফ্লেয়ারস ইন ইস্ট পাকিস্তান: শেখ এ ট্রেইটর, সেইস প্রেসিডেন্ট’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীন ঘোষণা ও ইয়াহিয়া খান তার বেতার ভাষণে শেখ মুজিবকে বিশ্বাসঘাতক বলার কথা উল্লেখ করা হয়।
এপ্রিল মাস ও তারপর
ছাব্বিশে মার্চ থেকে ৩০শে মার্চ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (সদ্য স্বাধীন ঘোষণা করা বাংলাদেশ) কোন সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি।
দৈনিক পাকিস্তান
এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে কিছু সংবাদপত্র সীমিত আকারে বের হয়। তবে সেসব সংবাদপত্রের খবর দেখলে মনে হয়, সংবাদপত্রগুলো ছিল পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র। সরকারের দেয়া প্রেসনোটের উপর ভিত্তি করে অধিকাংশ সংবাদ ছাপানো হতো। পঁচিশে মার্চের আগে সেসব পত্রিকা শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাঙালির স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার ছিল, সেসব পত্রিকার চরিত্রও আমূল বদলে যায়। অবশ্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চাপের কারণে তাদের পক্ষে স্বাধীন সাংবাদিকতা করা সম্ভব ছিল না।
এপ্রিল মাসের শুরুতে প্রথম যেদিন পত্রিকা প্রকাশিত হয় তখন এমনভাবে খবরাখবর তুলে ধরা হয় যে পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি খুব স্বাভাবিক রয়েছে। দোসরা এপ্রিল দৈনিক পাকিস্তানের প্রধান শিরোনাম ছিল – আজ ব্যাংকে লেনদেন শুরু। সরকারি প্রেসনোটের বরাত দিয়ে সে খবরে বলা হয়, “পূর্ব পাকিস্তানের সকল প্রধান প্রধান শহর ও সমগ্র পল্লী অঞ্চল গতকাল শান্ত ছিল এবং কোন জায়গা থেকে কোন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।”
এপ্রিল থেকে শুরু কয়েক মাস পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন সংবাদপত্র পর্যালোচনা করে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করা যায়। এগুলো হচ্ছে .
. ভারত বিরোধিতা
. পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখানোর চেষ্টা
. পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত দেখানোর চেষ্টা
. বিভিন্ন সরকারি উন্নয়ন কাজের খবর
. মুক্তিবাহিনীর প্রতি বিষোদগার
তেসরা এপ্রিল দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল – ভারত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র যোগাচ্ছে। পাঁচই এপ্রিল দৈনিক আজাদ পত্রিকায় প্রকাশিত অন্যতম প্রধান শিরোনাম ছিল – ভারতের রণ পাঁয়তারা। সে খবরে বলা হয়, “ভারতীয় সৈন্যগণ বেসামরিক পোশাক পরিধান পূর্বক সীমান্ত অতিক্রম করিয়া পূর্ব পাকিস্তানে প্রবেশ করিয়াছে।”
অস্থায়ী সরকার গঠনের খবর নেই
উনিশ’শ একাত্তর সালের ১৭ই মার্চ মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলায় ভারতীয় সীমান্তের কাছে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে। যুদ্ধের নয় মাস ভারতে বসে পরিচালিত হয়েছিল বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার। ভারত সরকারের আশ্রয় এবং সহযোগিতায় গঠিত হয়েছিল এই সরকার। সেখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন রাজনৈতিক, সামরিক এবং কূটনীতিক বিষয়গুলো পরিচালনা করা হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোতে এ সংক্রান্ত কোন খবরই ছিল না। তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রে সে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। কারণ, সে অনুষ্ঠানে বেশ কিছু বিদেশী সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণের পাঁচদিন পরে পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোতে এ খবর ছাপা হয়েছে ভিন্নভাবে। তেইশে এপ্রিল দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার শিরোনাম ছিল – তথাকথিত বাংলাদেশ সরকারকে ভারত স্বীকার করে না। সে খবরে উল্লেখ করা হয়, ” ভারত পাকিস্তানকে আশ্বাস দিয়েছে যে তারা তথাকথিত বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকার করে না এবং কলকাতায় পাকিস্তানের সাবেক ডেপুটি হাই কমিশনার জনাব হোসেন আলীকে কোন কূটনৈতিক সুবিধা দেয়া হবে না।”
ভারতীয় আক্রমণের খবর
উনিশ’শ একাত্তর সালের ৩রা ডিসেম্বর শুরু হয়ে যায় ভারত-পাকিস্তান সর্বাত্মক যুদ্ধ। মাত্র ১৩ দিনের যুদ্ধে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। চৌঠা ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাক শিরোনাম করে – পশ্চিম পাকিস্তান আক্রান্ত।
দৈনিক ইত্তেফাক
পূর্ব পাকিস্তানের সংবাদপত্রে যেসব খবরা-খবর ছাপা হচ্ছিল তাতে মনে হয় যুদ্ধে পাকিস্তান জয়লাভ করতে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা ছিল পুরোপুরি উল্টো। পাঁচই ডিসেম্বর ইংরেজি দৈনিক মর্নিং নিউজ-এর শিরোনাম ছিল – ৪৬টি ভারতীয় বিমান ধ্বংস। একই দিন দৈনিক পূর্বদেশ শিরোনাম করেছিল- আক্রমণ স্তব্ধ করে পাল্টা আঘাত শুরু। এমনকি ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ পর্যন্ত প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোতে যুদ্ধে পাকিস্তানের সাফল্য তুলে ধরা হয়। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি ছিল পুরোপুরি উল্টো। ভারতীয় বিমান আক্রমণে দিশাহারা পাকিস্তানী বাহিনী তখন আত্মসমর্পণের চিন্তা করছে। অথচ সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর দেখলে সেটি বোঝার কোন উপায় নেই। এ সময় ভারতের সাথে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়া এবং পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘে নানা আলোচনার খবর প্রকাশিত হয়।
বিজয় পরবর্তী সংবাদপত্র
দৈনিক পূর্বদেশ
ডিসেম্বর মাসের ১৩ তারিখের পর কয়েকদিন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আর কোন সংবাদপত্র প্রকাশিত হবার রেকর্ড পাওয়া যায়নি। ষোলই ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের পরে সংবাদপত্রগুলোর নতুন এক চেহারা নিয়ে আবির্ভূত হয়। ডিসেম্বরের ২০ তারিখ দৈনিক পূর্বদেশ লাল কালিতে শিরোনাম করে – রক্তস্নাত বাংলাদেশ কাঁদো।
দৈনিক বাংলা
একই দিন দৈনিক পাকিস্তান তাদের পত্রিকার নাম পরিবর্তন করে দৈনিক বাংলা করে। পাকিস্তান শব্দটি কেটে বাংলা যোগ করা হয়। ডিসেম্বরের ২০ তারিখ দৈনিক বাংলা লিখেছে হানাদার বাহিনীর সহযোগীদের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। জাতি গঠনে আত্মনিয়োগ করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের আহবান। যুদ্ধের সময় কত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, অপরাধীদের বিচার, আওয়ামী লীগ নেতাদের স্বাধীন দেশে ফিরে আসা এবং তাদের বক্তব্য প্রাধান্য পায় সংবাদপত্রে।
সারাবাংলা/এসবিডিই
ফিচার মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের খবর পূর্ব পাকিস্তানে কীভাবে প্রকাশিত হতো?