Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অপার সম্ভাবনার মাস


২৪ মে ২০১৮ ১৮:০৬

।। জহির উদ্দিন বাবর ।।

নানা ধর্ম ও সমাজে রোজার অস্তিত্বের কথা পাওয়া যায়। তবে ধারাবাহিকভাবে একমাস সিয়াম সাধনা— এটা উম্মতে মোহাম্মদির এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য। অন্য কোনো নবীর উম্মতকে এই মাস দেওয়া হয়নি। এজন্য উম্মতে মোহাম্মদির মুক্তি ও কল্যাণের অপার সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে এই রমজান মাসে। আল্লাহকে পাওয়ার যে সাধনা এবং মানবজীবনের একান্ত লক্ষ্য— তা অর্জনে রমজানের কোনো বিকল্প নেই। কেউ আল্লাহকে পেতে চাইলে একটি রমজানই তার জন্য যথেষ্ট। কোরআন-হাদিসে যেভাবে রমজান উদযাপনের কথা বলা হয়েছে, সেভাবে রমজান কাটাতে পারলে মুক্তি ও কল্যাণের গ্যারান্টি রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোজার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের বহুমুখী কল্যাণের সন্ধান দেন। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য শয়তান সব সময় ওঁৎ পেতে থাকে। কিন্তু রমজানের চাঁদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শয়তানকে বন্দি করে রাখা হয়। এজন্য রমজানে শয়তানের মন্ত্রণার ঝুঁকি থাকে না। রমজানে বেহেশতের দুয়ার খুলে দেওয়া হয়, আর দোজখের দুয়ার বন্ধ করে দেওয়া হয়। যারা জীবনের স্রোতধারা সঠিক পথে প্রবাহিত করতে চায়, তাদের জন্য রমজান অনেক বড় আশীর্বাদ। এই মাসের প্রতি মুহূর্তে আল্লাহর একজন ফেরেশতা মানুষকে অপরাধ থেকে বিরত থাকার এবং ভালো কাজ করার আহ্বান জানায়।

কম কাজে বেশি প্রতিদান পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ রমজান মাস। এই মাসের একটি ফরজ অন্য মাসের সত্তরটি ফরজের সমান। এই মাসের এক রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে উত্তম। কেয়ামতের দিনে যখন আর কোনো অবলম্বন থাকবে না, তখন রোজা সুপারিশ করে বান্দাকে তার পরম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য জান্নাতে পৌঁছে দেবে। যে ব্যক্তি ঈমান ও বিশ্বাসের সঙ্গে রোজা রাখবে, তাকে সম্পূর্ণ পাপমুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রমজান মানুষকে নতুন জীবন দান করে। এই মাসের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে জীবনের সার্থকতা খুঁজে পাওয়ার সুযোগ করে দেয়। পরকালের পাথেয় সংগ্রহের জন্য রমজানের চেয়ে বেশি সম্ভাবনা আর কিছুতেই নেই। এজন্যই রাসুল (সা.) আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান পেল কিন্তু তার জীবনের বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করাতে পারল না, সে বড়ই দুর্ভাগা!’ সত্যিই এত বড় সুযোগ পাওয়ার পরও যে কাজে লাগাতে পারবে না সে বড়ই দুর্ভাগা।

রমজানের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য রোজাটি হতে হবে নিষ্কণ্টক ও ভেজালমুক্ত। শুধু না খেয়ে উপোস থাকাই যে রোজার প্রকৃত রূপ নয়, তা মোটামুটি আমরা সবাই জানি। রোজার তাৎপর্য উপলব্ধি করে বাস্তব ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ ঘটাতে হবে। সঠিক রোজার পূর্বশর্ত আত্মিক পরিশুদ্ধি। অন্তরকে পাপাচারের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন করে রোজার আনুষ্ঠানিকতা পালন করলে ফলাফল হবে শূন্য। রোজার দ্বারা প্রভু আমাদের কাছে কী চান— তা বুঝতে হবে। যে রোজায় প্রভুর সন্তুষ্টি নিশ্চিত, সে রোজাই রমজানের কল্যাণ ও মুক্তি লাভের নিশ্চয়তা দেয়।

রোজার যে ইসলামি বিধান আছে সেভাবেই তা পালন করতে হবে। রোজা রেখে মন আর প্রবৃত্তির চাহিদা মতো চললে সুফল মিলবে না। আমাদের সমাজে রোজাদারের সংখ্যা অনেক। কিন্তু প্রকৃত বিচারে রোজার দাবি ও চাহিদা পূরণ করে তা পালন করেন কতজন? গুণগত মানে বিচার করলে সংখ্যাটা হবে হতাশাজনক। আর এ কারণেই রোজার দ্বারা আমাদের ব্যক্তি ও সমাজজীবনে কোনো প্রভাব পড়ছে না। একজন মানুষ ২০ বছর, ৪০ বছর ধরে লাগাতার রোজা রাখছে; তবুও তার জীবনে রোজা তেমন কোনো ছাপ রেখে যেতে পারেনি। এটা নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যের বিষয়।

রোজা আমাদের জীবনপ্রবাহে পরিবর্তনের ধাক্কা না দিয়ে গেলে সেই রোজাকে সার্থক বলা যাবে না। এজন্য মান ও গুণ বজায় রেখে রোজা রাখার চেষ্টা করতে হবে সবাইকে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু ব্যয় করলে আশা করা যায় আল্লাহর পক্ষ থেকে মিলবে কল্যাণ ও মুক্তির কাঙ্ক্ষিত বার্তা।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভারত থেকে ফিরলেন ৯ বাংলাদেশি তরুণী
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৩

আজ জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেবেন ড. ইউনূস
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:০৪

সবজি-মুরগির বাজার চড়া, অধরা ইলিশ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১০

সম্পর্কিত খবর