মুক্তিযোদ্ধাদের জাগররণ ও প্রেরণার শক্তি ‘চরমপত্র’
২৪ মার্চ ২০২৪ ১৭:১১
‘তোমাকে দিচ্ছি চরমপত্র রক্তে লেখা; অনেক দুঃখে মথিত এ শেষ বিদ্যে শেখা৷/অগণ্য চাষী-মজুর জেগেছে শহরে গ্রামে/সবাই দিচ্ছি চরমপত্র একটি খামে :/পবিত্র এই মাটিতে তোমার মুছে গেছে ঠাঁই/ক্ষুব্ধ আকাশে বাতাসে ধ্বনিত স্বাধীনতা চাই৷’ ─ এই কাব্যাংশটি কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যে চরমপত্র থেকে নেওয়া। তবে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত এম আর আখতার মুকুলের ‘চরমপত্র’ অনুষ্ঠানটি ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা, অনুপ্রেরণা আর অদম্য সাহস যুগানোর অন্যতম উৎস। যেমন─ ‘মেজিক কারবার। ঢাকায় অখন মেজিক কারবার চলতাছে। চাইরো মুড়ার থনে গাবুর বাড়ি আর কেচ্কা মাইর খাইয়া ভোমা ভোমা সাইজের মছুয়া সোলজারগুলা তেজগাঁ-কুর্মিটোলায় আইস্যা- আ-আ-আ দম ফালাইতাছে। আর সমানে হিসাবপত্র তৈরি হইতাছে। তোমরা কেডা? ও-অ-অ টাঙ্গাইল থাইক্যা আইছো বুঝি? কতজন ফেরত আইছো? অ্যাঃ ৭২ জন। কেতাবের মাইদে তো দেখতাছি লেখা রইছে টাঙ্গাইলে দেড় হাজার পোস্টিং আছিলো। ব্যস, ব্যস, আর কইতে হইব না- বুইজ্যা ফালাইছি। কাদেরিয়া বাহিনী বুঝি বাকিগুলার হেই কারবার কইরা ফালাইছে…।’ ঠিক এমনিভাবে পাক-হানাদার বাহিনীদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ আর রসালো তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের মাধ্যমে এক অনবদ্য কথক অনুষ্ঠান স্বকন্ঠে উচ্চারণ করে বাংলার মুক্তিযোদ্ধাদের মনে সাহস যুগিয়েছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৫ মে স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্র চালু হওয়ার দিন থেকে ‘চরমপত্র’ পাঠ শুরু হয়। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয়ের দিনে ‘চরমপত্র’র শেষ পর্ব সম্প্রচারিত হয়। মে থেকে ডিসেম্বর টানা আট মাস বাংলাদেশের যুদ্ধরত মুক্তিকামী মানুষ স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রের ‘চরমপত্র’ শুনে উজ্জীবিত ও আলোড়িত হয়েছেন। এই ‘চরমপত্র’ অনুষ্ঠানের নামকরণ করেছিলেন স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রের কর্মী আশফাকুর রহমান খান। অনুষ্ঠানের এই নামকরণকে মুক্তিযুদ্ধের বার্তাকে রসরঙ্গ, ব্যঙ্গ-তাচ্ছিল্যের মাধ্যমে সার্থক করে তুলেছিলেন এম আর আখতার মুকুল। কি অসাধারণভাবে তিনি বলেছেন- ‘কি পোলারে বাঘে খাইলো? শ্যাষ। আইজ থাইক্যা বঙ্গাল মুলুকে মছুয়াগো রাজত্ব শ্যাষ। ঠাস্ কইয়্যা একটা আওয়াজ হইলো। কি হইলো? কি হইলো? ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পিঁয়াজী সাবে চেয়ার থনে চিত্তর হইয়া পইড়া গেছিলো।’
তখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। সারাদেশে চলছে বাঙালি নিধন, হত্যাযজ্ঞের বিভীষিকা। আকাশে বাতাসে গোলাবারুদের গন্ধ আর মুর্হূমুহু গুলির শব্দে কম্পমান আপামর গ্রাম বাংলার নিরীহ জনতা। অসহায় মানুষের গগণবিদারি চিৎকার, আর্তনাদের আহাজারি। পথে, ঘাটে, হাটে, বাজারে, জঙ্গলে, ফসলের জমিতে, নদীতে, পুকুরে, খানাখন্দতে লাশ আর লাশ। পুরো পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) যেন মৃত্যুপুরী। পাক-হানাদার বাহিনীর এমন নির্মমতার বিরুদ্ধে বাঙালি মুক্তিসেনাদের প্রাণপণ লড়াই চলছে। তখন দেশের স্বাধীনতার তরে জীবনকে সপে দিয়ে সম্মুখসমরে জীবন-মরণের লড়াইয়ে অবতীর্ণ মুক্তিযোদ্ধারা। এমন সময় স্বাধিনবাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত হতে লাগলো মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এক প্রেরণাদায়ক অনুষ্ঠান ‘চরমপত্র’। এই চরমপত্র অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এম আখতার মুকুল কথকের ভুমিকায় ব্যঙ্গ, বিদ্রুপের মাধ্যমে পাক-হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন স্থানে পরাজয়ের বার্তাকে রঙ্গরসে প্রচার করতে লাগলেন। তার এই চরমপত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ মুক্তিসেনাদের মনে উদ্দীপনা ও সাহস যোগানো ক্ষেত্রে বিরাট ভুমিকা রেখেছে। হালকা শিথিল ভাঙা-ভাঙা কণ্ঠে অসাধারণ শব্দচয়ন আর গ্রাম্য-সাবলীল বাচনভঙ্গিতে চরমপত্র নামের এই কথিকা অনুষ্ঠান শুধু মুক্তিযোদ্ধা নয় মুক্তিকামী বাঙালিদেরকে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির মধ্যই দিয়ে আনন্দ ও মুক্তি বার্তা। মৃত্যুর মুখোমুখি যুদ্ধে নিবেদিত বাংলার মুক্তিসেনাদের কাছে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠে এই অনুষ্ঠান। একেকটি কথিকা পর্ব ছিলো যুুদ্ধকালিন প্রচারিত একেকটি বুলেটিনের মতো। মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেওয়ার পাশাপাশি এই অনুষ্ঠান বাংলাদেশের শত্রুকবলিত এলাকার জনগোষ্ঠী ও ভারতে অবস্থানরত বাঙালি শরণার্থীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। জানাগেছে তিনি নিজের সৃষ্টি নতুন নতুন শব্দ জুড়ে দিতেন চরমপত্রে। ১৯৭১ সালের ২৯ মে ‘চরমপত্র’র পঞ্চম পর্বের অংশবিশেষ ছিল এরকম-‘জেনারেল ইয়াহিয়া খান এখন ঝিম ধরেছেন। এদিকে আগায় খান, পাছায় খান, খান আব্দুল কাইউম খান আবার খুলেছেন, মাফ করবেন ‘মুখ’ খুলেছেন। আয় মেরে জান, পেয়ারে দামান, খান কাইউম খান তোমার ক্যারদানী আর কত দেখাইবা? জেনারেল ইয়াহিয়া, তোমাকে একটা কথা বলতে চাই। হা-ডু-ডু খেলা দেখেছো কখনও? সেই হা-ডু-ডু খেলায় কেচ্কি বলে একটা প্যাঁচ আছে। আর তুমি বুঝি হেই কেচ্কির খবর পাইয়া আউ-কাউ কইরা বেড়াই আছো।’
এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিদিন গল্পের ছলে দুরূহ রাজনীতি ও রণনীতি ব্যাখ্যা করা ছাড়াও রণাঙ্গনের সর্বশেষ খবরাখবর সহজ, সাবলীল ও ব্রাত্যজনের ভাষায় নিষ্ঠা ও মুন্সিয়ানায় উপস্থাপন করতেন এম আর আখতার মুকুল। একপর্যায়ে তিনি অনুধাবন করলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ৯৫ শতাংশই গ্রাম-বাংলার সন্তান। তখন তিনি ‘চরমপত্র’ পঠনে শহুরে প্রমিত ভাষা ত্যাগ করে ঢাকাইয়া ও আঞ্চলিক ভাষার মিশ্রনে বর্ণনা শুরু করলে মুক্তিকামী জনতা ও মুক্তিসংগ্রামী বাংলার বীর সেনাদের কাছে তা আরো উপভোগ্য হয়ে উঠে।
চরমপত্রের এক পর্বে তিনি যেমনটি বলছিলেন- ‘এইডা কী? তোমরা মাত্র ১১০ জন কীর লাইগ্যা? তোমরা কতজন আছলা? খাড়াও খাড়াও- এই যে পাইছি। ভৈরব- ১২৫০ জন। তা হইলে ১১৪০ জনের ইন্না লিল্লাহে …. রাজিউন হইয়া গেছে। হউক, কোনো খেতি (ক্ষতি) নাই। কামানের খোরাকের লাইগ্যাই এইগুলারে বঙ্গাল মুলুকে আনা হইছিল। রংপুর-দিনাজপুর, বগড়া-পাবনা মানে কি না বড় গাংয়ের উত্তর মুড়ার মছুয়া মহারাজগো কোনো খবর নাইক্যা। হেই সব এলাকায় এক শতে এক শর কারবার হইছে। আজরাইল ফেরেশতা খালি কোম্পানির হিসাবে নাম লিখ্যা থুইছে। আরে, এইগুলা কারা? যশুরা কই মাছের মতো চেহারা হইছে কীর লাইগ্যা? ও-অ- তোমরা বুঝি যশোর থাইক্যা ১৫৬ মাইল দৌড়াইয়া ভাগোয়াট হওনের গতিকে এই রকম লেড়-লেড়া হইয়া গেছো। আহ্ হাঃ! তুমি একা খাড়াইয়া আছো কীর লাইগ্যা? কী কইল্যা? তুমি বুঝি মীরকাদিমের মাল? ও-অ-অ-অ বাকি হগ্গলগুলারে বুঝি বিচ্চুরা মেরামত করছে? গাংয়ের পাড়ে আলাদা না পাইয়া, আরামসে বুঝি চুবানি মারছে। কেইসডা কী? আমাগো বকশি বাজারের ছক্কু মিয়া কান্দে কীর লাইগ্যা? ছক্কু-উ, ও ছক্কু! কান্দিস না ছক্কু, কান্দিস না! কইছিলাম না, বঙ্গাল মুলুকের কোদো আর প্যাঁকের মাইদ্দে মছুয়াগো ‘মউত তেরা পুকর তা হ্যায়।’ এই মিশ্র আঞ্চলিক ভাষায় সম্প্রচারিত চরমপত্র হয়ে উঠেছিলো বাঙালির মুক্তির বার্তা কথক। জানা যায়, যুদ্ধকালীন দুরাবস্থার মধ্যদিয়ে মানসম্মত রেকর্ডিং স্টুডিওর অভাবে টেপ রেকর্ডারে ধারণ (রেকর্ড) করা হতো ‘চরমপত্র’ অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্ব। ৮ থেকে ১০ মিনিটের এই টেপ নিয়মিতভাবে স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রের ট্রান্সমিটার থেকে সম্প্রচার করা হতো।
অনবদ্য এই কথক বলছিলেন- ‘আত্কা আমাগো ছক্কু মিয়া কইল, ভাইসাব আমার বুকটা ফাইট্যা খালি কান্দন আইতাছে। ডাইনা মুড়া চাইয়া দেহেন। ওইগুলা কী খাড়াইয়া রইছে। কী লজ্জা! কী লজ্জা! মাথাডা অ্যাঙ্গেল কইরা তেরছি নজর মারতে দেহি কি, শও কয়েক মছুয়া অক্করে চাউয়ার বাপ, মানে কি না দিগম্বর সাধু হইয়া খাড়াইয়া রইছে। ব্রিগেডিয়া বশীর জিগাইলো, ‘তুম লোগেকা কাপড়া কিধার গিয়া?’ জবাব আইলো- যশোরে সার্ট, মাগুরায় গেঞ্জি, গোয়ালন্দে ফুলপ্যান্ট আর আরিচায় আন্ডারওয়ার থুইয়া বাকি রাস্তা খালি চিল্লাইতে চিল্লাইতে আইছি, ‘হায়, ইয়াহিয়া, ইয়ে তুমনে কেয়া কিয়া হামলোগ তো আভি নাংগা মছুয়া বন গিয়া।’ আরেক পর্বে বলেন- ‘সাবে কইছে, কিসের ভাই, আহ্লাদের আর সীমা নাই। সেনাপতি ইয়াহিয়া খানের হবু ফরিন মিনিস্টার জুলফিকার আলী ভুট্টো ব্রাকেটে শপথ লওনের টাইম হয় নাইক্যা, ব্র্যাকেট শেষ। জাতিসংঘে যাইয়া পয়লা রিপোর্টারগো লগে বেশ কায়দা কইরা লুকোচুরি খেলতে শুরু করল। তারপর। জাতিসংঘের ডায়াসে আতকা কয়েক দফায় কান ধইরা ‘উঠ-বস’, ‘উঠ-বস’ কইরা ভুট্টো সাবে ছিল্লাইয়া কইল, ‘আর লাইফের এই রকম কাম করুম না। বঙ্গাল মুলুকে আমরা গেন্জাম কইরা খুবই ভুল করছি। আমরা মাফ চাইতাছি, তোওবা করতাছি, কান ডলা খাইতাছি। আমাগো এইবারের মতো খেমা (ক্ষমা) কইরা দেন। কিন্তু ভুট্টো সাব। বহুত লেইট কইরা ফালাইছেন। এইসব ভোগাচ কাথাবার্তায় আর কাম হইব না। আতকা ঠাস ঠাস কইরা আওয়াজ হইল। কী হইল? কী হইল? জাতিসংঘে ভেটো মাইরা সোবিয়েত রাশিয়া হগ্গল মিচ্কি শয়তানরে চিত কইরা ফালাইছে। কইছে, ফাইজলামির আর জায়গা পাও না? বাঙালি পোলাপান বিচ্চুরা যহন লাড়াইতে ধনা-ধন্ জিত্তাছে, তহন বুঝি লাড়াই বন্ধু করনের নানা কিসিমের ট্রিকস হইতাছে- না?
এইদিকে সেনাপতি ইয়াহিয়া খানের পরানের পরান জানের জান চাচা নিক্সন, কড়া কিসিমের ট্রিক্স করনের লাইগ্যা সপ্তম নৌবহররে সিঙ্গাপুরে আনছে। লগে লগে ক্রেমলিন থাইক্যা হোয়াইট হাউসরে অ্যাডভাইসিং করছে- একটুক হিসাব কইরা কাজ কারবার কইরেন। প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পদগর্নি কইছে, ভারত উপমহাদেশে বাইরের কেউ নাক না গলালেই ভালো হয়। ব্যা-স-স, আমেরিকার সপ্তম নৌবহর সিঙ্গাপুরে আইস্যা নিল-ডাউন হইয়া রইল।’ দেখা গেছে রসরঙ্গের ছলে তিনি মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশবাসীর কাছে মুন্সিয়ানার সাথে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষপটের কথকি বর্ণনা করেছেন। ১৬ ডিসেম্বর শেষ পর্বেটি বলেছেন-‘আইজ থাইক্যা বঙ্গাল মুলুকে মোছুয়াগো রাজত্ব শ্যাস। আট হাজার আটশ চুরাশি দিন আগে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট তারিখে মুছলমান মুছলমান ভাই ভাই কইয়া, করাচি, লাহোর, পিন্ডির মছুয়া মহারাজারা বঙ্গাল মুলুকে যে রাজত্ব কায়েম করছিল, আইজ তার খতম তারাবি হইয়া গেল। বাঙালি পোলাপাইন বিচ্ছুরা দুইশ পঁয়ষট্টি দিন ধইরা বঙ্গাল মুলুকের ক্যাদো আর প্যাঁকের মাইদ্দে ওয়ার্ল্ডের বেস্ট পাইটিং ফোর্সগো পাইয়া, আরে বাড়িরে বাড়ি। টিক্কা মালেক্যা গেল তল, পিঁয়াজী বলে কত জল?’ কী দারুণভাবে তিনি নিদারুনের বর্ণনা করেছেন এপ্রজন্ম সেই কথক অনুষ্ঠান শুনলেই শিহরিত হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আপামর জনসাধারণের ভালোবাসা পেলেও সরকারি স্বীকৃতি মেলেনি ‘চরমপত্র’-এর। ইতিহাস বিশ্লেষকদের মতে, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক দলিল হতে পারত ‘চরমপত্র’।
উল্লেখ্য এম. আর আখতার মুকুল (১৯২৯-২০০৪)। পুরো নাম মুস্তাফা রওশন আখতার মুকুল। তিনি সাংবাদিক, লেখক, সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত সাড়া জাগানো অনুষ্ঠান ‘চরমপত্র’-র কথক। তার জন্ম ১৯২৯ সালের ৯ আগস্ট বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ের অন্তর্গত চিংগাসপুর গ্রামে। ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি ২০০৪ সালের ২৬ জুন মৃত্যুবরণ করেন। ‘চরমপত্র’র প্রতি পর্বের রচনা ও ব্রডকাস্টিংয়ের জন্য এম আর আখতার মুকুল পারিশ্রমিক হিসেবে পেতেন ৭ টাকা ২৫ পয়সা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথমে তাঁকে বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক করা হয়। ১৯৭২ সালে তিনি লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস মিনিস্টার নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এ চাকরি হারিয়ে অনেক বছর তিনি লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন। ১৯৮৭ সালে দেশে ফিরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র সম্পাদনার দ্বিতীয় পর্যায়ে কিছুদিন কাজ করেছেন। পরে তিনি ঢাকায় সাগর পাবলিশার্স নামে একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
লেখক: কলামিস্ট ও সাংবাদিক
সারাবাংলা/এজেডএস