ঈদুল ফিতর পেরিয়ে গেলেও এখনো কাটেনি উৎসবের আমেজ। মূলত ঈদের আগে পরে মিলিয়ে সপ্তাহ খানেক থাকে ঈদ উৎসব। ঈদুল ফিতর মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে উদযাপন করা হয় ঈদুল ফিতর। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই উৎসবে সবার আগ্রহ বেশি। ঈদ নিয়ে তারুণ্যের উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং ভাবনাটাও একটু বেশি থাকে। তারুণ্যের সেই ভাবনাগুলোই তুলে এনেছেন সারাবাংলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করেসপন্ডেন্ট রাসেল হোসেন
সময়ের সঙ্গে পালটায় ঈদ আনন্দ
মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য ঈদুল ফিতর হলো সবচেয়ে বড় উৎসব। এই ঈদের আমেজ শুরু হয় এক মাস আগে থেকেই। যখন রোজা শুরু হয় তখন থেকেই। এখন ঈদ খুলে দেয় স্মৃতির করিডোর। আমার কাছে ঈদের দিন মানেই শৈশবের স্মৃতিতে ফিরে যাওয়া। চাঁদ রাতে হাতে মেহেদি দেওয়া, সকালে আব্বার চেচামেচিতে ঘুম থেকে জেগে ওঠা। চটজলদি গোসল করে, সেমাই খেয়ে, নতুন জামা পরে বন্ধুদের সঙ্গে দৌড়ঝাঁপ— এই ছিল আমার ছোটবেলার ঈদ।
সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বড় হয়েছি, স্বপ্নগুলো বড় হয়েছে। সেসব স্বপ্ন পূরণের জন্য আসতে হয়েছে বাসা থেকে দূরে। এখনকার ঈদ কোলাহলমুক্ত, নেই শৈশবের খেলার সাথীদের কেউ, নেই কোনো দৌড়ঝাঁপ। তবুও ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি।
উর্মি আদনান টুই
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ
বজায় থাকুক ঈদ আনন্দ
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। সে আনন্দ শতগুণ বেড়ে যায়, যখন ঈদ হয় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। এখনো ছোটবেলার মতো সকালে ঘুম থেকে উঠে আব্বু-আম্মুকে সালাম করে দাঁড়িয়ে থাকি সালামির জন্য। ভাইদের সঙ্গে ঈদের মাঠে যাই, ছোটদের সালামি দিই। ছোটবেলায় নতুন জামা, দু’হাত ভরা মেহেদি ছাড়া ঈদ সম্পূর্ণ হতো না।
কিন্তু এখন বড় হয়েছি, অনূভুতির পরিবর্তন হয়েছে। এখন ঈদ মানে পরিবারের সদস্য এবং ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে সুন্দর কিছু মুহূর্ত ভাগ করে নেওয়া। বড় হচ্ছি, কিন্তু এখনও ঈদকে হারিয়ে যেতে দিইনি।
সানজিদা ইসলাম
ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ
পূর্ণতা পাক সবার ঈদ আনন্দ
দীর্ঘ এক মাস রোজা থাকার পর আসে ঈদুল ফিতর। ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। এই ঈদ আনন্দ বাড়িয়ে দিতে ও নিতে আসে দূর-দূরান্ত থেকে আত্মীয়-স্বজন। সবাই গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে। কারণ, গ্রামের বাড়িতে থাকে কারও বাবা-মা, কারও আত্মীয়-স্বজন। আনন্দ তখনই পূর্ণতা পায় যখন পুরো এক মাস রোজা রাখতে পারি এবং বাবা-মা ও পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারি।
যাদের বাবা-মা নেই তারাই এই অপূর্ণতা বোঝে। যদিও আনন্দ সবার এক নয়। আমাদের সবার ভাগ্যে যেন ঈদ আনন্দ পূর্ণতা নিয়ে আসে— সে কামনাই করি।
মো. সায়েম উদ্দিন মুসা
সিএসই বিভাগ, ৩য় বর্ষ
ঈদ হোক সর্বজনীন
ঈদ মুসলিম জাতির প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ঈদে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে সবাই মেলে এক বৃন্তে। এদিনে সবাই ভেদাভেদ ভুলে সৌহার্দ, ভ্রাতৃত্ব ও সাম্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। সব ব্যস্ততা উপেক্ষা করে আমরা ফিরে আসি পরিবারের কাছে। পরিবারকে কাছে পাওয়া, তাদের ভালোবাসা, পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়া, সব যেন স্বপ্নের মতো সুন্দর। শুরু হয় বাধভাঙা উৎসব।
মায়ের ভালোবাসা ও বাবার স্নেহ থেকে দূরে থাকা প্রত্যেক সন্তানের মনে এই আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক।
ফাইজা রহমান মিম
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ২য় বর্ষ