কথা রাখলেন টরেন্টোর ডাক্তার
১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৬:১৩ | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ১৫:৪৮
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০০৯ সালের ঘটনা। যৌতুক না পেয়ে পপি রাণী দাসকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে তার স্বামী। খাবার পানির সাথে অ্যাডিস মিশিয়ে পান করালে ঝলসে যায় তার শ্বাসনালী ও পাকস্থলি।
এর পর প্রায় সাত বছর অ্যাসিড সার্ভাইভারস ফাউন্ডেশনের হাসপাতালে কাটে পপির জীবন। সে সময় কৃত্রিম নলের মাধ্যমে খাবার খাওয়ানো হতো। ডাক্তাররাও বলেছিলো তার অবস্থার উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
পপিও সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলো। ঠিক সে সময় একজন আশার সঞ্চার করে হাজির হয় পপির পাশে। সে ব্যক্তিটি ছিলেন, টরেন্টোর এক হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জন টনি জং।
২০০৬ সালে তিনি এক মেডিকেল মিশনে বাংলাদেশে এসেছিলেন। সৌভাগ্যক্রমে দেখা হয়ে যায় পপির সাথে। সে সময় টনি পপিকে সারিয়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও দেন।
‘ইউনিভার্সিটি হেলথ নেটওয়ার্কের ব্রেস্ট রিকনস্ট্রাকশন বিভাগের প্রধান হিসাবে টনি জানতো টরেন্টো জেনারেল হাসপাতালেরই শুধু এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা আছে। সেখান থেকেই পপিকে সারিয়ে তোলা সম্ভব।
এর এক বছর পরে জং তার প্রতিশ্রুতি পালন করেছেন। অপারেশনের মাধ্যমে তার শরিরের বিভিন্ন স্থান থেকে ত্বক নিয়ে পপির শ্বাসনালী ও পাকস্থলীতে প্রতিস্থাপন করা করে।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পপি টরেন্টোর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এরপর ডিসেম্বরের ১৪ তারিখে তার অপারেশন সফলে হলে টরেন্টোতে তার মা এবং মেডিকেল বোর্ডের সাথে সাক্ষাৎ করে তার অভিজ্ঞতার কথা জানায়। এ অপারেশনের পরে সে নতুন জীবন লাভ করেছে বলে জানায় পপি।
২১ বছর বয়সে পপির বিয়ে হয়। কয়েক বছর সংসার করার পরও তার স্বামী যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে মেরে ফেলে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য তাকে খাবার পানির সাথে অ্যাসিড মিশিয়ে পান করালে পুড়ে যায় শ্বাসনালী ও পাকস্থলি । অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে যাওয়ার পর পপি তার স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেও পুলিশ তাকে এখনো গ্রেফতার করেনি।
সারাবাংলা/এমআই