মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই সামাজিক প্রাণী। একা বসবাস করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির সাথে যায় না। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব—সবাইকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। তাই তো আমরা প্রতিনিয়ত একে অপরকে নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে শামিল হই।
তবে বাস্তবতা হলো, হাজার মানুষের ভিড়ের মাঝেও একাকীত্বের গ্রাস থেকে মুক্তি মেলে না। অনেক সময় চারপাশে অসংখ্য মানুষ থাকলেও মনের গোপন কথাগুলো ভাগ করার মতো একজন কাছের মানুষ না থাকায় ভেতরে ভেতরে শূন্যতা তৈরি হয়। এই শূন্যতাই একাকীত্বকে তীব্র করে তোলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক সুস্থতার জন্য প্রতিটি মানুষেরই এমন একজন সঙ্গীর প্রয়োজন, যার কাছে নির্দ্বিধায় মনের কথা বলা যায়। সেই সঙ্গী হতে পারে পরিবারের সদস্য, ঘনিষ্ঠ বন্ধু কিংবা জীবনের খুব কাছের কেউ।
তবে একাকীত্ব দূর করার উপায় শুধু সম্পর্কেই সীমাবদ্ধ নয়। প্রকৃতি-ও মানুষের মনকে প্রশান্তি দেয়। অনেকেই সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে ঢেউয়ের শব্দে হারিয়ে যান, কেউ পাহাড়ের নিস্তব্ধতায় খুঁজে পান নিজের শান্তি, আবার কেউ সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে খুঁজে পান একাকীত্বের অবসান। প্রকৃতি মানুষের অব্যক্ত অনুভূতির নীরব সঙ্গী হয়ে তাকে মানসিকভাবে শক্ত করে তোলে।
মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, একাকীত্বকে ভয় না পেয়ে তা মোকাবিলা করতে হবে। নিয়মিত কথা বলা, মনের অনুভূতি প্রকাশ, অথবা প্রকৃতির সাথে সময় কাটানো—এসবের মাধ্যমেই মানুষ তার মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে।
অতএব, জীবনের পথে একাকীত্ব যেন আমাদের থামিয়ে না দেয়। বরং সঠিক মানুষ আর প্রকৃতির সংস্পর্শই পারে আমাদের একাকীত্বকে ভেঙে নতুন উদ্যমে বাঁচতে সাহায্য করতে।