শারদীয় দুর্গাপূজা কেবল ধর্মীয় আচার নয়, এটি বাঙালির হৃদয়ের আনন্দোৎসবও বটে। প্রতিটি দিনে থাকে আলাদা আবেগ ও সাজসজ্জার রঙিন আমেজ। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত রাজধানীজুড়ে থাকে পূজামণ্ডপ ঘোরা, গান, নাচ, মেলা আর খাওয়া-দাওয়ার উৎসব। এই পাঁচ দিনে কার কী পোশাক মানাবে, সেটি নিয়েও থাকে ভিন্ন পরিকল্পনা।
ষষ্ঠী
পূজার শুরু হয় ষষ্ঠী দিয়ে। দিনটির আমেজ থাকে সহজ-সরল সাজে। তরুণীরা চাইলে সুতি বা লিলেনের হালকা শাড়িতে স্নিগ্ধ রূপ আনতে পারেন। কিশোরীদের জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে কো-অর্ড সেট কিংবা কুর্তি–লেগিংস, সাথে হালকা মেকআপ। আরামদায়ক টি-শার্ট, শর্ট পাঞ্জাবি বা ট্রাউজার্সে ছেলেদের সাজও হয়ে উঠবে স্বতঃস্ফূর্ত।
সপ্তমী
দ্বিতীয় দিনে উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। সপ্তমীতে পোশাকে একটু জমকালো ভাব আনা যায়। সন্ধ্যার আড্ডা কিংবা মণ্ডপ ভ্রমণে রঙিন সিল্কের শাড়ি বেশ মানিয়ে যাবে। বিকল্প হিসেবে লং স্কার্ট বা লেহেঙ্গাও হতে পারে আকর্ষণীয় পছন্দ। ভারী অলংকারের বদলে হালকা গয়না মানাবে দারুণ। ছেলেরা এইদিন একরঙা পাঞ্জাবি ও কোলাপুরি স্যান্ডেল পরে নিতে পারেন—যা দেখতেও আভিজাত্যপূর্ণ।
অষ্টমী
অষ্টমী মানেই পূজার সবচেয়ে বর্ণাঢ্য দিন। সকালে অঞ্জলির সময় সাধারণত সবাই সাদামাটা সাজ পছন্দ করেন। তবে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত পোশাকে থাকতে পারে গভীর রঙের ছোঁয়া। তরুণীরা অরগ্যাঞ্জা বা হাকোবার শাড়ি পরতে পারেন। আবার সাবেকি জামদানি বা কাঞ্জিভরমও এই দিনকে করে তোলে বিশেষ। মানানসই ব্লাউজ আর গয়নায় সাজ সম্পূর্ণ হয়। ছেলেদের জন্য সিল্কের কাজ করা পাঞ্জাবি কিংবা ধুতি-পাঞ্জাবি হতে পারে আদর্শ পছন্দ।
নবমী
শেষ লগ্নের আনন্দে নবমী সাজগোজের দিক থেকে সবচেয়ে ঝলমলে দিন। কিশোরীরা শখ করে শাড়ি বেছে নেয়—নেট বা সিল্কের। বয়স্কদের জন্য গাদোয়াল শাড়ি হতে পারে মানানসই। চাইলে ট্রেন্ডি আনারকলিও পরা যায়। ছেলেদের জন্য শেরওয়ানি বা সিল্কের পাঞ্জাবি হয়ে উঠতে পারে উৎসবের বিশেষ রূপ।
দশমী
দুর্গা বিদায়ের দিন দশমী। সকালে সিঁদুরখেলার আয়োজন ঘিরে লাল পাড় সাদা শাড়ির রীতি এখনো অনন্য। ফুলস্লিভড ব্লাউজ, হালকা সোনার কানের দুল আর চুলে সাদা ফুলে পূর্ণ হয় সাজ। পুরুষদের জন্য থাকে সাদা পায়জামার সঙ্গে ঢিলেঢালা সুতির পাঞ্জাবি—সাথে সাদামাটা চটি।
প্রতিটি দিনেই সাজ-পোশাকে ভিন্নতা এনে উৎসবকে করে তোলা যায় আরও বর্ণময়।