দীর্ঘ সময় অফিসে কাজের পর শরীর যেমন অবসন্ন হয়ে পড়ে, তেমনি মনও হয়ে যায় ক্লান্ত। সারাদিনের ব্যস্ততা, মিটিং, ডেডলাইন আর ট্রাফিকের ধকল শেষে ঘরে ফিরলে অনেকে শুধু বিশ্রাম নিতে চান। কিন্তু শুধুমাত্র শুয়ে পড়লেই ক্লান্তি দূর হয় না, বরং সঠিকভাবে শরীর ও মনকে রিল্যাক্স না দিতে পারলে ক্লান্তি পরের দিন আরও বেড়ে যায়। তাই অফিস শেষে কিছু সহজ অভ্যাস গড়ে তুললে ক্লান্তি দূর হবে, মনও থাকবে সতেজ।
প্রথমেই বাড়ি ফিরেই নিজের পোশাক পরিবর্তন করে নিন। অফিসের আনুষ্ঠানিক পোশাক শরীরকে টানটান রাখে, যা অজান্তেই ক্লান্তি বাড়ায়। হালকা, আরামদায়ক পোশাক পরে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। এটি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
এরপর এক কাপ গরম চা, হারবাল টি বা লেবু-মধু মিশ্রিত পানি পান করতে পারেন। এতে শরীরের টক্সিন কমে, মনও প্রশান্ত হয়। কেউ চাইলে এই সময়টা পরিবারের সঙ্গে গল্প করে বা নিজের প্রিয় সংগীত শুনে কাটাতে পারেন। প্রিয়জনদের সঙ্গে সামান্য সময় কাটানো স্ট্রেস কমাতে দারুণ কাজ করে।
শরীরচর্চা ক্লান্তি দূর করার সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলোর একটি। অফিস শেষে হালকা হাঁটা বা যোগব্যায়াম করলে শরীরে রক্তসঞ্চালন বাড়ে, মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বেড়ে যায় এবং মন সতেজ হয়। অনেক সময় ক্লান্ত লাগলেও ১৫ মিনিটের হাঁটা ঘুমের মানও উন্নত করে।
বেশি ক্লান্ত থাকলে গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এটি শুধু আরামই দেয় না, বরং শরীরের টানটান ভাব কমিয়ে ঘুমের প্রস্তুতিও নেয়। চাইলে হালকা সুরের গান শুনে চোখ বন্ধ করে কিছু সময় নিরব থাকতে পারেন—এটি মানসিক থেরাপির মতো কাজ করে।
সবশেষে, ঘুমকে অবহেলা করবেন না। রাতে অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা গুণগত ঘুম নিতে পারলে পরদিনের কাজের জন্য শরীর আবার প্রস্তুত হবে। আর সম্ভব হলে ঘুমের আগে মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ থেকে কিছুটা দূরে থাকুন, কারণ স্ক্রিনের আলো মস্তিষ্ককে বিশ্রাম নিতে বাধা দেয়।
অফিস শেষে নিজেকে একটু সময় দেওয়া মানে পরের দিনের জন্য নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করা। তাই কাজ শেষে শরীর ও মন দুটোই যত্ন নিন—তাহলেই প্রতিদিনের ক্লান্তি নয়, জীবনের প্রতিটি দিন হয়ে উঠবে অনেক বেশি প্রাণবন্ত।