পারফিউম শুধু ঘ্রাণ নয়, এটি ব্যক্তিত্বেরও প্রকাশ। কারও সুবাস তাকে আলাদা করে তোলে, মনে গেঁথে যায় একটি স্মৃতি হয়ে। তাই নিজের জন্য সঠিক পারফিউম বেছে নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সুবাসের ভিড়ে কোনটি নিজের সঙ্গে মানাবে— তা ঠিক করা অনেক সময় সহজ হয় না। কিছু সহজ টিপস মেনে চললে তবে আপনি খুঁজে নিতে পারবেন আপনার পারফেক্ট ঘ্রাণ।
নিজের ব্যক্তিত্ব বুঝে নিন
পারফিউম মানে শুধু ভালো গন্ধ নয়, এটি আপনার মুড ও স্টাইলও প্রকাশ করে। আপনি যদি প্রাণবন্ত ও চঞ্চল প্রকৃতির হন তবে ফুলেল বা সাইট্রাস ঘ্রাণ আপনার সঙ্গে মানিয়ে যাবে। অন্যদিকে যদি আপনি শান্ত, মার্জিত ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে থাকেন, তবে উডি বা মস্ক বেসড পারফিউম আপনাকে মানাবে বেশি।
দিনের সময় অনুযায়ী সুবাস
দিনের বেলা: অফিস বা ক্লাসের জন্য হালকা সুবাস যেমন লেবু, কমলা, গ্রিন টি বা ফ্লোরাল ঘ্রাণ সবচেয়ে ভালো। এগুলো সতেজ রাখে এবং আশেপাশের মানুষকেও আরাম দেয়।
সন্ধ্যা বা রাত: পার্টি বা বিশেষ অনুষ্ঠানে ভারী ঘ্রাণ যেমন ভ্যানিলা, চন্দন, মশলাদার বা উডি ফ্লেভার বেছে নিতে পারেন। এগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ব্যক্তিত্বকে করে তোলে আকর্ষণীয়।
ঋতুভেদে পছন্দ
গরমকাল: গরমে হালকা, ফ্রেশ ও সাইট্রাসি পারফিউম সবচেয়ে কার্যকর। এগুলো ঘাম মিশে গন্ধ নষ্ট হতে দেয় না।
শীতকাল: ঠান্ডা আবহাওয়ায় মশলাদার, ভ্যানিলা বা ওরিয়েন্টাল নোটের পারফিউম ভালো মানায়। শীতের ভারী পোশাকের সঙ্গে এই ঘ্রাণ দীর্ঘসময় স্থায়ী হয়।
কেনার আগে পরীক্ষা করুন
পারফিউম কেনার সময় শুধু বোতলের ঢাকনা খুলে শোঁকা ঠিক নয়। কব্জিতে হালকা করে স্প্রে করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। শরীরের উষ্ণতার কারণে পারফিউমের আসল ঘ্রাণ তখন ফুটে উঠবে। অন্তত আধা ঘণ্টা পরে বুঝতে পারবেন সেটি আপনার গায়ে কেমন সুবাস ছড়াচ্ছে।
শরীরের কেমিস্ট্রি গুরুত্বপূর্ণ
একই পারফিউম দুইজনের গায়ে আলাদা রকম ঘ্রাণ দিতে পারে। শরীরের কেমিস্ট্রির কারণে এরকম হয়। তাই অন্য কারও গায়ে ভালো লাগা সুবাস আপনার গায়ে একই রকম নাও হতে পারে। এজন্য নিজের ত্বকে পরীক্ষা করা জরুরি।
ঘ্রাণের স্তর বুঝে নিন
একটি পারফিউমে থাকে তিন ধরনের নোট—
টপ নোট: প্রথম স্প্রেতেই যেটি ঘ্রাণ আসে (যেমন লেবু বা ল্যাভেন্ডার)।
মিড নোট: কিছুক্ষণ পর আসল সুবাস (যেমন গোলাপ, জুঁই)।
বেস নোট: দীর্ঘস্থায়ী ঘ্রাণ (যেমন মস্ক, উড, ভ্যানিলা)।
নিজের মুড অনুযায়ী নোটগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে সঠিক পারফিউম বেছে নেওয়া সহজ হবে।
বাজেট ও ব্র্যান্ড
সবসময় দামি পারফিউমই ভালো হবে এমন নয়। অনেক মাঝারি বাজেটের ব্র্যান্ডেও পাওয়া যায় মানসম্মত সুবাস। নিজের সামর্থ্য ও ব্যবহারিক প্রয়োজনে অনুযায়ী নির্বাচন করাই শ্রেয়।
শেষকথা
পারফিউম বেছে নেওয়া মানে নিজের জন্য একটি স্বাক্ষর সুবাস খুঁজে পাওয়া। এটি যেন আপনার উপস্থিতি জানান দেয়, আবার না থেকেও আপনাকে মনে করিয়ে দেয়। তাই ব্যক্তিত্ব, ঋতু, অনুষ্ঠান ও ত্বকের কেমিস্ট্রির সঙ্গে মিলিয়ে সঠিক পারফিউম বেছে নিলে কপালের ছোট্ট বিন্দুর মতোই এটি হয়ে উঠবে আপনার পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ।