বর্তমান সময়ে কর্মজীবী নারীরা অফিস, পরিবার, সন্তান, সমাজ—সব দিক সামলাতে গিয়ে প্রায়ই মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তিতে ভোগেন। এই ক্লান্তিই একসময় ‘বার্নআউট’-এ রূপ নেয়। বার্নআউট মানে শুধু ক্লান্তি নয়, এটি এক ধরনের মানসিক অবসাদ যা কাজের আগ্রহ, মনোযোগ এবং আত্মবিশ্বাস—সব কিছু কেড়ে নিতে পারে। তবে কিছু সচেতন পদক্ষেপ নিলে এই অবস্থা থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।
প্রথমত, নিজেকে প্রাধান্য দিন। অনেক নারী কাজের ফাঁকে নিজেদের চাহিদা ও বিশ্রামকে গৌণ মনে করেন। কিন্তু নিজের যত্ন না নিলে দীর্ঘমেয়াদে কেউই সফল হতে পারে না। পর্যাপ্ত ঘুম, সুষম খাবার ও নিয়মিত শরীরচর্চা মানসিক ভারসাম্য রক্ষায় অপরিহার্য।
দ্বিতীয়ত, ‘না’ বলতে শিখুন। কর্মক্ষেত্রে বা পরিবারের দায়িত্বে সব সময় ‘হ্যাঁ’ বলা বার্নআউটের অন্যতম কারণ। প্রতিটি কাজ নিজের সামর্থ্য ও সময় অনুযায়ী বেছে নিন। প্রয়োজনে কাজ ভাগ করে দিন বা সহকর্মীর সহায়তা নিন। মনে রাখবেন, সব কিছু একা সামলানো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
তৃতীয়ত, সময় ব্যবস্থাপনা করুন বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে। কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে নিন। দিন শুরু করুন টু-ডু লিস্ট দিয়ে এবং মাঝে ছোট বিরতি নিন। গবেষণায় দেখা গেছে, কয়েক মিনিটের বিশ্রামও মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।
চতুর্থত, ইমোশনাল সাপোর্ট সিস্টেম গড়ে তুলুন। বন্ধু, সহকর্মী বা পরিবারের কারও সঙ্গে মনের কথা ভাগ করে নিন। এতে চাপ অনেকটা কমে যায়। প্রয়োজনে কাউন্সেলর বা থেরাপিস্টের পরামর্শ নিতেও দ্বিধা করবেন না।
সবশেষে, নিজের সাফল্যকে স্বীকৃতি দিন। অনেক নারী নিজেকে অবমূল্যায়ন করেন, যা আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। ছোট ছোট অর্জনকেও গুরুত্ব দিন এবং নিজেকে প্রশংসা করুন।
ক্যারিয়ার মানে শুধু পেশাগত উন্নতি নয়, এটি জীবনের এক অংশমাত্র। তাই কাজের সঙ্গে জীবনের আনন্দ, পরিবার, নিজের সময়—সবকিছুর ভারসাম্যই প্রকৃত সাফল্যের চাবিকাঠি। মনে রাখবেন, সুস্থ, প্রশান্ত ও আত্মবিশ্বাসী নারীরাই সবচেয়ে শক্তিশালী পেশাজীবী।