জীবনে সবচেয়ে বড় পরিচয় আমরা নিজেরাই তৈরি করি— আমাদের কাজের মাধ্যমে। কারও নামের আগে যে বিশেষণটা সবচেয়ে সুন্দরভাবে মানিয়ে যায়, তা হলো নিজের অর্জন। কেউ আমাদের বাবা-মায়ের, কারও স্বামীর, বা কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে চেনে; কিন্তু দিনের শেষে, আসল পরিচয়টা আসে আমাদের কাজ থেকেই।
নিজের কাজ শুধু জীবিকা নয়, এটি আত্মসম্মানের জায়গা। সকালের তাড়াহুড়োয় অফিসে যাওয়া, রাতের পর রাত কাজ করে রিপোর্ট লেখা, অথবা ঘরে বসে সন্তান ও সংসারের ভার সামলানো— সব কাজের পেছনেই আছে একটি নীরব সংগ্রাম, আছে নিজের পরিচয় তৈরি করার লড়াই।
বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এই জায়গাটা আরও গভীর। সমাজ প্রায়ই বলে, ‘তুমি তো ভালো মা, ভালো স্ত্রী’— কিন্তু ‘তুমি দারুণ পেশাজীবী’ এই স্বীকৃতি আমরা কতবার পাই? অথচ নিজের কাজের মাধ্যমে একজন নারী যখন নিজের অবস্থান তৈরি করেন, তখন তিনি শুধু নিজেকে নয়, পরবর্তী প্রজন্মকেও সাহস দেখান— নিজেকে প্রমাণ করার সাহস।
নিজের কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকলে ক্লান্তিও তৃপ্তিতে বদলে যায়। কারণ তখন কাজটা শুধুই দায়িত্ব নয়, একরকম গর্ব। সাংবাদিকতা, শিক্ষকতা, শিল্প, ব্যবসা— যাই করি না কেন, আমরা প্রতিদিন নিজের স্বপ্নে রঙ দিই। আর এই স্বপ্নের প্রতিটি স্পর্শই আমাদের পরিচয়কে একটু একটু করে গড়ে তোলে।
অন্যের সাফল্য দেখে নিজেকে ছোট ভাবা না। বরং মনে রাখা উচিত আপনার কাজের মান, আপনার নিষ্ঠা— এটাই আপনার পরিচয়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল দিক। হয়তো তা এখনো সবাই দেখে না, কিন্তু সময় একদিন ঠিক দেখাবে।
তাই, নিজের কাজকে ভালোবাসুন, যত্ন করুন, কারণ কাজই আপনার সবচেয়ে সৎ পরিচয়। আর এই পরিচয়টাই একদিন আপনার নামের পাশে সবচেয়ে বড় গর্ব হয়ে উঠবে।