চটপট ওজন কমানোর ৫টি উপায়
২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:০৭
লাইফস্টাইট ডেস্ক।।
রাতারাতি ওজন কমানো একটা কাল্পনিক ব্যাপার। ওজন কমাতে চাইলে প্রয়োজন ধৈর্য ধরে লেগে থাকা। চলুন দেখে নেই দ্রুত ওজন কমানোর পাঁচটি উপায়।
শর্করা বাদ
আমাদের শরীরের কার্যক্ষমতা ও শক্তি যোগায় কার্বোহাইড্রেট। শরীরে প্রবেশের পর কার্বোহাইড্রেট ভেঙে গ্লাইকোজেনে পরিণত হয় যা জ্বালানী হিসেবে কাজ করে। সমস্যা হচ্ছে এই গ্লাইকোজেন দ্রুত পুড়িয়ে না ফেললে তা চর্বি হিসেবে জমা রাখে আমাদের শরীর। তাই দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে কার্ব ডেটক্স বা শরীরকে শর্করামুক্ত করা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় শরীর থেকে সমস্ত কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা দূর করতে হবে। খাদ্যতালিকা থেকে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিলে স্বভাবতই অতিরিক্ত ক্যালরিগ্রহণ কমে যাবে এবং শরীর থেকে পানির ওজন দূর হবে। প্রথম সপ্তাহেই ৫ থেকে ৮ পাউন্ড ওজন কমলেও অবাক হবার কিছু নাই। তবে আবারও শর্করা খেতে শুরু করলে এই ওজনটা দ্রুত ফিরেও আসে। অনেকসময় কার্বোহাইড্রেট পুরোপুরি বাদ দিলে মাথাব্যথা বা ফ্লু হলে যেমন লাগে তেমন কিছু লক্ষণও দেখা দিতে পারে। একে বলা হয় কেটো ফ্লু।
দ্রুত ওজন কমাতে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিলে যেমন দ্রুত ফল পাওয়া যাবে তেমনি পুরনো খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসলে ওজনও দ্রুত ফিরে আসবে। তাই খাবার থেকে ভাত, রুটি বাদ না দিলেও চিনি পুরোপুরি বাদ দিন। অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট পরিমাণে কম খেতে হবে।
শিশুর মতো ঘুমান
বড় হতে হতে কাজের চাপ বেড়ে যায় আর আমরা ঘুমের সময় কমাতে থাকি। কিন্তু দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে বাচ্চাদের মতো ঘুমাতে হবে। স্বাস্থ্যকর বা কার্যকরি খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার পরেও অনেকের ওজন না কমার এটাই প্রধান কারণ। ঠিকমতো ঘুম না হলে আমাদের শরীরের হরমোনগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। তাই সহজে ওজন কমতে চায় না। আবার ঠিকমতো ঘুম না হলে আমাদের ইচ্ছাশক্তির জোর নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমরা খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।
খেতে হবে চর্বিতে রান্না প্রোটিন ও শর্করাহীন সবজি
কার্বহাইড্রেট বাদ দিয়ে খাদ্যতালিকা বানাতে হলে প্রোটিন ও সবজিতে জোর দিতে হবে। কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে বেশি করে প্রোটিন খেলে আমাদের শরীর নতুন শক্তির উৎস খুঁজে পাবে। এতে করে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাও দমন হবে। প্রোটিন হিসেবে বেছে নিন মুরগি, ডিম, গরুর মাংস, সামুদ্রিক মাছ ও মিষ্টি পানির মাছ। এসব প্রোটিন এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বা নারকেল তেলে রান্না করে নিলে ভালো হবে। এগুলোতে খাবার সুস্বাদু হবে তাই নয়, শরীরে শক্তিও যোগাবে। প্রোটিনের সাথে সাথে খেতে হবে প্রচুর পরিমাণ শর্করাবিহীন সবজি।
সপ্তাহে তিনগুণ ব্যায়াম
খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ব্যায়ামটাও জরুরি ওজন কমানোর জন্য। কার্ব ডিটক্স চলার সময় আমাদের শরীর নতুন খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময় নেয়। তাই এই সময়ে ব্যায়ামের রুটিনেও পরিবর্তন আনা জরুরি। কার্ব বা শর্করা বাদ দিলে ওজন এমনিতেই কমতে থাকবে। কিন্তু ব্যায়াম না করলে আবার পুরনো খাদ্যাভ্যাসে ফিরে গেলে ওজন বেড়ে যাবে আবার। তাই মেটাবলিজম ঠিক রাখতে সপ্তাহে অন্তত তিনদিন ব্যায়াম করতে হবে। কিছু না হোক প্রতিদিন নিয়ম করে কিছু সময় অন্তত হাঁটুন।
খাবারের মানের দিকে নজর দিন
ওজন কমাতে চাইলে খাবারের পরিমাণ কমালেই হবে না খাদ্যের গুণগত মানের দিকেও নজর দিতে হবে। বিশেষত প্যাকেটজাত খাবারের ক্ষেত্রে মানের দিকে লক্ষ রাখা বেশি জরুরি। যতটা সম্ভব অর্গানিক ও কম চিনিযুক্ত খাবার খান।
সবকিছুর পরেও যদি ওজন না কমে তবে আপনার খাবারের পরিমাণে সমস্যা আছে। আপনি কার্ব বাদ দিলেও প্রয়োজনের অতিরিক্ত শাকসবজি বা ফলমূল খাচ্ছেন। কিছু ফল ও সবজিতে চিনি থাকে। সেসব খাবার নিয়ন্ত্রণও জরুরি। তাই ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিনের খাবারের ক্যালরি মেপে খেতে হবে।
সারাবাংলা/আরএফ/এসএস/টিসি