Thursday 03 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সন্তানকে সঠিক শিক্ষা দিচ্ছেন তো?


৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:৩৮ | আপডেট: ২৩ মে ২০২২ ১৩:১৫
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সন্তানের সব ব্যাপারেই বাবা-মায়েরা অনেক সচেতন থাকেন। তারপরও কিছু ব্যাপারে বিশেষভাবে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গেছে, ১ থেকে ৩ বছর বয়সের মধ্যেই শিশুরা বেশি শেখে। এই বয়সের শিশুদের জানার আগ্রহও থাকে প্রবল।

অনেক সময়ই দেখা যায় সচেতন থাকার পরও বাবা-মা তাদের শিশু সন্তানকে চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া, খেলাসহ ছোটখাটো অনেক বিষয়েই সঠিক নিয়ম-কানুন শেখাতে পারেন না। অনেকসময় তারা অনেক নেতিবাচক শিক্ষা পায় যা তাদের শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার সম্ভাবনা যেমন বাড়ায়, তেমনি অসচেতনতার ফলে মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে।

তাই শিশুর ১ থেকে ৩ বছর বয়সকালে বাবা-মাকে বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে। আসুন দেখে নেই এই সময়ে সন্তানকে  যা শেখাবেন-

বিজ্ঞাপন

চেয়ারে দাঁড়ানোর অভ্যাস না করা

প্রথম প্রথম হাঁটতে শিখলে শিশুরা ছোটাছুটি করে বেশি ও অনেক জিনিস হাতে নিতে চায়। কাঙ্খিত জিনিস হাতের নাগালে না পেলে অনেক বাচ্চা চেয়ারের ওপর দাঁড়িয়ে সেটা নিতে চেষ্টা করে। এটা যে শিশুরা একা একাই শেখে তা নয়। বাবা-মা কিংবা পরিবারের অন্য কাউকে চেয়ারের ওপর দাঁড়াতে দেখলে বাচ্চারা এটা শেখে। আবার অনেক সময় বাবা-মায়েরাও বাচ্চাকে চেয়ারের উপর দাঁড় করিয়ে দেন। বাচ্চাদের এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনার সম্ভাবনা।

বাবা-মায় বা বড় কারও অনুপস্থিতিতে শিশু একা একা চেয়ারে দাঁড়িয়ে কিছু নিতে গেলে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। তাই এই ব্যাপারে বাবা মায়ের কখনোই উৎসাহ দেওয়া উচিত না। সন্তানকে শেখোতে হবে, চেয়ার শুধুমাত্র বসার জায়গা।

যেভাবে বসা উচিত না

শিশুরা মেঝেতে খেলার অনেকসময় দুই পা উল্টো দিকে ভাঁজ করে বসে। অনেকটা ‘W’ এর মতো। এভাবে বসলে শিশুর পা ও কোমরের হাড়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া শিশুর ঘাড় ও কাঁধের নানা টিস্যুও ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। বাচ্চারা যেন এই ভঙ্গীতে না বসে এজন্য বাবা-মাকে সচেতন থাকতে বলেন চিকিৎসকরা।

ময়লা জায়গায় খেলতে মানা

শিশুরা বাইরে খেলাধুলা করতেই বেশি পছন্দ করে। মাঠে বা খোলামেলা জায়গায় খেলাধুলা করা স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। তবে বাচ্চাদের কখনোই নোংরা জায়গায় খেলতে দেওয়া যাবে না। এতে জীবাণুর সংক্রমণে শিশুর দেহে নানা ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে।

এঁটেল মাটি খেলার জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত। পিচ্ছিল বলে এই মাটিতে খেলার সময় পড়ে গেলে শিশু মারাত্মক আঘাত পেতে পারে। আবার ইট বা সিমেন্টের তৈরি শক্ত জায়গাও শিশুদের খেলার অনুপযোগী। বাচ্চাকে নরম ও শুকনো মাটিতে খেলতে দিতে হবে।

রেলিং ধরে ওঠানো ঠিক না

অনেক বাবা-মা বাসার বারান্দা কিংবা জানালার রেলিং ধরে শিশুদের দাঁড় করান। এটি মোটেও ঠিক না। শিশু একই পদ্ধতি যখন রাস্তা বা ছাদের রেলিং ধরে অনুসরণ করে তখন ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। তাই শিশুদের কখনোই রেলিং বেয়ে উঠতে শেখানো ঠিক না।

স্ক্রিনের প্রতি আশক্তি ক্ষতিকর

চঞ্চলতা শিশুদের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। সন্তান বেশি দুষ্ট হলে বাবা-মা সামলাতে না পেরে হাতে তুলে দেন ইলেকট্রনিক ডিভাইস। যাতে এসবের মধ্যেই তার মনোযোগ আটকে যায়। আর এতেই ঘটে বিপত্তি।

স্ক্রিনের নীল আলো শিশুর চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। দীর্ঘক্ষণ টিভি, ল্যাপটপ ও ফোনে চোখ রাখলে শিশুর অন্য কাজে মনোযোগ কমে যায়, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। দেখা দিতে পারে মাথা ও চোখে তীব্র ব্যথা।

শিশুর জন্য সঠিক খেলা নির্বাচন

অনেক বাবা-মাই মনে করেন, ছোটবেলা থেকে শরীরের উপর বেশি চাপ পড়ে এমন খেলাধুলা করলে সন্তান তাড়াতাড়ি বড় হবে ও শারীরিক গঠন ভালো হবে। এটা একেবারেই ভুল ধারণা। সব ধরনের খেলা ছোট্ট শিশুর জন্য নয়। একেক বয়সের মানুষের জন্য একেক ধরনের খেলা উপযোগি।

আপনার সন্তানের জন্য কী ধরনের খেলাধুলা উপযোগি তা চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন। যেকোন খেলা শিশুর মেরুদন্ডের জন্য হুমকি হতে পারে। কখনও কখনও মেরুদন্ড বেঁকেও যেতে পারে।

 

শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খাবারদাবার, ঘুম, খেলাধুলা ও সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতি মেনে চলার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। মনে রাখা ভালো, একদম ছোটবেলার শিক্ষা দিয়েই পরবর্তীতে শিশুরা পরিচালিত হয়। তাই যাপিত জীবনে সঠিক পদ্ধতি মেনে চলার অভ্যাস করুন।

অলঙ্করণ: আবু হাসান

শিশুর যত্ন শিশুর শিক্ষা সন্তানের সঠিক শিক্ষা