প্রতিদিন কেন বাদাম খাবেন…
৫ নভেম্বর ২০১৯ ১০:৩০
বাদাম মূলত ফলের বীজের ভেতরে থাকা শাঁস। বেশিরভাগ বাদামেরই বাইরের অংশ অনেক শক্ত থাকে। রান্না করে খাওয়া যায় যেমন, তেমনি হালকা নাস্তা হিসেবেও দারুণ। তাই প্রতিদিন বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারি।
কম বেশি সবাই বাদাম পছন্দ করেন। খেতে যেমন মজা তেমনি অল্পেই পেট ভরে। তাই, কিটো, ভিগান, লো কার্ব বা যেকোন ধরণের খাদ্যাভ্যাসেই বাদাম খাওয়া যায় সহজেই। বাদামে চর্বি বেশি হলেও এর স্বাস্থ্যগুণ আর ক্যালরির পরিমাণ বেশি। আবার বাদাম ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্যও উপকারি।
অ্যামন্ড বা কাঠবাদাম, কাজু বাদাম, হ্যাজেলনাট, পিক্যান, পাইন নাট, পেস্তা বাদাম, ওয়ালনাট বা আখরোট। পিনাট বা চিনা বাদাম পুষ্টিগুণ ও গুনাগুণের জন্য শিম জাতীয় খাদ্য যেমন মটরশুঁটি ও নানারকম ডালের পর্যায়ে পড়ে। দারুণ সহজলভ্য এই খাবারটির রয়েছে নানা গুণাগুণ।
ওজন কমায়
উচ্চমাত্রার ক্যালরি এবং চর্বি থাকার পরেও বাদাম ওজন কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের শরীর বাদামে থাকা খাদ্যশক্তির পুরোটা শোষণ করতে পারে না। তাই বাদাম খেলে ওজন বাড়ার পরিবর্তে উল্টো কমে যায়।
উপকারি খাদ্যআঁশ যোগায়
বাদামে থাকা উচ্চ মাত্রার খাদ্যআঁশ অনেক্ষন পেট ভরিয়ে রাখে, ফলে বেশি বেশি ক্যালরি গ্রহণের প্রবনতা কমায়। পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও নানারকম রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায় বাদাম।
ভরপুর পুষ্টি
এক আউন্স বা ২৮ গ্রাম বিভিন্ন রকমের বাদামে শক্তি ১৭৩ ক্যালরি, প্রোটিন ৫ গ্রাম, চর্বি ১৬ গ্রাম যার মধ্যে মনোস্যাচুরেটেড চর্বি ৯ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৬ গ্রাম, খাদ্যআঁশ ৩ গ্রাম। এছাড়াও প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ই এর ১২ শতাংশ, ম্যাগনেশিয়ামের ১৬ শতাংশ, ফসফরাসের ১৩ শতাংশ, কপার বা লেডের ২৩ শতাংশ, ম্যাঙ্গানিজের ২৬ শতাংশ, সেলেনিয়ামের ৫৬ শতাংশ পাওয়া যায়।
অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের উৎস
বাদামকে বলা যায় অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের পাওয়ার হাউজ। বাদামে থাকা পলিফেনল ফ্রি র্যাডিক্যাল তৈরিতে বাঁধা দেয় যা অক্সিজেনের অভাবজনিত মানসিক চাপ দূর করে। কোষের ক্ষয়রোধ করে ও নানা রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।
ডায়াবেটিস ও হজমে সমস্যা দূর হয়
সারা পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষ টাইপ টু (type 2) ডায়াবেটিসে ভোগেন। হজমে সমস্যা থাকলে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও টাইপ টু ডায়াবেটিসে ভোগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। হজম ও টাইপ টু ডায়াবেটিসের সমস্যায় বাদাম দারুণ উপকারি। বাদামে শর্করা কম থাকায় রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ায় না। তাই উচ্চ মাত্রার শর্করাজাতীয় খাবারের পরিবর্তে বাদাম খেলে তা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ কমায়
শরীরে কোন ধরনের আঘাত লাগা, ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোন ক্ষতিকর রোগ থেকে নিজেকে রক্ষার প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হল প্রদাহ। বাদাম শরীরকে এই প্রদাহ থেকে রক্ষা করতে পারে। নিয়মিত বাদাম খেলে তাই ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ ও নানারকম অসুখের প্রকোপ কমায়।
সুস্থতা আর ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় তাই বাদাম রাখুন।