কার্তিকের ভোজে ইলিশ, শাপলা, মোচা আর কলার থোড়
১২ নভেম্বর ২০১৯ ১০:৩০
কার্তিকের এই সময়ে চলছে ইলিশ রান্নার ধুম। সর্ষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, ভাঁজা, তরকারিতে দিয়ে, ঝোল করে, ইলিশ পোলাও- কতভাবেই না খাওয়া হয় সবার প্রিয় এই মাছ। আজ রয়েছে ইলিশ মাছের সম্পূর্ণ আলাদা একটি রেসিপি- ইলিশের ঘন্ট। সেই সঙ্গে বাজারে এখনও মিলছে শাপলা ডাঁটা আর কলার থোড়। শীতকালীন প্রিয় সবজি লাউ তো খাওয়া হচ্ছেই সবসময়। ইলিশের ঘন্টের পাশাপাশি আজ রইলো মাছের মাথা দিয়ে লাউয়ের ঝোল, কলার থোড় ভাঁজি আর শাপলা ভাজির রেসিপি। সহজ এই রেসিপিগুলোর সাহায্যে রাঁধতে পারবেন যে কেউই। আজই চেষ্টা করে দেখুন সহজ এই দেশি পদগুলো। রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন, ফারজানা আফরোজ ডলি।
ইলিশ ঘন্ট
উপকরণ
- মাঝারি সাইজ ইলিশ ১ টা
- কাটা পেঁয়াজ ১ কাপ
- রসুন বাটা ১ চা চামচ
- আদা বাটা ১/২ চা চামচ
- জিরা বাটা প্রায় ১ চা চামচ
- ধনিয়া গুড়া ১/২ চা চামচ
- লবণ আন্দাজমতো
- তেল ১ টেবিল চামচ
- কাঁচামরিচ কয়েক টা
- লেবুপাতা ৭ থেকে ৮ টা
পদ্ধতি
- প্রথমে মাছ কেটে টুকরো করে ধুয়ে নিতে হবে।
- কড়াইতে তেল গরম হলে পেঁয়াজ দিয়ে ভাজতে হবে। পেঁয়াজ কিছুটা নরম হয়ে আসলে এতে হলুদ আর মরিচ গুড়া দিয়ে অল্প পানি দিতে হবে (তরকারির রঙ সুন্দর করার জন্য হলুদ আর মরিচ এভাবে দেই)। এরপর, এতে সব বাটা ও গুড়া মশলা, লবণ আর অল্প পানি দিয়ে মশলাটা কষাতে হবে।
- এবার এতে মাছের মাথা দিয়ে আধা কাপ পানি দিয়ে ঢেকে রান্না করতে হবে। পাঁচ থেকে ছয় মিনিট পর মাভহের বাকি টুকরোগুলো দিয়ে মাঝারি আঁচে ঢেকে রান্না করতে হবে।
- মাঝেমধ্যে ঢাকনা তুলে সব মাছ নেড়েচেড়ে ভেঙে দিতে হবে। কয়েকবার এভাবে করলে সব মাছ সিদ্ধ হয়ে ভেঙে ঘন্ট হয়ে যাবে।
- তেল উপরে উঠে আসলে মাখা মাখা ভাব থাকতেই আগে থেকে ধুয়ে রাখা লেবু পাতা আর কাঁচা মরিচ দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে পরিবেশন পাত্রে ঢালতে হবে।
শাপলা ভাজি
উপকরণ
- শাপলা – ২আঁটি
- কুচোচিংড়ি – ১টেবিল চামচ
- পেঁয়াজ কাটা- ১ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজ বাটা- ১ চা চামচ
- রসুন বাটা-আধা চা চামচ
- লবণ- আন্দাজমতো
- হলুদ, মরিচ গুড়া- সামান্য ( তরকারির রঙ সুন্দর করতে)
- কাঁচামরিচ ফালি- ৩থেকে ৪টা
- তেল- ১ চা চামচ
পদ্ধতি
- প্রথমে শাপলা গুলোকে বেছে, কেটে, ধুয়ে নিতে হবে। গরম পানিতে শাপলা দিয়ে ৫ থেকে ৭ মিনিট সিদ্ধ করে ঝাঝরিতে ঢেলে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।
- চুলায় তেল দিয়ে কাটা পেঁয়াজ দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে এতে হলুদ আর মরিচের গুড়ার সঙ্গে একটু পানি দিয়ে নাড়তে হবে।
- এবার এতে কুচো চিংড়ি, পেঁয়াজ আর রসুন বাটা দিয়ে সামান্য পানি দিয়ে কষাতে হবে।
- কড়াইয়ে এবার শাপলা দিয়ে পানি না শুকানো পর্যন্ত ভাঁজতে হবে। পানি একদম শুকিয়ে গেলে কাঁচা মরিচ দিয়ে নেড়ে নামিয়ে পরিবেশন পাত্রে ঢালতে হবে।
মাছের মাথা দিয়ে লাউ ঝোল
উপকরণ
- লাউ মাঝারি সাইজের ১ টা
- মাছের মাথা যে কোন (রুই, শোল, আইড়, বোয়াল)
- পেঁয়াজ বাটা ১ চা চামচ
- রসুন বাটা ১/২ চা চামচ
- লবণ আন্দাজমতো
- হলুদ গুড়া আধা চা চামচের একটু কম
- মরিচ গুড়া খুব সামান্য (যে যেমন খেতে পছন্দ করেন)
- কাচামরিচ ৮/১০টা
- ধনেপাতা ১/২ কাপের মতো (ছোট কাপে)
- তেল ১ চা চামচ
পদ্ধতি
- লাউয়ের খোসা ছাড়িয়ে ধুয়ে কুঁচিয়ে ঝাঝরিতে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। কাটার সময় খুব বেশি পাতলা করা যাবে না।
- একটা পাতিলে তেল দিয়ে হলুদ আর মরিচের গুড়া দিয়ে অল্প পানি দিয়ে নেড়ে একে একে পেঁয়াজবাটা আর রসুনবাটা দিতে হবে
- মষলা কিছুক্ষণ কষিয়ে এতে মাছের মাথা দিয়ে সামান্য পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে কষাতে হবে।
- এবার এতে লাউ দিয়ে ঢাকনা দিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করতে হবে। কয়েকবার ঢাকনা তুলে নেড়ে দিতে হবে।
- লাউ সিদ্ধ হয়ে গেলে ঢাকনা নামিয়ে চুলার জ্বাল একটু বাড়িয়ে দিতে হবে।
- মোটামুটি রান্না হয়ে গেছে বুঝলে কাঁচামরিচ আর ধনেপাতা দিয়ে নেড়ে নামিয়ে নিতে হবে।
- বড় মাছের মাথা ছাড়াও চিংড়ি, টাকি মাছ দিয়েও একই পদ্ধতিতে এই রান্না করা যাবে।
কলার থোড় ভাজি
উপকরণ
- কলার থোড় ১ টি
- পেঁয়াজ কাটা বড় ১ কাপ
- কাঁচামরিচ ফালি করে কাটা ৪ থেকে ৫ টি
- হলুদ আর মরিচ গুড়া একসঙ্গে ১/২ চা চামচ
- ধনিয়া গুড়া ১/২ চা চামচ
- রসুন বাটা ১/২ চা চামচ
- আদা ১/২ চা চামচ
- জিরা বাটা ১/২ চা চামচের একটু বেশি
- তেল ১ টেবিল চামচ
পদ্ধতি
- প্রথমে ভাল করে কলার থোড় বেছে নিতে হবে।
- এবার একে সিদ্ধ করে শিলপাটায় বেটে নিতে হবে।
- একটা কড়াইয়ে তেল গরম কর পেঁয়াজ দিয়ে নাড়াচাড়া করে কিছুটা বাদামি করে নিতে হবে।
- এবার একে একে সব মশলা, লবণ, ছোট চিংড়ি দিয়ে সামান্য পানি দিয়ে মশলা কষাতে হবে।
- এবার থোড় বাটা দিয়ে পানি না শুকানো পর্যন্ত নাড়তে হবে।
- থোড় ভাজির পানি শুকিয়ে তেল মাখা মাখা হয়ে এলে নামিয়ে ফালি করা কাঁচা মরিচ দিয়ে পরিবেশন করতে হবে।