Sunday 08 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোজার সুস্থতা।।শেষ পর্ব।। ঈদের খাবার হোক পুষ্টি মেপে ও পরিমিত


২৩ মে ২০২০ ১০:৩০ | আপডেট: ২৪ মে ২০২০ ০৪:৪৭
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। তবে এবারের ঈদ একদমই ব্যতিক্রম। একদিকে যেমন মহামারি করোনার থাবায় জর্জরিত তেমনি উপকূলীয় অঞ্চলে আম্পানের তাণ্ডবে সাধারণ জীবনযাপন হয়ে উঠেছে অসহনীয়। সবকিছু মিলিয়ে এবারের ঈদ কিছুটা বর্ণহীন। তারপরও ঈদ বলে কথা তাই নিজের ও অন্যের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ঈদ আনন্দ ঘরেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। একমাসের লম্বা সময়ের রোজায় আমাদের খাবারের ধরণ, সময়সূচি বদলে গিয়েছিলো। শেষ হয়ে এলো মাহে রমজান। এরপরই আবার পুরনো জীবনে ফিরে যাবো আমরা। তাই সতর্ক হতে হবে ঈদের দিনের খাওয়াদাওয়া নিয়ে।

ঈদের দিন হঠাৎই অনেক খাওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যায় অনেকের যা একদমই ঠিক না। শরীর ঠিক রাখতে নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত। ঈদের দিন একসঙ্গে অনেক গুরুপাক খাবার না খেয়ে পুষ্টি মেপে ও পরমিত পরিমাণে খান। আসুন দেখে নেই ঈদের খাদ্যতালিকায় কী কী থাকতে পারে।

বিজ্ঞাপন

টক দই
টক দইয়ের ব্যাকটেরিয়া আমাদের দেহে আত্মবিশ্বাস ও সাহস বৃদ্ধি করে আর চাপ কমায়। তাই যে কোনো খাবার গ্রহণের পর টক দই খান।

পেস্তা বাদাম
যেকোনো মিষ্টি জাতীয় খাবারের উপর পেস্তা বাদাম ছড়িয়ে দিন।  কারণ পেস্তা বাদাম হৃদপিণ্ডের জন্য অনেক ভালো  এবং এতে মানসিক চাপও কমে।

দুধ
দুধ ভিটামিন ডি এর অন্যতম উৎস। লন্ডন ইডিসিএল ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্থ নামক সংগঠন ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ৫ হাজার ৯শ ৬৬ জন নরনারীর উপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে দুধ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে। তাই  ঈদের দিন  দুধের তৈরি  সেমাই , লাচ্ছি, ফিন্নি সন্দেশ ইত্যাদি খান। তবে অল্প চিনি দিয়ে ঘরে তৈরি হলেই ভালো।প্রোটিন জাতীয় খাবার

মুরগির মাংস,  মাছ, ডাল ইত্যাদি  রাখতে পারেন খাদ্যতালিকায়।এছাড়াও ভিটামিন সি জাতীয় খাবার যেমন- লেবুর শরবত, কমলা/মাল্টার শরবত ইত্যাদি আপনার খাবারে আনবে বৈচিত্র্য ও দেবে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি।করোনার জন্য ঈদের সারাদিন ঘরেই কাটবে আমাদের। তাই একসঙ্গে অনেক খাবার না খেয়ে একটু একটু করে ধীরে ধীরে খাবেন।আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে সকাল, দুপুর, বিকাল ও রাতের খাবার কেমন হবে তার কিছু নমুনা দিলাম। আপনারা চাইলে ভিন্নতা আনতে পারেন।

মেধা বিকাশে সাপলিমেন্টারি নয়, তাজা খাবার

সকালের খাবার
একসঙ্গে অনেক খাবার গ্রহণ না করে অল্প পরিমাণে খান। সকালে ২ টি খেজুর অথবা ফলের রস খেতে পারেন। একদম সকালে খালি পেটে দুধের তৈরি খাবার গ্রহণ করবেন না। তাতে এসিডিটি হতে পারে।

দুপুরের খাবার
এই দূর্যোগে সাদা ভাত, সবজি আর মাছ/মাংসের জুড়ি নেই। তবুও ঈদ বলে কথা। তাই স্বাদের ভিন্নতা আনতে খুব কম তেলে পোলাও বা চিকেন বিরিআনি, মুরগির রেজালা বা কোরমা, মাছের যে কোনো আইটেম যেমন-ফিস চপ বা কাটলেট, গ্রিল ফিশ করতে পারেন। তাছাড়া ঘরোয়া পাস্তা, চিকেন শর্মা ইত্যাদি খাবার সালাদ দিয়ে খেতে পারেন।

বিকালের খাবার
দই, সেমাই, লাচ্ছি, মিষ্টি, পুডিং, স্যুপ, নুডুলস ইত্যাদি পরিমাণ বুঝে খাবেন।

রাতের খাবার
আমরা যেহেতু সারাদিন ঘরেই থাকবো তাই রাতের খাবার যতটা সম্ভব হালকা হবে। ঘুমানোর ২ ঘন্টা আগে খেয়ে ফেলতে হবে। যাদের গ্লুটেন হজমে সমস্যা হয় তারা রাতে রুটি না খাওয়া উত্তম। সেক্ষেত্রে ওটসের সাথে দই মিক্স করে খেতে পারেন। আর যাদের গ্লুটেন হজমে সমস্যা নেই তারা রুটি, মুরগির মাংস, সালাদ, টক দই খেতে পারেন। কেউ যদি রুটির সঙ্গে অল্প পরিমাণে গরুর মাংস গ্রহণ করেন তবে সঙ্গে একটু বোরহানি রাখতে পারেন।

কয়েকটি টিপস

  • অতিরিক্ত  প্রয়োজন না হলে বাসার বাইরে যাবেন না।
  • বাইরে বের হলে মাক্স ও গ্লাভস ব্যবহার নিশ্চিত করবেন।
  • ঘরে বসে ৩০ মিনট হলেও শরীর চর্চা করুন।
  • ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধোবেন।
  • সারাদিনে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করবেন।
  • মন ঠান্ডা রাখতে মেডিটেশন করুন। বাচ্চাদের নিয়ে খেলা করুন।
  • ধীরে ধীরে খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান।
  • অতিরিক্ত মসলা, তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার বর্জন করুন।
  • ডায়বেটিস, কিডনি, লিভার ডিজিস  অর্থাৎ বিশেষ কোনো রোগ থাকলে চিকিৎসক/পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।
  • অতিরিক্ত খাওয়া থেকে দূরে থাকুন।
  • প্রতিদিন ৬-৭ ঘন্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।

আপনার ঈদ শুভ হোক এই কামনায় আমি আমার রোজার সুস্থতার ১০ম অর্থাৎ শেষ পর্বের ইতি টানছি। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিজের ও পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।

ঈদ পরিমিত খাবার পুষ্টিকর খাবার প্রোটিন জাতীয় খাবার রোজার সুস্থতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর