গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু হলে যা করবেন
৭ আগস্ট ২০২২ ১৬:৩০
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রায় ৫০ থেকে ১০০ মিলিয়ন মানুষ প্রতিবছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। এ রোগের অন্যতম বাহক হচ্ছে এডিস মশা। এই মশা কামড়ালে ডেঙ্গুর ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। সাধারণত এডিস মশা কামড়ানোর ৪ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ দেখা যায়। উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরে ছোট ছোট লাল ফুসকুড়ি (rash), মাংসপেশী এবং অস্থি-সন্ধিতে ব্যথা ইত্যাদি।
তবে এখন ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ বদলে গিয়েছে। অনেকসময় রোগীরা বিভিন্ন ধরনের জটিলতা নিয়ে আসে। যেমন, ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিবার। এতে শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। অথবা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম – এতে অনবরত বমি, তীব্র পেট ব্যাথা, নাড়ীর গতি কমে যাওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। সাধারনত জ্বর কমে যাওয়ার পর এসব জটিলতা দেখা দেয়।
গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই নারীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এই সময়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে প্রসূতি মা এবং গর্ভস্থ শিশুর নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন,
১. কম ওজনের শিশু জন্ম নেয়া
২. অকাল প্রসব
৩. গর্ভস্থ শিশু পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত না হওয়া
৪. মৃত সন্তান প্রসব
৫. মায়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ
এই রক্তক্ষরণ গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ( নরমাল বা সিজারিয়ান সেকশন) অথবা প্রসব পরবর্তী সময়ে হতে পারে। বিশেষ করে প্রসূতি মা যদি ডেঙ্গুজনিত জটিলতায় ভোগেন সেক্ষেত্রে রক্তক্ষরণের মাত্রা বেড়ে যায়।
করণীয়
ডেঙ্গুর এই সময়ে প্রসূতি মা জ্বরে আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হোন।কোন উপসর্গ ছাড়া জ্বর দেখা দিলে পরিমিত বিশ্রাম নিতে হবে। জ্বর ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার চেয়ে বেশি হলে সারা শরীর বিশেষ করে হাতের তালু, পায়ের তালু, মাথা স্বাভাবিক পানিতে কাপড় ভিজিয়ে মুছে নিন।
তাজা ফলমূল খান। নিয়মিত দুই থেকে তিন লিটার ফলের রস, স্যুপ, ওরস্যালাইন, লেবুর শরবত, ইত্যাদি খেতে হবে। এসবের পাশাপাশি স্বাভাবিক নরম খাবার গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শুধুই ব্যাথানাশক ওষুধ, প্যারাসিটামল ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন।
গর্ভবতী নারীর রক্তের জেনে চার থেকে পাঁচজন ডোনার খুঁজে রাখুন যেন যেকোন জরুরী অবস্থায় রক্ত পাওয়া যায়।
শুধুমাত্র ডেঙ্গু জ্বরের কারনে জরুরী ভিত্তিতে প্রসব করানোর কোন প্রয়োজন নেই। সঠিক চিকিৎসা ও যত্ন চালিয়ে যেতে হবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়
ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী এডিস মশা পরিস্কার জমানো পানিতে ডিম পাড়ে। তাই বালতি, ফুলের টব ইত্যাদি জায়গায় নিয়মিত নজর রাখুন।
এই মশা দিনের বেলায় কামড়ায়। তাই দিনের বেলা যতটা সম্ভব হাত-পা ঢাকা হালকা রঙের পোশাক পরুন। গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকারক নয় এমন রিপিলেন্ট বা স্প্রে শরীরে ব্যবহার করতে পারেন। দিনে এবং রাতে অবশ্যই মশারী ব্যবহার করুন।
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি