Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাংস খান, তবে নিয়ম মেনে

ফিচার ডেস্ক
১৭ জুন ২০২৪ ১৪:৫৮

উৎসবে-উপলক্ষ্যে, মাংস খাওয়া হবেই। আর তা যদি হয় কোরবানি ইদের মতো উপলক্ষ্য, তাহলে অনেক রোগশোকও উপেক্ষা করা যায়! উৎসবের দিনের আনন্দ তো হলো, কিন্তু এর পরের ধকলটাও তো এই শরীর যন্ত্রকেই সামলাতে হয়। আর তাই মাংস খেলেও তা যেন পরিমিত থাকে এবং নিয়ম মেনে খাওয়া হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

গরু, খাসি, উট কুরবানি করে মাংস বিলিয়ে নিজেরাও ইদের দিন থেকে শুরু করে প্রায় সাতদিন ধরে চলতে থাকে নানান রকম রান্না করে মাংস খাওয়ার মহা উৎসব। গরু, খাসি, উট এ ধরনের প্রাণীর মাংসগুলোকে রেড মিট বলে। রেড মিটে জমাট বাঁধা অবস্থায় অনেক চর্বি থাকে। স্বাস্থ্যের জন্য এই চর্বির ভালো দিক যেমন আছে তেমনি রয়েছে নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য, সুস্থভাবে দৈনন্দিন শারীরিক এবং মানসিক কাজগুলো করার জন্য খাবার খেতে হয়। কারণ খাবার থেকেই আমরা প্রয়োজনীয় শক্তি পেয়ে থাকি। খাদ্যবিজ্ঞানে এই শক্তিকে ক্যালরি বা কিলোক্যালরি বলা হয়। সবার প্রতিদিন একই পরিমাণ ক্যালরি বা শক্তি দরকার হয় না। আমাদের প্রতিদিন কতটুকু ক্যালরি বা শক্তি খাবার থেকে প্রয়োজন তা নির্ভর করে বয়স, উচ্চতা, পেশা, নারী-পুরুষ-শিশু, শারীরিক অবস্থা এবং লাইফস্টাইলের উপর।

বিজ্ঞাপন

জীবনযাপনের ধরণের উপর নির্ভর করে সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর প্রতিদিন ১৬০০-২৪০০ ক্যালরি প্রয়োজন হয়। আর পুরুষদের ২০০০-৩০০০ ক্যালরি দরকার হয়। একটি বাচ্চার প্রতিদিন ১০০০ ক্যালরি, আর বয়সন্ধিকালের বাচ্চাদের প্রয়োজন হয় ৩২০০ ক্যালরি এবং যুবকদের জন্য ২০০০-২২০০ ক্যালরি দরকার। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে পুষ্টির চাহিদা এবং মেটাবলিজম কমতে থাকে এবং কাজের চাপও কমে যায় তাই ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ এবং প্রয়োজনও কমতে থাকে।

বিজ্ঞাপন

যারা প্রতিদিন ঘাম ঝরিয়ে কাজ করেন তারা সাধারণত যে পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ করেন সে অনুপাতে তা খরচও করেন। কিন্তু যারা সারাদিন চেয়ার টেবিলে বসে কাজ করে বা শুয়ে বসে জীবন কাটায় তাদের ক্যালরি গ্রহণ এবং খরচের মধ্যে ভারসাম্য থাকে না। অর্থ্যাৎ এ ধরনের জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষের শরীরে বাড়তি ক্যালরি চর্বি হিসেবে জমতে থাকে যা ওজন বাড়ানো থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস, উচ্চ-রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, হার্টের অসুখসহ নানা ধরনের জটিল রোগ সৃষ্টি করে। তাই ঈদের সময় যতই মাংস খাওয়ার উৎসবে মাতি না কেন স্বাস্থ্যের কথাও মাথায় রাখতে হবে।

গরুর মাংস এবং অন্যান্য রেড মিট রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও জিঙ্ক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য উপাদানে ভরপুর রেড মিট পরিমিত খেলে স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যাবে কিন্তু শুধু মুখের স্বাদ মেটানোর জন্য পরিমাণের এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেলে অসুস্থ হয়ে ঈদের আনন্দ নষ্ট যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।

লক্ষ রাখতে হবে, মাংসে যেন কোনো সাদা চর্বি না থাকে। অর্থাৎ মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে তা সম্পূর্ণ কেটে ফেলে দিতে হবে। কারণ, ওই চর্বি আপনার রক্তের নালিতে গিয়ে জমে যাবে। রক্তের নালিতে চর্বি জমে গেলে রক্ত সঞ্চালনে বাধা পাবে। এতে হৃৎপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হতে পারে এবং হার্টঅ্যাটাকও হতে পারে।

অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদে বেশি মাংস খাওয়া হয় বলে অনেকেই মুটিয়ে যেতে পারেন। সেই ক্ষেত্রে ব্যায়ামের অভ্যাস আজই শুরু করুন। নিয়মিত ৩০-৪০ মিনিট হাঁটুন। রাস্তায় গিয়ে হাঁটলে খুব ভালো। মুক্ত হাওয়ায় মনটাই ভালো হয়ে যায়। রাস্তায় যেতে না পারলে বাড়ির উঠানে অথবা ছাদে অথবা বারান্দায় হাঁটুন। দেখবেন শরীর-মন দুটোই ঝরঝরে লাগছে।

সারাবাংলা/এসবিডিই

মাংস খান- তবে নিয়ম মেনে লাইফস্টাইল সুস্থ থাকুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর