একটি বেগুনি মোরগের গল্প
৩০ মে ২০১৯ ২২:২২
সাত সকালে একখানা জবরদস্ত টেক্সট মেসেজ পেয়ে রীতিমতো লাফিয়ে উঠলো নারীটি। নারী মানে শফিকের বউ শামা, শফিক যার মন রক্ষার্থে প্রায়শ তাকে ‘বেবি’ বলে ডাকে। সহসা এমনতর বিদঘুটে টেক্সটের মানে কী বুঝতে না পেরে শামা মোটামুটি কোমায় চলে যাবার অবস্থা। পরে দিনপঞ্জি ঘেঁটে সে দেখলো দিনটি বড়ই পয়মন্ত- ৮ মার্চ। নারী দিবস। অর্থাৎ বাকি সব দিন আনাড়ি দিবস, যা কিনা সঙ্গত কারণেই পুরুষের কব্জায়।
টেক্সটখানা কী ছিল! পাঠালোই বা কে?
কে আবার? আমাদের চিরচেনা, পেশায় স্ত্রৈণ, নেকু নেকু স্বভাবের শামার স্বামী শফিকুর। নারীদিবস উপলক্ষে স্ত্রীকে সে দিলখুশ টাইপের একটা মেসেজ ঠুকে দিয়েছে। লিখেছে, বেবি, আই লাভিউ। ব্যস, তাতেই শামার অবস্থা কাহিল, কোমায় যাবার উপক্রম। হঠাৎ স্বামীর দিলে প্রেম এমন উথলে কেন উঠলো, তাই নিয়ে ভাবতে ভাবতে গলদঘর্ম আমাদের শামা। শামা জানে, এবং মানেও- তাকে অগ্রাহ্য করার ‘খেমতা’ বেচারা শফিকুরের নেই। শামার মামা কেউকেটা উকিল। কথায় কথায় পেনাল কোডের ধারা শোনায়। শফিক তাকে রীতিমতো ভয় খায়, মাঝেমাঝে পদচুম্বনও করে। ভিতু টাইপ আর কি।
কোমার ঘোর কাটলে শামা ধাতস্থ হয়। ভাবে, মন্দ কী! স্বামীটিকে যদি আসামি করে মনের জেলে পুরে রাখা যায় তাতে আখেরে তার লাভ বেশি। পরকীয়ায় ঝুঁকবে না, গৃহস্থালী কাজকর্ম বেশ সামাল দেবে। চাই কি অবরে সবরে টুকটাক বডি ম্যাসাজও দিতে পারবে। এমন শান্তশিষ্ট ও গৃহপালিত স্বামী ক’টা নারীর ভাগ্যে জোটে বলুন!
নারীদিবস বলে কথা। শামার আজকে কদরই আলাদা। পাড়ার পোলাপান যত সুন্দরী ভাবিসাবকে সদলবলে উইশ করতে আসছে। সাথে দৃষ্টিনন্দন ফুলের বুকে (মদনদের ভাষায় বুকেট, যেমন বুফেকে বলে বুফেট বা বাফেট), মিষ্টির ছোঁয়া। অতি সাহসী কেউ কেউ কায়দা বুঝে একটু সেন্টুও ধরিয়ে দিতে চায়। সেন্টুর ঘ্রাণে যদি প্রেমখানা একটা জুটে যায় আর কি!
আমাদের শফিককে ওরা চেনে। নির্বিষ ঢোঁরা একটা। একটুও বিষ নেই, কুলপনা চক্করও নেই। এমন বেবোধ লোকের বউ কি করে টিকে, ওরা ভেবে পায় না। পাড়াত সূত্রে এসব দেবরদের আদিখ্যেতা বেশ খায়, আই মিন উপভোগ করে আমাদের সুন্দরী শুচিস্মিতা ভাবি শামা। হঠাৎ এসব কী? নাশতার টেবিলে এক রকম জেরা করতে থাকে শামা। যেন মহা অন্যায় করে ফেলেছে বেচারা শফিকুর। সত্যি বলতে, বউ জেরার মুডে থাকলেই শফিকুরের পেটের ভিতর অজানা ভয়ে গুড়গুড় শব্দ উঠতে থাকে। যেন সে মানুষ নয়, বনের হরিণ- বাঘের ভয়ে যার নিজের নাভি থেকেই গুড়গুড় শব্দ ওঠে।
না মানে এট্টু ভালবাসতে ইচ্ছে হল তো তাই। শফিকুর মুড়মুড়ে গলায় বলল। এরে কয় বেহুদা ভাব। অনর্থক স্মার্ট হবার চেষ্টা। আরে ব্যাটা, গায়ে ভাল চোগা-চাপকান চাপালেই কি আর স্মার্ট হওয়া যায়! ওটা ভেতরে থাকতে হয়। ইদানিং শফিকুরের মতো কিছু মহিলাও ক্ষয়াটে জিরো ফিগার হয়ে ভুলভাল বাংলিশ আউড়ে রীতিমতো মডেল হয়ে উঠছে। যাগ গে, মূল প্রসঙ্গে আসি। শফিকুরের উত্তর শামাকেও মোটেও কনভিন্স করতে পারেনি। শামা নাকে অদ্ভুত এক রকম চিঁউচ শব্দ করে বলল, কেন, আজই কেন তোমার মেসেজ পাঠাতে হল! মেসেজ ল্যান্ড করার শব্দে আমার এত আরামের ঘুমখানা ভেঙে চুরমার। বোকা গাধা কোথাকার। কখন কী বলতে হয় তাও বোঝে না। স্বামীকে একহাত নিল শামা।
না মানে, আজ তো নারীদিবস, তাই ….! শফিকুর আরো কিছু বোধ হয় বলতে যাচ্ছিল। পথেই থামিয়ে দেয় আমাদের শামা। বলল, কেন! আর কোন দিন আমাকে ভালোবাসবে না বলে ঠিক করেছ! এত্তবড় সাহস তোমার! দেখি দেখি, তোমার দিলে পশম কয়টা! বেশি তেরিবেড়ি করলে সবগুলো পশম টেনে-খিঁমচে তুলে এনে আঁটি বেঁধে হাতে ধরিয়ে দেব।
না মানে…!
খামোশ! মুখে মুখে আবার কথা! শামা এখন রায়বাঘিনী।
উঁহু! ব্য…..ব্য…..ব্যথা লাগবে তো!
কী হল! গাধার মতো ব্যা ব্যা করছো ক্যান! দিমু নাকি বগলের তলার পশমও তুলে!
শফিকুর আপাতত চুপ। যদিও সে এখনও বুঝে উঠতে পারলো না, বউকে আদর করে এক টুকরো ‘লাভিউ’ পাঠিয়ে এমন কী পাকা ধানে মই দিয়েছে! আরে ভাই, তোমার সেলফোন, চাইলে তুমি র্ঘর র্ঘর মোডে রাখতে পারতে। আই মিন ভাইব্রেশন। তা না করে এখন যত দোষ নন্দ ঘোষ। এই জন্যই বলে, নিজে থেকে কারো ভাল করতে নেই। উপকারিকে বিড়ালের আন্টিতে খায়।
আসলে ব্যাপার কী জানেন তো, কেউ কারো অবস্থায় খুশি নয়। সাধে কী রবি ঠাকুর বলেছেন, আমি যাহা চাই ভুল করে চাই। যাহা পাই তাহা চাই না! বেচারা শফিকুর বউকে তেলাতে গিয়ে রামধরা খেল। বউ তাকে উল্টো ঘুমভাঙার অজুহাতে অভিযুক্ত করে বসলো।
ভুল যেহেতু সে করেছে, শাস্তি তাতে পেতেই হবে। বলল, যাও, পার্পল রঙের শার্ট কিনে আনো। আজ আমরা সবাই মিলে পার্পল কালার শাড়ি পরবো। কী হল, যাও?
ভাতের বদলে ভ্যাবাচ্যাখা খেল শফিকুর। শাড়ি পরবো মানে! সেও শাড়ি পরবে! ইজ ইট পসিবল? এ কোন জামানা আইলো রে! নারী দিবসে বউয়ের সাথে স্বামীকেও শাড়ি পরতে হবে!
থতমত খেয়ে বেচারা শফিকুল কোনমতে বলল, পার্পল? ইহা কিহা? নেংটুকালের সেই মজার খেলা মার্বেলের চাচা-ভাতিজা কিছু হবে। রঙ বিষয়ে তার খুব একটা জ্ঞানগম্যি নেই। বউ শামা তার মামার মতো আরেক দফা পেনাল কোডের ধারা-উপধারা শোনালো। ফলত ভয়ে শফিকুরের পাতলুন নষ্ট হবার জোগাড়। ভয় এমন জিনিস, বাচ্চা থেকে বুড়ো, মামা কিংবা খুড়ো, একবার পেয়ে বসলে হাঁটু অব্দি কাঁপতে থাকে।
শফিক প্রশ্নবোধক চোখে চাইতে খেঁকিয়ে ওঠে শামা। বলে, তুমি বুঝতে যদি রঙ মিলিয়ে শাড়ির সাথে ব্লাউজ, কাঁচুলি বা সায়া কিনতে হত! হাঁদারাম একটা! তখন তোমার হাড়ে দুব্বা গজাত।
শফিক নারীদিবসে আচ্ছাসে অপমান সহযোগে বউয়ের ঝাড়ি খেল। মনে মনে এই ভেবে সান্তনা পেল, একটাই তো দিন মোটে। তাছাড়া ঝাড়ি আর ঝালমুড়ির মাঝে দারুণ মিল। বলা বাহুল্য, ঝালমুড়ি শফিকের বেজায় পছন্দ। সর্ষেতেল আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে মুড়িমাখা পেলে শফিক ভাত কেন, বউয়ের ঠোঁটে হামিও খায় না।
রঙ চিনতে রঙ করছে শফিক। শামা তাকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে শেষে ব্যর্থ হয়। এবং পরিশেষে কিচেন থেকে একখানা নধর দেখতে বেগুন এনে বলল, যাও, ঠিক এই রকম দেখতে একটা পাঞ্জাবি বা জামা কিনে আনো। আমরা একসাথে সেলফি তুলবো।
এই এক রোগ- সেলফি। শফিকের মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় মার্ক জাকারবার্গ শালাকে পেলে পেঁদিয়ে বৃন্দাবন দেখিয়ে দিত। যত দোষ জাকারবার্গের। ফেসবুক না এলে সেলফি নিয়ে এত ছলাকলা হত না। সেলফি তুলে দেখাতো কোথায়! যত্তোসব নারকীয় কারবার।
প্রসঙ্গত বলা যায়, সেলফিকাণ্ডে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের হাত পাকা। যতই নারীবাদ নারীবাদ বলে চেল্লানো হোক, বস্তুত নারীদের সস্তা করছে মেয়েরাই। মাইন্ড ইট- শব্দটা কিন্তু মেয়েরা। মানে যারা অঙ্গসৌষ্ঠবের ব্যাপারে একটু বেশিই সচেতন। কোন ছেলের ওয়ালেটে চুকাম সামগ্রী খুঁজে পাবেন না। কিন্তু অলমোস্ট প্রতিটি সোমত্ত মেয়ের সাথে একটি করে ঝোলাব্যাগ থাকবে, যাকে কিনা ভদ্রভাষায় বলা হয় ভ্যানিটি, ভ্যানিটির অন্দরে থাকবে নানা রকম খুঁটিনাটি, আই মিন রুজ-পাউডার থেকে শুরু করে মাসকারা, লিপগ্লস, আইশ্যাডো, লিপস্টিক ইত্যাদি। তার মানে কী! মেয়েদের (নারী নয়) ব্যক্তিত্বের অনেকখানি নির্ভর করে চুনকামের উপর যা কিনা পুরোটাই কৃত্রিম ও ভড়ংপূর্ণ।
শফিক নাদান পাবলিক, সে অতশত বোঝে না। সে চেনে তার বউ শামা আর তার কেষ্টবিষ্টু মামা দুঁদে উকিল রকিবুদ্দিনকে। বউয়ের দেয়া বেগুন নিয়ে ঝটিতি মার্কেটে ছুটলো শফিক। রঙ মিলিয়ে কুর্তা আনা চাই। বা শামার পছন্দের কলারছাড়া জামা।মেলা ঝামেলা পোহালো সে। জামা আছে, তবে রঙ নাই। ছেলেরা নাকি এমন ধারা জামা কখনও পরে না। বেগুনী রঙ নারীদের জন্য, তুমি পরবে সফেদ- তবেই না পারসোনালিটি খোলতাই হবে।
একটা কথা বলে নেয়া ভাল, নইলে যথাসময়ে মেমরি বিট্রে করবে- সে হল, আমাদের শামার সব ভাল, শুধু হাইটটুকু ছাড়া। সে দেখতে পুরাই বটম, আই মিন বাটুল, বা বলা যায় হিলসর্বস্ব।
এ বিষয়ে একদিন শফিক একটু মুখব্যাদান করেছিল মাত্র, অমনি তেড়েফুঁড়ে এলো ষাড় মামার রণরঙ্গিনী ভাগ্নি শামা। বিষাক্ত গলায় বলল, তুমি তো দেখছি চরম ছোটলোক, ইতর একটা। তুমি জানো না, আমার সাইজের ব্যাপারে আমার কোন হাত ছিল না। যেখানে সাইজ দরকার তা তো আছেই। তোমার ছেলেপুলে সেই ছোটকালে খেয়েপরে তো বেশ ছিল।
হুম!
বিনা নোটিশে বেরিয়ে গেল শফিকের গলা থেকে।
অকৃতজ্ঞ একটা। কেন, তুমিও সে প্রসাদ পাওনি! কত রকম নাড়াঘাঁটা, চোষা-চাটা! সে কী উচ্ছ্বাস! সব ভুলে গেলে। নাকি ইচ্ছে করেই স্মৃতির নুলো গুলে খেয়েছ!
শামা পারতপক্ষে শফিকের গা ঘেঁষে দাঁড়ায় না। নাহ, শফিকের গাত্রগন্ধ মোটেও বমনেদ্রোককর নয়। শামা তাকে ছবির পোজে এড়িয়ে থাকে, কারণ এদের দেখে মনে হয় যেন বটের পাশে বৃক্ষ। হিমালয়ের কোলে উদখুল। উদখুল চিনেন তো! অনতিলম্ব মোড়া যার উপর কলসি-হাঁড়ি বসিয়ে রাখা হয়। যাতে কেতরে না পারে।
শফিক নারী দিবসে জান কয়লা করে মূর্তিমান মর্কটের মতোন মার্কেটে মার্কেটে ঘোরে। কিন্তু শামার দেয়া বেগুন রঙ জামা আর জোটে না। এরেই কয় আপদ। শফিক এখন কী করে! কী দরকার ছিল বাবা আহ্লাদ করে বউকে ভোররাতে টেক্সট ঠোকার! সব দোষ ওই মোবাইল ফোনের। যখন ও বস্তু ছিল না, মেয়েরা কি স্বামীর পেয়ার পায় নি!
পরে এক সহৃদয় টেইলর মহাশয় শফিককে একখানা বুদ্ধি দিল। বলল, ভায়া, কাঁদছেন কেন! কাঁদবেন না। কেঁদেকেটে বউয়ের হাত থেকে কেউ কখনও নিস্তার পায় নি। আপনিও পাবেন না। বরং মাথা খাটান, নয়তো খাটের পায়ার সাথে মাথা ঠোকেন। দেখবেন মাথা খুলে গেছে। নিদেনপক্ষে খুলি ফেটে বুদ্ধি মানে মগজ বেরোবে। আপনি হাসপাতালে থাকবেন, দেখবেন সাতখুন মাপ। বউ আপনার শিথানে বসে ইনিয়ে বিনিয়ে কাঁদছে। না না, ভুলেও ভাববেন না, সে আপনার শোকে কাঁদছে। এই ভেবে চোখের জলে বন্যা বইয়ে দিচ্ছে যে, আপনি হাসপাতালে শুয়ে থাকলে চক্ষুলজ্জার খাতিরে হলেও তাকে দুবেলা ডিউটি দিতে হবে।
যাক গে, নারী দিবসে শামার মেলা নিন্দেমন্দ হল। কিন্তু বেগুন-রঙ শার্ট আর কেনা হল না। তার বদলে শফিক একখানা গুয়েরঙ কুর্তা নিয়ে বাসায় ফিরলো। এটা নাকি পার্পলের ভায়রা ভাই, চলেবল আর কি।
শামার যথারীতি মুখঝামটা, বলি, চোখের মাখা কি খেয়ে ফেলেছ! এটা কি করে পার্পলের ধারেকাছে হল! এটা তো গোবর কালার। পরে কী ভেবে শামা অপেক্ষাকৃত শান্ত সুরে বলল, না থাক, তোমাকে এতেই মানাবে ভাল। যেমন প্রাণী তার তেমন চামড়া
খোঁচাটা ঠিক ধরতে পারে নি শফিক। বা পারলেও বুঝতে দেয়নি। দুনিয়াটা এমনই- একটু রয়েসয়ে যেতে হয়। সবখানে রিঅ্যাকশন দিলে তেতে পড়তে হয়। বলছে বলুক না, তাতেই কি সে প্রাণী হয়ে গেল! যার যেমন রুচি, সে তো তেমনই বলবে। মুলো খেলে কি আর ঘি-এর ঢেঁকুর উঠবে!
ড্রেসের কালার মনমতো হয়নি, তাই বেচারা শফিক মনোকষ্টে আছে। যখন সেলফির প্রহর এলো, শফিক যেন কেঁদেই ফেলবে। এতগুলো পার্পলরঙ জারুল ফুলের মাঝে সে একখানা ক্যাটক্যাটে গাঁদা। নাকি শামার ভাষায় আস্ত গাধা!
শফিক তাল না পেয়ে শামার গা ঘেঁষে দাঁড়াল। সেলফি তুলছে শামা। শিরোনাম- শফিক-শামা। কিন্তু শামার হাত ছোট, কারণ সে উচ্চতায় খাটো। তার পায়ের নিচে এত্ত উঁচু হিল। যেন হিমালয়। সেলফি তুলতে গিয়ে বারবার কাটা পড়ে যাচ্ছে শফিকের মাথা। শেষে রেগেমেগে শামা বলল, এই তোমার বাপ-মা খেয়েদেয়ে কাজ পায় নি! তোমার মতো একখানা জিরাফ জন্ম দিয়েছে। তুমি আরেকটু খাটো হলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হত।
শফিকের মনে হল, ইটস টু মাচ। বাপ-মা তুলে গালাগাল! কিন্তু শামার মামার ভয়ে সে খোলা মুড়ির মতো মিইয়ে মানে চুপসে গেল। সেলফি হল। শামার সাথে শফিকের গলাকাটা ছবি। পোস্ট হল। বেজায় লাইক এন্ড কমেন্টস পড়লো। পাবলিক ভেবেছে, সুপার-ইমপোজ করতে গিয়ে শামা ভুলে তার স্বামীকে উল্টো লটকে দিয়েছে। তাই গলার নলি আছে, কিন্তু মুণ্ডু নেই।
অনেক হল, এবার বিষয়ে আসি। ৮ মার্চ, বিশ্ব নারী দিবস। কিন্তু না, শ্রীমতি নারীদের আমরা একদিন মাত্র ফুলেজলে পূজা করবো না। আমরা তাদের নিত্য পূজা দিতে চাই। তবে নারীকেও নিজগুণে দেবী হতে হবে। ফুলনদেবী হলে ফুল জুটবে না, মিছে সম্পর্ক টুটবে।
নারী-পুরুষ সম্পর্ক চিরন্তন ও শাশ্বত। এদের সম্পর্ক যুগপৎ পেয়ারের ও কেয়ারের। নারীদের আমরা সম্মান করবো। লাঞ্ছনা নয়, আমরা সবাই মিলে নারীদের সাথে লাঞ্চ করবো। তবেই না জমে উঠবে নারী-পুরুষের মাঝে মাখোমাখো ভালবাসার হাটবাজার।