Thursday 10 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হায়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর সঠিক হয়নি: ওরহান পামুক


১২ জুলাই ২০২০ ২২:১৪ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ২২:১৫
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তুরস্কের বিশ্ব ঐতিহ্য হায়া সোফিয়াকে জাদুঘর থেকে মসজিদে রূপান্তরের সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রথম নোবেল জয়ী সাহিত্যিক ওরহান পামুক। তুরস্ক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পামুকের মন্তব্য, ‘আমি ক্ষুব্ধ’।

তিনি বলেন, ‘একমাত্র সেকুলার মুসলিম দেশ হিসেবে তুরস্ক সবসময়ই গর্বিত। হায়া সোফিয়া ধর্ম নিরপেক্ষতার অন্যতম নিদর্শন। তারা এখন জাতির এই অহংকারটি হরণ করেছে’। ‘আধুনিক তুরস্কের জাতির পিতা কামাল আতার্তুক যখন হায়া সোফিয়াকে জাদুঘর ঘোষণা করেন তখন সারা বিশ্বকে একটি ধর্ম নিরপেক্ষতার বার্তা দেওয়া হয়েছিলো’—বলেন ওরহান পামুক।

বিজ্ঞাপন

নিক্কেই এশিয়ান রিভিউয়ে দেওয়া সাক্ষাতকারে ওরহান পামুক বলেন,  ‘কামালা আতার্তুকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের একটি ছিলো হায়া সোফিয়াকে জাদুঘর ঘোষণা করা। তখন তিনি সারা বিশ্বকে বলেছিলেন- আমরা ধর্ম নিরপেক্ষ, আমরা অন্য মুসলিম রাষ্ট্র থেকে আলাদা’।

হায়া সোফিয়াকে জাদুঘর থেকে মসজিদে রূপান্তর করায় ব্যাপক জনসমর্থন দেখা গেলেও এ সিদ্ধান্তকে ভুল বলে আখ্যায়িত করেন ‘স্নো’, ‘ইস্তানবুল: মেমোরিজ অ্যান্ড সিটি’, ‘দ্য হোয়াইট ক্যাসেল’ এর মত বিখ্যাত উপন্যাসের লেখক।

ওরহান পামুক বলেন, ‘ধর্ম নিরপেক্ষতা প্রত্যেক তুর্কি নাগরিকের গর্ব। তুরস্কে শুধুমাত্র ১০ শতাংশ মানুষ এটিকে ধারণ করে না। এমনকি বর্তমান শাসক দলের ভোটাররাও নিজেদের ধর্ম নিরপেক্ষ হিসেবে দাবি করে গর্ববোধ করেন’।

এর আগে গত শুক্রবার (১০ জুলাই) তুরস্কের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালত রাজধানী ইস্তানবুলের ঐতিহ্যবাহী হায়া সোফিয়া জাদুঘরকে মসজিদ ঘোষণা করার সিদ্ধান্তের বৈধতা দেন। আদালতের আদেশের পরপরই প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান জাদুঘরটিকে মসজিদ বানানোর এক অধ্যাদেশে সই করেন এবং সিদ্ধান্তের পক্ষে বক্তব্য রাখেন। এরদোগানের বক্তব্যের পর হায়া সোফিয়ায় আজান দেওয়া হয়।

শুক্রবার হায়া সোফিয়াকে মসজিদের রূপান্তর করার ব্যাপারে এরদোগান বলেন, ‘হায়া সোফিয়াকে কিভাবে এবং কী হিসেবে ব্যাবহার করা হবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তুরস্কের আছে’। তিনি বলেন, ‘হায়া সোফিয়ায় প্রবেশে ফি বাতিল করা হবে এবং সব ধর্মের অনুসারীরা সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন। মসজিদে আগামী ২৪ জুলাই  থেকে নামাজ পড়া হবে’।

বাইজেন্টাইন সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ানের আদেশে ষষ্ঠ শতকে হায়া সোফিয়া নির্মিত হয়। বাইজেন্টাইন খ্রিস্টানদের প্রধান উপাসনালয় হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। ১৪৫৩ সালে উসমানীয় শাসনামলে হায়া সোফিয়াকে মসজিদে পরিণত করা হয়। ১৯৩৪ সালে আধুনিক তুরস্কের জাতির পিতা কামাল আতার্তুক মন্ত্রীসভায় এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে হায়া সোফিয়াকে জাদুঘর ঘোষণা করেন।

দীর্ঘদিন ধরেই হায়া সোফিয়াকে ফের মসজিদ বানানোর দাবি জানিয়ে আসছে তুরস্কের কট্টর ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো। তবে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধী দল এ ধরণের দাবির বিরোধিতা করে। শুক্রবার তুরস্কের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালত হায়া সোফিয়ার জাদুঘর মর্যাদা নাকচ করার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। তবে দেশটির সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তুরস্কের অভ্যন্তরীণ একটা স্থাপনার ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা একান্তই তুরস্কের নিজস্ব বিষয়।

ওরহান পামুক হায়া সোফিয়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর