ধান চাষে অনীহা কৃষকের
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:০৮
ঠাকুরগাঁও: টানা দুই বছর লোকসান হওয়ায় চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষে অনাগ্রহী ঠাকুরগাঁওয়ের চাষিরা। ফসলের কাঙ্ক্ষিত দাম পেতে এখন ভুট্টা, গম, মরিচ, আলু, মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন তারা। এছাড়া ঘন কুয়াশায় বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চারা লাগাতেও কিছুটা দেরি হয়েছে। যে কারণে গতবারের তুলনায় এবার বোরো ধান কম রোপণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, দেশের অন্যান্য জেলার মতো ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষিতে সমৃদ্ধ। এ জেলার শতকরা ৮০ শতাংশ মানুষই কৃষির উপর নির্ভর। এখানে বোরো ধানের আবাদও হয় ব্যাপক। যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও গ্রামের কৃষক হরিন্দর বর্মন বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন করতে খরচ হয় ১৬-১৭ হাজার টাকা। ধান উৎপাদন হয় ৩৫-৪০ মন। যার আনুমানিক মূল্য ১৫-১৬ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে লোকসান হয় ১-২ হাজার টাকা। যে কারণে ধানচাষের ইচ্ছা আর নেই।’
একই গ্রামের আরেক কৃষক রফিক বলেন, ‘প্রতি বছর ধানে লস হয়। এলাকার অনেকেই এবার ধানের পরিবর্তে ভুট্টা, গম, মরিচ, আলু চাষ করছে। প্রতিবছর অনেক জমিতে বোরো ধানের চাষ করি কিন্তু এবার শুধুমাত্র নিজের খাওয়ার জন্য ধানের আবাদ করবো। ’
সদর উপজেলার ফারাবাড়ী হাটের সার ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন জানান, প্রতি বছর এই সময় দোকানে ব্যাপক ভিড় থাকতো, কিন্তু এবার সেটা নেই। একদিকে চারা লাগাতে দেরি, অপরদিকে কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় চাষ কমিয়ে দিচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আবতাব হোসেন বলেন, ‘এবার জেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬২ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদন হবে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৭৭ মেট্রিক টন ধান। ’
কৃষকের মাঝে ধানচাষে অনীহার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কৃষক ফসলের কাঙ্ক্ষিত মূল্য পেতে ধানের পাশাপাশি ভুট্টা, গম, মরিচ, আলু, মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’ তবে এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কোনো ঘাটতি হবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।