সিলেট: সিলেটের বেসরকারি বিদ্যাপীঠ স্কলার্সহোমের শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে জানানো পাঁচটি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দেওয়া আরও ছয়টি সংস্কার প্রস্তাবও মেনে নিয়েছে স্কলার্সহোম কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় তিনজন শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এসব তথ্য জানান স্কলার্সহোমের শাহী ঈদগাহ শাখার অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীর আহমেদ কাদেরী (অব.)।
তিনি বলেন, স্কলার্সহোম পরিচালনাকারী হাফিজ মজুমদার ট্রাস্টের সভায় শিক্ষার্থীদের সব দাবি ও সংস্কার প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ভাইস প্রিন্সিপাল আশরাফ চৌধুরীসহ তিন শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী আজমান আহমেদ দানিয়ালের মৃত্যুর ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
এর আগে রোববার বিক্ষোভ করে পাঁচদফা দাবি ও ছয়টি সংস্কার প্রস্তাব জানায় শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানায় স্কলার্সহোম কর্তৃপক্ষ। এ সময় শিক্ষার্থী সায়েম হাসনাত আন্দোলনরত অন্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মাইকে বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাদের ৫টি দাবি ও ৬টি সংস্কার প্রস্তাব মেনে নেওয়ার কথা লিখিতভাবে জানিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি মেনে নিয়ে স্কলার্সহোমের ভাইস প্রিন্সিপাল আশরাফ হোসেনের পদত্যাগ নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রেণি শিক্ষক শামীম হোসেন ও শিক্ষিকা তয়্যিবা বেগমকে অপসারণ করা হয়েছে। এই আন্দোলনের জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা হবে না। ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সাথে খারাপ আচরণ করবে না—এমন প্রতিশ্রুতিও লিখিতভাবে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্কলার্সহোমের শাহী ঈদগাহ ক্যাম্পাসের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আজমান আহমেদ দানিয়াল (১৯)-এর মরদেহ নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হলেও এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজমানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই স্কলার্সহোম কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার সহপাঠী ও প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এমনকি অনেক সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও অভিযোগ করেন, স্কলার্সহোম কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে, পর্যাপ্ত ও দক্ষ শিক্ষক নেই এবং শিক্ষার্থী খারাপ করলে ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আজমানের দাফন সম্পন্ন হয়। আজমানের মা অভিযোগ করেন, প্রি-টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করায় তাকে অপমান করে স্কলার্সহোম কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান ও কলেজ থেকে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।