সাতক্ষীরা: ‘৯৪ হাজারের স্থানে আড়াই লাখ মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করা হয়েছে বলেই প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ সম্মান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ‘সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা হলে আজ তাদের সোনার খাটও উপহার দেওয়া যেত’— সাতক্ষীরার শ্যামনগর, কালীগঞ্জ ও দেবহাটা মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মাঠে অনুষ্ঠিত এ মিলনমেলায় সভাপতিত্ব করেন ৯নম্বর সেক্টরের সহ-অধিনায়ক ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন এম নুরুল হুদা। এতে পাঁচ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ডা. মো. শাহ জাহান। আরও বক্তব্য দেন ৯নং সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. আহসান উল্যাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল এমএসএকে আজাদ, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য ও খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ হিল সাফি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতক্ষীরা জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুল ইসলাম, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কালীগঞ্জ সার্কেল) মো. রাজীব এবং কালীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন উপজেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক আব্দুর রউফ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংবাদিক এসএম শহিদুল ইসলাম।
বক্তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় দলীয়করণ ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় প্রকৃত বীররা আজও প্রাপ্য মর্যাদা পান না। তারা দাবি করেন, চব্বিশের জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে এ পর্যন্ত ৫৪টি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হামলার শিকার হয়েছে। বক্তাদের মতে, সরকার এখন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্ত করতে কাজ করছে, যা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ ও মর্যাদা পুনঃস্থাপনে সহায়ক হবে।
মিলনমেলায় মুক্তিযোদ্ধারা স্মরণ করেন একাত্তরের অগ্নিঝরা দিনগুলোর কথা। শহিদ ও প্রয়াত সহযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। সমবেত কণ্ঠে বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশপ্রেম, ত্যাগ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।