বগুড়া: বগুড়ার কাহালুতে আমন ধান মাড়াই শুরু হয়েছে। ধান মাড়াই কাজে দিনভর ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। জমিতে পাকা ধান কেটে ৪ থেকে ৫ দিন রোদে শুকিয়ে বাড়ির খলিয়ানে ও ধান মাড়াইয়ের উপযুক্ত স্থানে মাড়াই মেশিন দিয়ে এসব ধান মাড়াই করছেন তারা।
কৃষকদের চোখে মুখে এখন ব্যস্ততার ছাপ। হেমন্তকালে উৎসবের আমেজে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে আমন ধান মাড়াইয়ের ধুম পড়ে যায়। ধানের মৌ মৌ গন্ধে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আপাতত শ্রমিক সংকট না হলেও এক বিঘা জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা, সেইসঙ্গে ধান মাড়াই করতে অতিরিক্ত ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। তবে আগাম জাতের রন্জিত ধানের ফলন সন্তোষজনক হলেও সুগন্ধি কাটারিভোগ ধানের ফলন কিছুটা কম হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন হাটে নতুন আমন ধান উঠেছে। ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বোরো মৌসুমের চেয়ে ধানের দাম কেজি প্রতি দুই টাকা কমিয়ে ৩৪ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। চলতি মৌসুমে ধানের ফলন ভালো হলেও বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় কৃষকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
কৃষক আব্দুর রহিম ও জিল্লুর রহমান জানান, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বর্তমান ধানের দামে কৃষকদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।
ধানের আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় এবং চলতি রবি শস্য চাষের ব্যয় মেটাতে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে, হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
রন্জিত ধান বিঘা প্রতি ১৬-১৮ মণ হলেও জমিতে সুগন্ধি কাটারিভোগ ধান গাছে পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় নানা পরিচর্যা করেও তেমন সুফল না পাওয়ায় ফলন বিপর্যয় হয়েছে। বিঘা প্রতি ১০-১২ মণ ধান হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার ৯ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ১৮ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৯৩৬ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল উফশী ও অবশিষ্ট জমিতে হাইব্রিড ধানের চাষ হয়েছে। রবি শস্য মৌসুমে স্বপ্ন ফলাতে বুকভরা আশা নিয়ে কৃষকরা আমন ধান কেটে ঘরে তুলছেন।
আমন ধান ঘরে তোলার পরেই রবি শস্য চাষে ঝুঁকে পড়ছেন কৃষকরা। ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষি অফিস।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, ‘আমন ধানের চারা রোপণের পর থেকে ধানের উৎপাাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উঠান বৈঠকসহ মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের আমরা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি। কিছু জমির ধান গাছে রোগ-বালাই দেখা দিলেও চলতি আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে।’