Saturday 15 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২২৭ বছরের পুরোনো খুলনার স্বল্প বাহিরদিয়া পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৫ মার্চ ২০২৫ ২১:৫৭

স্বল্প বাহিরদিয়া পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদ

খুলনা: খুলনা জেলার প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো স্বল্প বাহিরদিয়া পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদ। ১৭৯৮ সালে মসজিদটি স্থাপিত হয়। মসজিদটির বয়স ২২৭ বছর। দূর-দূরান্ত থেকে এ মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন মুসল্লিরা। নতুন নতুন মসজিদের পাশাপাশি প্রাচীন আমলের এ মসজিদটির ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে উপজেলা জুড়ে।

সরেজমিনে মসজিদের ইতিহাস জানতে স্বল্প বাহিরদিয়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় ৮৪ বছর বয়সের বৃদ্ধ শাহাদাত আলী জমাদ্দারের সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, আমার দাদা ইব্রাহিম আলী জমাদ্দার ১৭৯৮ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। আমি তৃতীয় প্রজন্ম। আমার বাবা ইসমাইল জমাদ্দার মুখে শুনেছি প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে মসজিদটির চালে গোলপাতা ও চারপাশে হুগলার বেড়া ছিল। মুসল্লিদের নামাজ নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের ভিতরে মাত্র দুই কাতার ছিল। প্রতি কাতারে ১০ থেকে ১২ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। যখন মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন রূপসা উপজেলায় দুইটি মসজিদ ছিল। তার মধ্যে স্বল্প বাহিরদিয়া পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদ একটি। তৎকালীন সময়ে অনেক দূর দুরান্ত থেকে মুসল্লিরা প্রতি ওক্তে নামাজ পড়ার জন্য ছুটে আসতেন। তখনকার সময়ে সচরাচর ইমাম পাওয়া যেত না। সে কারণে মসজিদে যাতে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় হয়। সেজন্য আমার দাদা এক বিঘা জমি লিখে দিয়ে দিয়েছিলেন ওই সময়ের ইমাম সাহেবের নামে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আমার দাদা ইবরাহিম আলী জমাদ্দার দোয়া মোনাজাতের আয়োজনের মাধ্যমে মসজিদটি উদ্বোধন করেন। দাদার শেষ বয়সে তিনি মসজিদ সংস্কার করে মাটির দেয়াল নির্মাণ করেন। উপরে ছিল গোলপাতার ছাউনি। মাটির মসজিদটিতে নামাজের জায়গা ছিল স্বল্প। এরপর আমার বাবা ইট পুড়িয়ে মসজিদ নির্মাণ করেন। ইটের গাঁথুনি ছিল কাদা মাটি দিয়ে। মসজিদের দুই পাশে দুইটি মিনার ও একটি গম্বুজ ছিল। সৌন্দর্যের জন্য দরজা-জানালার উপরে চুন-সুরকির ব্যবহার করা হয়েছিল। কয়েক বছর পর মসজিদে মুসল্লিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ফের সংস্কার করা হয়। তখন ইট-বালু-সিমেন্ট ব্যবহার করে একতালা বিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ করা হয়। আমার বাবা মসজিদের নামে ৬ শতক জমি লিখে দেন। নতুন নির্মিত মসজিদটিতে একটি গম্বুজ রয়েছে। ভিতরে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য টাইসের ব্যবহার করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মসজিদটিতে নামাজ আদায় করতে আসা টিটো জমাদ্দার সারাবাংলাকে বলেন, মসজিদটি অনেক পুরাতন। ঐতিহ্যবাহী মসজিদটিতে নামাজ আদায় করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। উপজেলা ব্যাপী মসজিদটির ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।

মসজিদের ইমাম শেখ মুজাম্মেল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, আমি এখানে অনেক বছর ধরে ইমাম হিসেবে আছি। মসজিদটি অনেক বড় ধরনের ঐতিহ্য ধারণ করে আছে। এখানে নামাজ পড়াতে পেরে আমি গর্বিত।

সারাবাংলা/এসআর

২২৭ বছরের পুরোনো মসজিদ খুলনা জামে মসজিদ সারাবাংলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর