চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে (এনআইডি) হয়রানি ও ঘুষ আদায় এবং পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেনের তথ্য পেয়ে এ অভিযান চালানো হয়। দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একজন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা যাচাইবাছাই করা হচ্ছে।
বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে নগরীর লাভ লেইনে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে দুদকের চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের চার সদস্যের একটি টিম এ অভিযান চালায়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এনআইডি সংশোধনের জন্য ছয়জন আবেদনকারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক টিম অভিযান চালিয়েছে। জেলা নির্বাচন অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসারের বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। সেই ছয়টি আবেদন সংক্রান্ত সব তথ্য ও নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন তারা। আবেদনকারীদের অভিযোগ ছিল, এসব আবেদন বছরেরও বেশিসময় ধরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু দুদক টিম অবশ্য ছয় আবেদনের সবগুলোই নিষ্পত্তি করার প্রমাণ পেয়েছেন।
এছাড়া এনআইডি সংশোধনে ঘুষ লেনদেন, দালালদের দৌরাত্ম্য এবং দুজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন দুদকের এ কর্মকর্তা।
এমরনা হোসেন বলেন, ‘এখানে এনআইডি সংশোধন করতে ঘুষ লেনদেনের একটা অভিযোগ আছে। একটা এনআইডি সংশোধন করতে এখানকার কর্মকর্তারা ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দালালদের মাধ্যমে নিয়ে থাকেন, এমন অভিযোগ ছিল। এখানে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার, উনাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। দুজন কর্মকর্তা এবং পুরো অফিসের সঙ্গে দালালদের একটা কানেকশনের একটা বিষয় ছিল। এগুলো আমরা যাচাইবাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’
‘এছাড়া সংশোধনের বিভিন্ন পর্যায়ে, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে হয়রানির অভিযোগ আছে, সেগুলো আমরা যাচাইবাছাই করবো। যারা অভিযোগ করেছেন, তাদের আবেদন এবং ডকুমেন্ট আমরা এখান থেকে সংগ্রহ করেছি।’
পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের তথ্য পাবার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেনের বিষয় এসেছে। এগুলোর মাধ্যমে লেনদেনের বিষয় এসেছে। নির্বাচন কর্মকর্তারা বলেছেন যে, এগুলো তাদের অ্যাকাউন্ট নয়। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে এগুলো কার অ্যাকাউন্ট সেটা এবং ব্যাংক স্টেটমেন্টগুলো নেব। ওই অ্যাকাউন্টের সাথে এখানকার কোনো কর্মকর্তার কানেকশন আছে কী না সেটা আমরা যাচাইবাছাই করে দেখবো।’
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে আবেদনগুলোর কথা বলা হচ্ছে, একটির বিষয়ে আমি বলতে পারি যে, উনার কাছে আরও ডকুমেন্ট চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু উনি একবছর ধরে সেটা দেননি। এরপর জেলা নির্বাচন অফিসার সেটা তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে পাঠিয়েছেন। এরপর সেটা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বাকি আবেদনগুলোর বিষয়ে আমার জানা নেই।’
পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিষয়ে কোনো তথ্য জানেন না বলে দাবি করেছেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা।