Monday 23 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চসিক মেয়র শাহাদাতের প্রথম বাজেট ২ হাজার কোটি টাকার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ জুন ২০২৫ ১৬:১১ | আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫ ১৭:০৪

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো : দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বাজেট ঘোষণা করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে ২ হাজার ১৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

একইসঙ্গে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১ হাজার ২২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেটও ঘোষণা করেন মেয়র।

সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাজেট ঘোষণা করেন সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী পালিয়ে যান। এরপর গত বছরের নভেম্বরে আদালতের আদেশে মেয়রের দায়িত্ব নেন বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেন, যিনি ২০২১ সালে চসিক নির্বাচনে রেজাউলের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাজেট ঘোষণা করেন সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন। ছবি: সারাবাংলা

প্রথম বাজেটে মেয়র শাহাদাত আগামী অর্থবছরের জন্য চারটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এগুলো হচ্ছে- সিটি করপোরেশনে চলমান নিয়োগ কার্যক্রম সম্পাদন, দক্ষ জনবল গড়ার লক্ষ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, বর্তমান কাজের পরিধি ও ভবিষ্যৎ চাহিদা বিবেচনায় নতুন জনবল সাংগঠনিক কাঠামো প্রণয়ন করে অনুমোদনের ব্যবস্থা করা এবং বিভিন্ন সেবা কার্যক্রমসহ সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মেয়র শাহাদাত বাজেট বাস্তবায়নে অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে একদিকে সরকারি অনুদান প্রত্যাশা করেছেন, আবার নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের ওপর জোর দিয়েছেন। মোট বাজেটের অর্ধেকের সমপরিমাণ ১ হাজার ৪৫ কোটি ২১ লাখ টাকা নিজস্ব উৎস থেকে আয় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাকি অর্ধেক ১ হাজার ৯২ কোটি ৫ লাখ টাকা সরকারি অনুদান প্রত্যাশা করা হয়েছে ।

বাজেটে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে বেতন-ভাতা খাতে ব্যয় ৩৩৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। উন্নয়ন খাতে ব্যয় ১ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।

দেনা পরিশোধের জন্য ১৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে জানিয়ে বাজেট বক্তব্যে মেয়র শাহাদাত বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের সময় মোট ৫৯৬ কোটি টাকা দেনা ছিল। গত ৮ মাসে ধারাবাহিকভাবে পরিশোধের পর এখন করপোরেশনের দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪০০ কোটি টাকা।’

বাজেটে চট্টগ্রাম মহানগরীর বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তবে সে তুলনায় আরেকটি সমস্যা মশা নিধনে বরাদ্দ একেবারে কম ধরা হয়েছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে ৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সর্বশেষ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৩ কোটি টাকা। আর মশা নিধনে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৯ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৮ কোটি টাকা।

জলাবদ্ধতা নিরসনে এ পর্যন্ত চসিকের কার্যক্রম তুলে ধরে মেয়র বলেন, ‘১৯টি খাল থেকে ১০ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪১ লাখ ঘনফুট মাটি ও আবর্জনা অপসারণ করা হয়েছে। নালা-নর্দমা পরিষ্কারে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। বর্ষায় আরও ২০০টি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে নৌবাহিনীকে দিয়ে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে আগ্রাবাদ বক্স কালভার্ট পরিষ্কার করা হচ্ছে বলে জানান মেয়র। তিনি বলেন, ‘চলতি মৌসুমে অতিবৃষ্টিতেও জিইসি, বহদ্দারহাট, চকবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো তলিয়ে যায়নি।’

মশকনিধনে আধুনিক পদ্ধতি ও আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড ব্যবহার শুরু হয়েছে বলেও জানান মেয়র।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজেট বাস্তবায়নের হার ৬১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এর পরিমাণ ১ হাজার ২২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আর মূল বাজেট ছিল ১ হাজার ৯৮১ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

বাজেট বক্তব্যের শুরুতে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অবৈধ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার দোসরদের পতনের পর মাননীয় আদালত কর্তৃক সুবিচারপ্রাপ্ত হয়ে মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করছি। তাই নগরবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর প্রত্যাশা এবং মহানগরীকে ক্লিন-গ্রিন, হেলদি ও সেফ সিটি, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ও অর্থনৈতিকভাবে বাসযোগ্য নান্দনিক পর্যটন নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

সারাবাংলা/আরডি/এমপি

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ডা. শাহাদাত হোসেন বাজেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর