চট্টগ্রাম ব্যুরো: নির্বাচনের আগে শাপলা হত্যাকাণ্ড ও জুলাই গণহত্যার বিচার শেষ করার দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী। অন্যথায় ছাত্র-জনতা ড. ইউনূসকে ক্ষমা করবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘ইসলামবিদ্বেষী, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী চেতনা সংরক্ষণ, রাষ্ট্র-সংস্কারের গণ-আকাঙ্ক্ষা সুসংহতকরণ এবং জাতীয় ঐকমত্য গঠনকল্পে অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে। সেইসাথে নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বরে আলেম-ওলামা হত্যাকাণ্ড ও জুলাই গণহত্যাসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার সম্পন্ন করতে হবে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, ‘এর অন্যথা হলে ড. ইউনূস সরকারকে ছাত্র-জনতা ক্ষমা করবে না। অন্তর্বর্তী সরকারকে বুঝতে হবে, এখনো বিছানায় কাঁতরাচ্ছে পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণ করা হাজার হাজার আহত শাপলা ও জুলাই-যোদ্ধা। অগণিত শহীদের রক্তের ফসল জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হলে গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার কাছে ড. ইউনূসের সরকারকে জবাব দিতে হবে।’
‘শাপলা চত্বরের রক্তাক্ত ইতিহাসের পথ বেয়ে ‘জুলাই বিপ্লব’ আমাদের জাতীয় জীবনে এসেছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং জুলাইকে কখনো ভুলতে দেওয়া যাবে না। জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে গাদ্দারি করে জনসমর্থন ধরে রাখা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘যারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের গোলামি করবে, দেশের স্বার্থ নষ্ট করবে, মাফিয়াতন্ত্র চালু রাখবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে জুলাইর গণপ্রতিরোধের চেতনা বারবার ফিরে আসবে। দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ছাত্র-জনতা আবারও রাজপথে নামতে দেরি করবে না। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, ফেরাউন পারেনি, হাসিনাও পারেনি। ভবিষ্যতের ক্ষমতাসীনদের এই ঐতিহাসিক শিক্ষা নিতে হবে।’
বিবৃতিতে ইসলামাবাদী আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার জন্ম দেওয়া বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামো বিলুপ্ত করে পুনর্নির্মাণের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান সেই নতুন সূচনা। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে দেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক কাজগুলো আরও বেগবান করতে হবে। সংস্কারকাজে অবশ্যই ইসলামবিরোধী অপশক্তির ফাঁদ ও কুমন্ত্রণা এড়িয়ে যেতে হবে। সংবিধানের মূলনীতি থেকে বহুত্ববাদ বাদ দিতে হবে এবং কুরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন বাতিল করতে হবে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ধর্ম, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের আলোকে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে।’
