চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে টানা অতি ভারী বর্ষণের মধ্যে নালায় পড়ে আবারও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে নগরীর হালিশহর থানার আনন্দিপুর এলাকায় একটি নালা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মৃত শিশুটির নাম হুমায়রা আক্তার। বয়স তিন থেকে সাড়ে তিন বছর। তার বাবা আব্দুর রহমান ক্যাবল সংযোগ প্রতিষ্ঠানের লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন। তাদের বাসা আনন্দিপুর মসজিদের পাশে একটি কলোনিতে।
ঘটনাস্থলে থাকা হালিশহর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমন দত্ত সারাবাংলাকে বলেন, ‘একটি শিশু নালায় পড়ে নিখোঁজের তথ্য পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। ফায়ার সার্ভিসের টিমও আসে। স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, নালার পাড়ে বৃষ্টির মধ্যে শিশু-কিশোরদের একটি দল ফুটবল খেলছিল। খেলার মধ্যে বল ড্রেনে পড়ে যায়। বৃষ্টির কারণে ড্রেনে পানির স্রোত ছিল। সেই স্রোতে ভেসে মেয়েটি পাশের আরেকটি ড্রেনে গিয়ে আটকে যায়। সেখান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।’
মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। রাতভর অঝোর ধারায় বর্ষণের পর বুধবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। তবে বেলা গড়াতেই একটানা মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।
নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূঁইয়া সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬০ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যাকে অতি ভারী বর্ষণ বলছে আবহাওয়া অফিস। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এ বৃষ্টিপাতের মাত্রা কমে আরও অন্তঃত দুইদিন থাকবে বলে তিনি জানান।
এর আগে, গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় বৃষ্টির মধ্যে নগরীর চকবাজারের কাপাসগোলায় হিজড়া খাল সংলগ্ন নালায় যাত্রীবাহী একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পড়ে যায়। অটোরিকশায় মায়ের কোলে ছয় মাস বয়সী শিশুসহ তিন যাত্রী ছিলেন। বাকিরা উদ্ধার হলেও শিশুটি তলিয়ে যায়। প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর সেহেরিশ নামে ছয় মাস বয়সী মেয়েটির লাশ মেলে ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক পাঁচ কিলোমিটার দূরে চাক্তাই খালে।
এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে সিটি করপোরেশন নগরীর সব খাল-নালার পাড়ে বাঁশের বেস্টনী দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ছয় বছরে নগরে খাল-নালায় পড়ে অন্ততঃ ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২ জন, ২০২১ সালে ৫, ২০২৩ সালে ৩, ২০২৪ সালে ৩ জন এবং চলতি বছর এ পর্যন্ত ২ জন।