Friday 22 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওঠানামার মধ্যে ব্রয়লার-সোনালি মুরগি আর ডিম, পেঁয়াজের ঝাঁজ কমছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ আগস্ট ২০২৫ ০৯:০০ | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৫ ১২:২২

কোলাজ ছবি: সারাবাংলা।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: এক সপ্তাহের ব্যবধানে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে সোনালি মুরগি, ডিম, চিনি ও ডালের দাম বেড়েছে। কমেছে পেঁয়াজ ও ব্রয়লার মুরগির দাম। আর সবজির বাজারে আলু ও মিষ্টিকুমড়ো ছাড়া অন্য কোনো পণ্যে সুখবর নেই। সব ধরনের মাছ, চাল এবং অধিকাংশ মুদিপণ্যের দাম আগের মতোই আছে।

ছবি: সারাবাংলা

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে নগরীর আসকার দিঘীর পাড় কাঁচাবাজার ও মোমিন রোডের বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে দর যাচাই করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্রয়লার মুরগী। ছবি: সারাবাংলা

বাজারে মুরগির মধ্যে গত সপ্তাহে সোনালি মুরগির দাম ছিল কেজিপ্রতি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে অন্তত ২০ টাকা বেড়ে বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়। এখন দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা, পাকিস্তানি কক ৩৫০ টাকা এবং জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। অন্যান্য মাংসের মধ্যে গরুর মাংস ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকা, খাসি ও পাঁঠা ছাগলের মাংস ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের দামেই আছে।

বিজ্ঞাপন

খাশি ও গরুর মাংসের দাম নাগালের বাইরে। ছবি: সারাবাংলা

বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম ডজনপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকা ও হাঁসের ডিম ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতিকেজি খোলা সাদা চিনি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, প্যাকেট চিনি ১২০ টাকা, লালচিনি ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বিক্রেতারা জানালেন, দাম বেড়েছে অন্তত কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। এছাড়া মোটা দানার মসুর ডাল ১০০ টাকা, সরু মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা, নেপালি মসুর ১৪০ টাকা, ছোট মুগডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৮০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা মসুর ডাল ৫ টাকা, চিকন মসুর ডালের দাম ২০ টাকা বেড়েছে।

ডাল। ছবি: শ্যামল নন্দী/ সারাবাংলা

অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম খুচরায় স্থিতিশীল আছে। এর মধ্যে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ৯০ টাকা, কাজু বাদাম ১ হাজার ৭০০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২ হাজার ৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম ১ হাজার ২২০ টাকা, কিশমিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০ টাকা, কালো গোলমরিচ ১ হাজার ৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

মুদি দোকানের পণ্যগুলোর দামও গত সপ্তাহের মতোই আছে। ছবি: শ্যামল নন্দী/ সারাবাংলা

পেঁয়াজের দাম এক সপ্তাহ আগে সেঞ্চুরির ঘরে পৌঁছালেও এখন কমে ৭০-৮০ টাকার মধ্যে এসেছে। নগরীর খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে ভারত থেকে সদ্য আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে দেশি পেঁয়াজ ছোট ৬০ থেকে ৬২ টাকা এবং বড়গুলো ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরায় ছোট পেঁয়াজ ৭০ টাকা ও বড় পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির বাজারে স্বস্ত্বি দিচ্ছে শুধু আলু এবং মিষ্টিকুমড়ো। প্রতিকেজি আলু মানভেদে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আর মিষ্টিকুমড়োর দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে স্থির হয়ে আছে।

বাজারে বেশির ভাগ সবজির দামই গত সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে। ছবি: সারাবাংলা

অন্যান্য সবজির দাম এখনো চড়া। কাঁকরোল, ঝিঙা, পটল, ঢ্যাঁড়স, শসা, করলা প্রতিকেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বরবটি ১২০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কচুরমুখী, লাউ, মূলা কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। গাজর ১৬০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা, শালগম ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা প্রতিকেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা আর শাকের মধ্যে কচুশাক ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা ও লালশাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছের দাম। ছবি: সারাবাংলা

বাজারে মাছের সরবরাহ প্রচুর, কিন্তু দাম কমেনি। বাজারে লইট্যা ২০০ থেকে ২২০ টাকা, ভ্রাম্যমাণ দোকানে ১৮০ টাকা, ফাইস্যা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, পোয়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, শাপলা পাতা মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, কোরাল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, রূপচাঁদা ৩৫০ থেকে ৭০০ টাকা, আইড় ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) আকারভেদে ৬৫০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে এক-দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২০০০ থেকে ২৪০০ টাকা, ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০ টাকা, এক কেজির কিছু কম ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০ টাকা এবং জাটকা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। দুই-আড়াই কেজি ওজনের বড় ইলিশ মাছ প্রতিকেজি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজার। ছবি: সারাবাংলা

এছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০, পুঁটি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৪৫০, কৈ ২০০ থেকে ২২০ এবং তেলাপিয়া ও পাঙাস মিলছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকায়।

মাছের বাজার। ছবি: সারাবাংলা

চালের দর আগের মতোই আছে। ‍খুচরায় সরু চালের মধ্যে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর, রসিদ- এসব ব্র্যান্ডের মিনিটেক চাল প্রতিকেজি ৮০ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের মিনিকেট আতপ মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। স্বর্ণা ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের মাঝারি মানের চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ।ছবি: সারাবাংলা

সারাবাংলা/আরডি/এমপি

বাজার বাজারদর সাপ্তাহিক বাজার দর