Sunday 07 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাটহাজারী থমথমে, আহত শতাধিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:০০ | আপডেট: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:০২

কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আহলে সুন্নতপন্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে শতাধিক আহত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আহলে সুন্নতপন্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে শতাধিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। এদিকে মধ্যরাতে সংঘর্ষে জড়িতরা সড়ক ছেড়ে গেলেও হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ডসহ পুরো এলাকা জুড়ে এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত সেখানে উপজেলা প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে। চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক দুটিতে যানবাহন চলাচল কম বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের মূল কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত আলোচিত আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী মাদরাসা) মাদরাসার সামনে সংঘর্ষ শুরু হয়। ক্রমে সেটা আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

বিজ্ঞাপন

সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে কওমি শিক্ষার্থী ও আহলে সুন্নতপন্থীরা বিক্ষোভ করতে থাকে। হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ডে বাসসহ একাধিক যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এ অবস্থায় শনিবার রাত ১০টা থেকে রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, মাদরাসা শিক্ষার্থী ও সুন্নি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে রাত ১২টা পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি মানুষকে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। তারা প্রথমে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। সেখান থেকে গুরুতর আহত তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে ভর্তি করা হয়।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গির আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আহত তিনজনের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। অন্যান্যরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।’

পুলিশ জানায়, রাত ১টার দিকে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে যায়। প্রথমে কিছুক্ষণ তারা মাদরাসা গেটের সামনে অবস্থান নিলেও পরে ভেতরে চলে যায়। এসময় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বারবার মাইকে তাদের ভেতরে যাবার অনুরোধ করছিল।

মাদরাসা ছাত্ররা চলে যাবার পর সুন্নতপন্থীরাও আস্তে আস্তে সড়ক ছেড়ে যান।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী তারেক আজিজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাত ১টার পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন আছে।’

পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে হাটহাজারী মাদরাসার সামনে এক যুবক আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। এ নিয়ে ওই মাদরাসাসহ কওমি ঘরানার শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তখন ওই যুবক ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করে ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দেন।

উত্তেজনার প্রেক্ষিতে শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানা পুলিশ আরিয়ান ইব্রাহীম (২০) নামে ওই যুবককে আটক করে। সন্ধ্যা ফটিকছড়ি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শফিকিয়া দরবার শরীফ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। তার বাড়ি ওই এলাকায়।

কিন্তু ততক্ষণে হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বের হয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করেন। আহলে সুন্নতপন্থীরাও পালটা বিক্ষোভ শুরু করে ওই এলাকায়। এতে উভয় পক্ষে ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন।

সারাবাংলা/আরডি/এমপি

কওমি মাদরাসা সংঘর্ষ হাটহাজারী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর