Saturday 22 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের সব প্রবেশমুখে অবরোধের ডাক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:৫৬ | আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৬

বন্দরের সব প্রবেশমুখে অবরোধের ডাক দিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বুধবার (২৬ নভেম্বর) বন্দরের সব প্রবেশমুখে অবরোধের ডাক দিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)।

শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে স্কপের শ্রমিক কনভেনশন থেকে বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ‘জুলাই বিপ্লব স্মৃতি হলে’ দিনব্যাপী এ কনভেশনে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের জাতীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, গত ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৩৩ বছরের চুক্তি করেছে সরকার। এই মেয়াদ আরও ১৫ বছর বাড়ানোর সুযোগ আছে চুক্তিতে। একইদিন কেরাণীগঞ্জের পানগাঁও নৌ টার্মিনাল ২২ বছর মেয়াদে পরিচালনার জন্য সুইজারল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এছাড়া বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালও (এনসিটি) বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত আছে সরকারের।

বিজ্ঞাপন

সরকারের বন্দর নিয়ে কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ডাকা কনভেনশনে কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, ‘হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতিরা স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) বিষয় নিয়ে আর অগ্রসর হওয়া যাবে না। তারা (সরকার) কিন্তু হাইকোর্টের কথাও মানছে না। আমরা শুনেছি, আগামী ২৫, ২৬, ২৭ নভেম্বর ঢাকায় বৈঠক ডাকা হয়েছে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল নিয়ে ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চুক্তি করার জন্য। ২৬ তারিখ ভেটিং করবে, ২৭ তারিখ চুক্তি করবে- এরকম কথা শোনা যাচ্ছে।’

‘আমরা চট্টগ্রামের নেতারা বসেছিলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী ২৬ তারিখ (নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের এন্ট্রি পয়েন্ট যেগুলো আছে- আগ্রাবাদ, বড়পোল এবং মাইলের মাথা, এ তিনটি জায়গায় সর্বাত্মক অবরোধ হবে। আমি সমস্ত শ্রমিক-কর্মচারী ভাইদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার এ চক্রান্ত প্রতিহত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এছাড়া বন্দর রক্ষা ও শ্রমিক অধিকার আদায়ে স্কপের ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে থেকে জেলায়-জেলায় বিক্ষোভের কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে।

কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিরাষ্ট্রীয়করণ, পাটকল ইজারা দেওয়া, বিক্রি করে দেওয়া, সরকারি কলকারখানা বন্ধ করে দেওয়া, শ্রমিকদের অধিকারের বিভিন্ন দাবিদাওয়া- এগুলো সবকিছু নিয়ে আমাদের একটা জাতীয় ইশতেহারের মতো করতে হবে। আর চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে এই আন্দোলনে ব্যবসায়ীদেরও এগিয়ে আসতে হবে। বন্দর রক্ষা করার দায়িত্ব ব্যবসায়ীদেরও আছে। যখন রাস্তায় আন্দোলনের প্রশ্ন আসে তখন শ্রমিকদের দায়িত্ব আর যখন আন্দোলন শেষ হয়ে যাবে তখন ব্যবসা করা ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব- এটা হতে পারে না।’

‘আমি আহ্বান জানাই, ২৬ তারিখের অবরোধ কমর্সূচির পর আসেন আমরা একবার সবাই মিলে ঢাকায় বসি। সেখানে ব্যবসায়ীদেরও আসতে হবে। আমাদের লড়াই জারি রাখতে হবে। সকল শ্রমিক সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক ছাতার নিচে আসতে হবে। স্কপ যে উদ্যোগটা নিয়েছে আমি সাধুবাদ জানাই। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সকল ইস্যুতে সবাইকে একমত থাকতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহারের সভাপতিত্বে কনভেনশনে আরও বক্তব্য রাখেন স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি আব্দুল কাদের হাওলাদার, জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি তপন দত্ত, স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ এ এম ফয়েজ হোসেন এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু।

সারাবাংলা/আরডি/এমপি
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর