ঈদের ছুটিতেও স্কুলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ
১১ আগস্ট ২০১৯ ১৭:১২
ঢাকা : কোরবানির ঈদের বন্ধ থাকলেও দেশের সকল স্কুল ও কলেজে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ডেঙ্গু প্রতিরোধে দেওয়া এ আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬ থেকে ১০ সদস্যের এক বা একাধিক টিম গঠন করতে হবে। গঠিত টিমের সদস্যদের ঈদের বন্ধে প্রতি ৪৮ ঘণ্টা পরপর পরিচ্ছন্ন অভিযান চালাতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রনালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান। প্রসঙ্গত, ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টানা ১২দিন ছুটি পেয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন এ প্রসঙ্গে সারাবাংলা’কে জানান, ঈদের ছুটিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একেবারে বন্ধ থাকতে পারবে না। নির্দেশনা অনুযায়ী, ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রমের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) একটি সেল গঠন করা হয়েছে। এতে একজন উপপরিচালক সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। পরিচালক (প্রশিক্ষণ) অধ্যাপক প্রবীর কুমার ভট্টাচার্যকে ফোকাল পয়েন্ট নিযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একদিন পরপর প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ঝোপঝাড়, আশপাশ এলাকা এবং যেসব জায়গায় পানি জমতে পারে সেসব এলাকা চিহ্নিত করে পরিষ্কার করতে হবে। ঈদের ছুটিতে প্রতিষ্ঠান একেবারে বন্ধ থাকতে পারবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য সর্বাত্মক চেষ্ট চালানো হচ্ছে। ঈদ উল আজহা উপলক্ষে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১২ দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে কর্মচারী, স্কাউটস, বিএনসিসি ও শিক্ষার্থী সমন্বয়ে ছয় থেকে ১০ জনের একটি বা একাধিক টিম গঠন করতে হবে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সবার অনুপস্থিতিতে খেলার মাঠ, ফুলের টব, পানি জমে এমন যে কোনো পাত্রে এডিস মশার প্রজনন প্রক্রিয়া আরও বেগবান হতে পারে। এতে সরকার গৃহীত ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত এবং ডেঙ্গুর আরও বিস্তার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ছুটির মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের ছয়টি দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এই ছয় দায়িত্বগুলো হলো, টিম গঠন করে বিদ্যালয় ও আশপাশে যেসব জায়গায় স্বচ্ছ পানি জমার সম্ভাবনা থাকে সেসব স্থান চিহ্নিত করে প্রতিদিন একবার পরিষ্কার করতে হবে, বাথরুমের বদনা ও বালতির পানি শূন্য করে উল্টিয়ে রাখতে হবে, হাইকমোডে হারপিক ঢেলে ঢাকনা বন্ধ করে রাখতে হবে, বাথরুমের প্যানে হারপিক ঢেলে বস্তা বা অন্য কিছু দিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে হবে, কোন স্থানে জমাটবদ্ধ পানি থাকলে লার্বিসাইড স্প্রে করতে হবে অথবা জমাট পানি নিষ্কাশন করতে হবে, আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট ছাড়া (ঈদের দিন ও পরের দিন) প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষ খোলা রেখে রোস্টার ডিউটির মাধ্যমে টিমের শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম টিমে নিয়োজিত শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কেউ ঈদের ছুটিতে গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।