সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প উঠছে একনেকে
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২২:২৮
।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে টানা তৃতীয় বারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। তাই যেকোনো মূল্যেই হোক উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করতে হবে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উঠছে ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে ১২ হাজার ৪৬০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের ১৭তম সভা। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি একনেকের জন্য নোটিশ জারি করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সারাবাংলাকে বলেন, আমরা উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে চাই। বর্তমানে যে গতিতে উন্নয়ন চলছে এটা ধরে রাখার জন্য সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এজন্য সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা অত্যন্ত জরুরি। সুসংহত ও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ধারাবাহিকতা খুবই প্রয়োজন ছিল। না হলে উন্নয়ন সম্যক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক।
সূত্র জানায়, একনেক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের জনবলের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা পুন:নির্ধারণ এবং প্রকল্পের সংযুক্ত জনবলের বিশেষ ভাতা প্রদানের বিষয়ে একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হলেও সেজন্য আলাদা কোন ব্যয় বাড়ছে না। মোট প্রকল্প খরচ ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকাই থাকছে। এছাড়া প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হচ্ছে এর অনুমোদন বাতিল করার জন্য। কেননা ২ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা খরচের এ প্রকল্পটি বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ফ্ল্যাট তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে। ফলে এ দুটি প্রকল্পের খরচ মোট প্রকল্প খরচের সঙ্গে যোগ করা হয়নি।
একনেকে উঠতে যাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে
বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন স্থাপন প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৩ হাজার ৩২২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের নিমিত্ত ভূমি অধিগ্রহণ, খরচ হবে ৮৪৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। বরিশাল পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর পায়রা সেতু (লেবুখালী সেতু) নির্মাণ, খরচ ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের ২ লেন অংশে (মহিপাল হতে চৌমুহনী পূর্ব বাজার পর্যন্ত)-৪ লেনে উন্নীতকরণ, খরচ হবে ৭৪৭ কোটি টাকা। মোংলা বন্দরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি/সরঞ্জাম সংগ্রহ,খরচ হবে ৪৩৫ কোটি টাকা। ঢাকা শহরে ডাক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, খরচ ৩৭৬ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন, খরচ হবে ১ হাজার ৬২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কুড়িগ্রামের চিলমারী ও উলিপুর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীরে ভাঙনরোধ, খরচ ৩০২ কোটি টাকা। সোনাগাজী ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল সংযোগ সড়কে ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ, খরচ ৬৬২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ধান,গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ, খরচ ২৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি, খরচ ১ হাজার ৫৩৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং গোপালগঞ্জ এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের তৃতীয় শাখা কারখানা স্থাপন প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৭৯৯ কোটি টাকা।
সারাবাংলা/জেজে/এমএইচ