সোমবার বসছে দ্বাদশ স্প্যান, দুই কিলোমিটার রূপ পাচ্ছে পদ্মাসেতু
৫ মে ২০১৯ ২০:২৫
ঢাকা: ছয় কিলোমিটারের পদ্মাসেতুর দুই কিলোমিটার দেখা যাবে সোমবার (৬ মে)। সেতুর ১২তম স্প্যান বসানো শেষে পদ্মাসেতু দুই কিলোমিটারে রূপ নেবে। এদিন দুপুরের মধ্যে নতুন স্প্যান বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)।
চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সোমবার সকালে মাত্র এক ঘণ্টায় মাওয়া থেকে স্প্যান নিয়ে নদীর মাঝামাঝি পিলারের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর দুপুরের মধ্যেই স্প্যান বসিয়ে দিতে পারবেন তারা। ১২তম স্প্যান বসানোর পাশাপাশি চলতি মাসে পদ্মাসেতুতে আরও দুটি স্প্যান বসানোর কথা রয়েছে। এর মাধ্যমে সেতুর অগ্রগতি ৮০ শতাংশে পৌঁছবে বলে মনে করছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)।
পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, চলতি মাস থেকে স্প্যান বসানো বেড়ে যাবে। মাসে ৩/৪টি তারপরে প্রতি সপ্তাহে একটি করে স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এমবিইসি সূত্র জানায়, গত ৩ মে বসতে পদ্মানদীর ঠিক মাঝনদীতে ২০ এবং ২১ নম্বর পিলারে স্প্যান ওঠানোর কথা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। দ্বাদশ স্প্যান বসানোর চারদিনের মাথায় আগামী ১০ মে ১৪ এবং ১৫ নম্বর পিলারে তেরতম স্প্যান ওঠানো হবে। আর ৩০ মে ২৮ ও ২৯ নম্বর পিলারে অস্থায়ীভাবে আরেকটি স্প্যান রাখা হবে।
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল একাদশ স্প্যান বসানো হয়। স্প্যানটি বসানোর পর পদ্মাসেতু দৃশ্যমান হয়েছিল ১৬৫০ মিটার। চলতি মাসে তিনটিসহ পদ্মাসেতুতে ১৪টি স্প্যান বসানোর পর বাকি থাকবে ২৭টি স্প্যান। এদিকে পদ্মাসেতুতে ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ২৫০টির বেশি পাইল বসানো শেষ হয়েছে।
পদ্মাসেতুর মোট খুঁটি সংখ্যা ৪২। এর মধ্যে ২৪টি খুঁটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে বাকি আরও ১০টি খুঁটির নির্মাণ শেষ হবে।
সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং (এমবিইসি) সূত্র জানায়, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার লম্বা পদ্মাসেতু গড়তে তাদের সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ করতে হয়েছে পদ্মার তলদেশে। নদীর তলদেশে মাটির গঠনগত বৈচিত্র্যের কারণে ১১ নম্বর খুঁটির নকশায় পরিবর্তন আনা হয়। শুরুর দিকে মাওয়া অংশে কাজ বাদ দিয়ে জাজিরা অংশে চলে যেতে হয়। বছরখানেক পর ফের নতুন পিয়ার ডিজাইন হাতে পাওয়ার পর মাওয়া অংশে কাজ শুরু হয়।
পদ্মাসেতুর মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, সেখানেই প্রস্তুত করা ২১টি স্প্যানের মধ্যে ১১টি স্প্যান বসানো শেষ হয়েছে। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত থেকে পদ্মাসেতুর রোড স্ল্যাব বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে ছয় লেন প্রশস্ত পাঁচটি রোড স্ল্যাব বসে গেছে। ভেতরে রেলওয়ে স্লাব বসানোর কাজ চলছে। পদ্মাসেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসবে। প্রস্তুত করে রাখা আছে প্রায় ৩৫০ রোডওয়ে স্ল্যাব। এছাড়া ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ২৯২টি স্ল্যাব বসেছে স্প্যানগুলোতে। আগামী বছরের শেষদিকে পুরোপুরি কাজ শেষ হবে স্বপ্নের পদ্মাসেতুর।
সারাবাংলা/এসএ/একে