Monday 09 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ব্র্যাক বাংলাদেশের নতুন নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্


৩১ জুলাই ২০১৯ ১৩:১১
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বের অন্যতম বড় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক-এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আসিফ সালেহ্। ১লা আগস্ট ২০১৯ তারিখ থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে। সরকারি, বেসরকারি এবং উন্নয়ন- এই তিন সেক্টরেই শীর্ষ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞ আসিফ সালেহ্। ব্র্যাক এবং ব্র্যাকের বাইরে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য সফল ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন, টেকসই পরিচালন পদ্ধতি ও আর্থিক ব্যবস্থাপন গড়ে তোলা এবং কার্যকর অংশীদারিত্ব সৃষ্ঠির ক্ষেত্রে তিনি দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন।

ব্র্যাক-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপার্সন স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘ব্র্যাকের পরিচালনা পর্ষদ আস্থাবান যে আগামী দিনগুলোতে ব্র্যাকের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আসিফ সালেহ্-এর নেতৃত্ব বিশেষ ভূমিকা রাখবে। আমরা আশা রাখি, নতুন উদ্ভাবন ও তৃনমূলের প্রত্যাশার সম্মিলন ঘটিয়ে তিনি ব্র্যাককে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। একটি বৈষম্যহীন পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে ও বাংলাদেশের উন্নয়ন চাহিদা পূরণে তিনি ব্র্যাকের ভূমিকা অক্ষুণ্ণ রাখবেন।’

বিজ্ঞাপন

আসিফ সালেহ্ ব্র্যাকের কৌশলগত দিকনির্দেশনা প্রদানের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ২০০১ সালে ব্র্যাকে যোগদানের পর থেকে তিনি অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ, ইনফরমেশন টেকনোলজি, কমিউনিকেশন এবং সোশ্যাল ইনোভেশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন এবং প্রয়োজনীয় নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। নগরাঞ্চলের দারিদ্র্য নিরসন, যুবসমাজের দক্ষতা বৃদ্ধি, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং অভিবাসন ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্র্যাক যাতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে আসিফ সালেহ্ অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। এমপাওয়ারমেন্ট ক্লাস্টারের ঊর্ধ্বতন পরিচালক হিসেবে তিনি ব্র্যাকের একাধিক নতুন উদ্যোগ যেমন নগর উন্নয়ন, মানবাধিকার ও আইন সহায়তা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং অভিবাসন কর্মসূচির নেতৃত্ব দিয়েছেন।

নতুন দায়িত্ব সম্পর্কে আসিফ সালেহ্ বলেন, ‘ব্র্যাকে গত ৮ বছর আমার কাজের অভিজ্ঞতা এককথায় অনন্য। তৃণমূল পর্যায়ে আমরা যাদের সাথে কাজ করি, তাদের দৃঢ়তা ও বাস্তব বোধ আমাকে নিরন্তর অনুপ্রেরণা যোগায়। এদেশের মানুষ জানে কি করে শত প্রতিকূলতার মুখেও ঘুরে দাঁড়াতে হয়। একটি বৈষম্যহীন পৃথিবী বিনির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করে ব্র্যাক। এই রূপকল্পকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পাওয়া আমার জন্য এক বিরাট সম্মান। এত বছর যেভাবে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সহযোগী হিসেবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে গেছি, ভবিষ্যতেও তা অব্যাবহত থাকবে। এবং অতীতের মতোই আমরা আমাদের অংশীদার ও সুহৃদদের সাথে নিয়েই কাজ করে যাবো।’

ব্র্যাকে যোগদানের আগে আসিফ সালেহ্ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচির পলিসি স্পেশালিস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি দেশব্যাপী সাশ্রয়ী ব্রডব্যান্ড সংযোগের প্রসারে নীতিমালা প্রণয়নের কাজে নেতৃত্ব দেন এবং সরকারের মোবাইল গভর্নেন্স বিষয়ক কৌশলপত্রের পরিকল্পনা করেন। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেবাকেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে গঠিত ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার টিম-এর অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে এই অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করেই তিনি উন্নয়ন সেক্টরে প্রযুক্তি ও সাশ্রয়ী উদ্ভাবন ভিত্তিক কর্মকাণ্ডের প্রসারে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাক্স-এ তিনি দীর্ঘ ১২ বছর কাজ করেছেন এবং নিউ ইয়র্ক ও লন্ডনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ মেয়াদে তিনি সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও, গ্ল্যাক্সো ওয়েলকাম, আইবিএম এবং নরটেল-এর সাথেও কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।

আসিফ সালেহ্ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ও অ্যালায়েন্সের সক্রিয় সদস্য হিসেবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্জনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করেন। ব্রুকলিন ইন্সটিটিউট-এর মিলিয়নস লার্নিং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপের তিনি একজন সদস্য। বিশ্বব্যাপী শিশু ও তরুণদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে কার্যকর সমাধান উদ্ভাবনের লক্ষ্যে এই সংগঠনটি কাজ করে থাকে। শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশের লক্ষ্যে কর্মরত দক্ষিণ আফ্রিকা ভিত্তিক সংগঠন “ইনোভেশন এজ”-এরও তিনি একজন সদস্য।

বাংলাদেশিদের মানবিক ও অর্থনৈতিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে পরিচালিত বৈশ্বিক সংগঠন দৃষ্টিপাত-এর তিনি প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৩ সালে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম-এর ইয়ং গ্লোবাল লিডার নির্বাচিত হন। এছাড়াও ২০০৭ সালে বাংলাদেশি আমেরিকান ফাউন্ডেশন এবং ২০০৮ সালে এশিয়া সোসাইটির এশিয়া-২১ কর্মসূচি আসিফ সালেহ্-কে তার অবদানের জন্য স্বীকৃতি প্রদান করে। ২০১২ সালে তিনি এশিয়া ২১-এর ফেলো নির্বাচিত হন।

আসিফ সালেহ কম্পিউটার সায়েন্স-এ স্নাতক এবং নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির স্টার্ন স্কুল অব বিজনেস থেকে ব্যবস্থাপনা ও মার্কেটিং-এ এমবিএ করেছেন।

আসিফ সালেহ্ ইডি এনজিও নির্বাহী পরিচালক ফজলে হাসান আবেদ ব্র্যাক

বিজ্ঞাপন

বিফ রেজালা
৯ জুন ২০২৫ ১৭:৩৪

আরো

সম্পর্কিত খবর