ঢাকা: অবসরে যাওয়ার কথা থাকলেও আইজিপি হিসেবে মেয়াদ বাড়ানো হয় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের। নিজের সম্মতিতে এ দেড় বছরের চুক্তিতে এ নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু দ্বিতীয়বার মেয়াদ বাড়ানোর সময় অনাগ্রহী ছিলেন তিনি। এমনকি জ্যেষ্ঠতার বিবেচনায় অন্য কাউকে আইজিপির পদে বসানোর কথা জানান। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবকে নিজের অনাগ্রহের কথা জানালেও গোপালগঞ্জকেন্দ্রিক দ্বন্দ্বের কারণে তাকে আবারও আইজিপি বানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে জেরার সময় এমন দাবি করেন সাবেক এই আইজিপি। তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাকে জেরা করছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত তাকে জেরা করা হয়। এরপর বিরতি দেন ট্রাইব্যুনাল। জেরার সময় মামুনের উদ্দেশ্যে আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, ‘তদবির করে আপনি আইজিপি হিসেবে এক্সটেনশন নিয়েছেন’। জবাবে সত্য নয় বলে জানান এ মামলায় আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া মামুন।
পাল্টা প্রশ্নে মেয়াদ বাড়ানোর সময় তিনি কোনো আপত্তি জানিয়েছিলেন কিনা; এমন কথা জানতে চান শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী। তখন অবসরের পরও দুবার আইজিপি হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন চৌধুরী মামুন।
জেরায় তিনি বলেন, ‘ছাত্রজীবনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম। আমার বাবা দীর্ঘকাল শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।আমার ছোট ভাইও একই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া ২০১৮ সালের নির্বাচন ঘিরে ভোট কারচুপি কিংবা অনিয়মের কারণে অন্য সব পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে আমিও পদক পেয়েছি। তবে ঠিক কী কারণে পেয়েছি তা এ মুহূর্তে বলতে পারবো না। তবে এর আগে-পরেও দুবার পদক পেয়েছি।’
এর আগে, ২ রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি শেষে মামুনকে আংশিক জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর স্টেট ডিফেন্সের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাকি জেরার জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।