ঢাকা: ‘আমার বয়স ৮১ বছরের বেশি। দুই সপ্তাহ আগে হার্ট অ্যাটাক হয়। আমি অসুস্থ। এসব বিবেচনা করে যা করার করবেন। কখনো অন্যায়ভাবে কোনো সুবিধা নেইনি। আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এমনটিই দাবি করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়ার আদালতে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন এবিএম খায়রুলকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাকে গ্রেফতার দেখানোর বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।
এর আগে, ৯ সেপ্টেম্বর মিথ্যা তথ্য দিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা মামলায় সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদনের ওপর শুনানি হয়। তবে তার উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত।
এদিন শুনানির একপর্যায়ে কথা বলতে আদালতের অনুমতি চান খায়রুল হক। অনুমতি পেলে তিনি বলেন, ‘অন্য সবার মতো আমিও প্লটের জন্য আবেদন করেছিলাম। এত বছর আগের কথা, কারোরই মনে থাকার কথা না। সে সময় আমি লিখেছিলাম, আমার টাকা নেই। অবসর নেওয়ার পরে টাকা দেব। সে সময় আমার এত টাকা ছিল না। অবসর নেওয়ার পর যে টাকাটা বাকি ছিল, সব টাকা আমি পরিশোধ করি। এরপর আমাকে প্লট রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে।’
সাবেক এই বিচারপতি বলেন, ‘আমার বয়স ৮১ বছরের বেশি। দুই সপ্তাহ আগে হার্ট অ্যাটাক হয়। আমি অসুস্থ। এগুলো বিবেচনা করে যা করার করবেন। এছাড়া রানা প্লাজা ভবন ধ্বসের যে ঘটনা ঘটেছিল, সে সময়ে আমাকে ও সুলতানা কামালসহ তিনজনকে নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে কমিশন গঠন করা হয়। আমাদের প্রতি মাসে বেতন ছিল সাড়ে ৯ হাজার ডলার। আমরা ১৮ মাস কাজ করেছিলাম। সে সময় একটা টাকাও আমরা নেইনি। চেয়েছিলাম এই দেড় কোটি টাকা রানা প্লাজায় যাদের ক্ষতি হয়েছে তারা যেন পায়।’
এরপর জামিন চেয়ে শুনানি করেন খায়রুল হকের আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহিন। তবে দুদকের পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন প্রসিকিউটর হাফিজুর রহমান। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে সাবেক খায়রুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।