Tuesday 17 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৮ বছর ধরে আদালতে ঘুরছেন অশীতিপর রাবেয়া, বিচারককে তলব


২৬ জুন ২০১৯ ১৬:০১ | আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ১৯:৫৯
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: অশীতিপর রাবেয়া খাতুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র ও গুলি নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধে দায়ের হওয়া মামলা স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও তা চালু রাখার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ঢাকার অতিরিক্ত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের-২ এর বিচারককে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে আগামী বুধবার (৩ জুলাই) ওই বিচারককে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার পাশাপাশি মামলার সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাহাবুদ্দিন মিয়াকে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এছাড়া এ মামলার অন্যতম আসামি জুলহাস মিয়ার মৃত্যু হয়েছে কি না তা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে ৩ জুলাইয়ের মধ্যে হাইকোর্টকে জানাতে বলা হয়েছে। একইদিনে মামলার আরেক আসামি রাবেয়ার বয়স প্রমাণে তার জাতীয় পরিচয়পত্র আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (২৬ জুন) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

আদালতে আসামিদের আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আশরাফুল আলম নোবেল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারওয়ার কাজল।

অশীতিপর রাবেয়া খাতুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র ও গুলি নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধে তেজগাঁও থানার দায়ের হওয়া মামলায় ১৮ বছর ধরে নিম্ন আদালতে চলমান থাকায় নথি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে গত ৩০ এপ্রিল এই মামলায় বিচারে বিলম্ব কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত। সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতের বিচারককে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।

গত ২৫ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ‘অশীতিপর রাবেয়া: আদালতের বারান্দায় আর কত ঘুরবেন তিনি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তা সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে বৃদ্ধার বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘১৮ বছর ধরে আদালতে হাজিরা দেই। মামলা শেষ হয় না। কবে শেষ হবে, তাও জানি না। পুলিশরে শরবত, মোরাব্বা বানাই খাওয়াছি। তারপরেও মামলায় আমারে আসামি বানাইছে। আমি আর বাঁচতে চাই না। মরতে চাই। অনেকদিন ধরে হাজিরা দেই। আদালত আমাকে মামলা থেকে খালাসও দেয় না, শাস্তিও দেয় না।’

পত্রিকায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অবৈধ অস্ত্র ও গুলি নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধে তেজগাঁও থানার এসআই আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে অশীতিপর রাবেয়া খাতুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিলেন ২০০২ সালের ২ জুন। মামলা নম্বর ১৯৩৮/০২।

ওই মামলায় রাবেয়া খাতুন গ্রেফতার হন। ছয় মাস কারাগারে থাকার পর তিনি জামিনে বের হয়ে আসেন। পরে তাকে সহ দুই আসামি জুলহাস ও মাসুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ২০০৩ সালের ২৪ মার্চ শুরু হয় মামলার বিচার।

তেজগাঁও থানা এলাকার ৩/ক গার্ডেন রোড, কাজী আবদুল জাহিদের ঘরের দক্ষিণ পাশ থেকে রাবেয়া খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধারের দাবি করে পুলিশ। সেই মামলা থেকে মুক্তি পেতে ঢাকার আদালতের বারান্দায় ১৮ বছর ধরে ঘুরছেন এই অশীতিপর বৃদ্ধা।

সারাবাংলা/এজেডকে/একে

অশীতিপর বৃদ্ধা অস্ত্র মামলা আদালত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর