অশুদ্ধ গ্রামার বইয়ের প্রকাশনা ও বিক্রি বন্ধে রুল
২৯ জুলাই ২০১৯ ১৬:২৬
ঢাকা: চতুর্থ শ্রেণি থেকে স্নাতক পর্যন্ত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) অনুমোদিত বিভিন্ন লেখকের ইংরেজি ব্যাকরণ বইয়ের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এনসিটিবি অনুমোদিত বিভিন্ন লেখকের গ্রামারের ভুল অধ্যায়গুলো যুক্ত করে দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট এ রুল জারি করে।
চতুর্থ শ্রেণি থেকে স্নাতক পর্যন্ত চৌধুরী অ্যান্ড হোসাইন, বাবুল চন্দ্র শীল, প্রফেসর এফ এম আব্দুল রব, সায়মা প্রসাদ ঘোষ, ফিরোজ মুকুল, সাইফুর রহমান খানের লেখা ইংরেজি গ্রামার কেন অশুদ্ধ, অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং এসব লেখকের ইংরেজি গ্রামার বইয়ের প্রকাশনা, বিপণন বন্ধের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
শিক্ষা সচিব, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অদিদপ্তর (মাউশি)’র মহাপরিচালক, পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)’র চেয়ারম্যান ও শিক্ষক চৌধুরী অ্যান্ড হোসাইনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রোববার এ আদেশ হলেও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা সোমবার (২৯ জুলাই) এ আদেশের বিষয় নিশ্চিত করেন।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন মো. মোজাম্মেল হক, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ ও আইনজীবী সাকিব মাবুদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
পরে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ বলেন, “চতুর্থ শ্রেণি থেকে স্নাতক পর্যন্ত এনসিটিবি অনুমোদিত যেসব গ্রামার বই আছে, তার প্রায় সবগুলোতেই ব্যাকরণগত নানা ভুল রয়েছে। এসব গ্রামার বইয়ের প্রত্যেকটাতেই ‘নাউনকে’ ‘প্রোনাউন’ হিসেবে দেখানো হয়েছে।”
যেমন ‘অ্যাডভান্স লার্নার্স কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইংলিশ গ্রামার অ্যান্ড কম্পোজিশন’ নামের গ্রামার বইটি চতুর্থ শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্য। এই বইয়ে ‘Bangladesh, Dog, Dhaka ইত্যাদি শব্দকে pronoun হিসেবে দেখানো হয়েছে।
তাছাড়া সাবজেক্ট মূলত সাতটি (i, you,we, he, she, it, they) হলেও এসব গ্রামার বইয়ে (me, us, my, our, ours, tho, the, your, yours, him) -সহ দেখানো হয়েছে হয়েছে ২৫টি। এনসিটিব অনুমোদিত প্রায় প্রত্যেকটি ইংলিশ গ্রামারেই একই ভুল আছে।
এ আইনজীবী জানান, বিগত ১২ বছর ধরে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের এভাবে ভুল ইংরেজি শেখানো হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের ইংরেজির ভিত দুর্বল হয়ে গড়ে উঠছে বলে মনে করেন তিনি। এনসিটিবি অনুমোদিত নানা ইংরেজি গ্রামার বই পড়ানো হচ্ছে। এসব গ্রামার বইয়ে নানা অসঙ্গতি, ভুল রয়েছে। বিভিন্নভাবে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব সংশোধনে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এতে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম সংবিধান প্রদত্ত শিক্ষার মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করছে।
এ চিন্তা থেকেই জনস্বার্থে রিট আবেদনটি করেন গাজীপুরের কোনাবাড়ি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সাবেক প্রভাষক মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী।
গত ২৪ জুন হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করার আগে ইংরেজি গ্রামারে ভুল ও বিভ্রান্তিকর নিয়ম-কানুনের সংশোধনের প্রতিকার চেয়ে গত ১২ ও ২০ এপ্রিল মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আবেদন করেন। সাড়া না পেয়ে গত ১৫ মে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছেও আবেদন জানান।
যেমন সপ্তম শ্রেণির ‘অ্যাডভান্স লার্নার্স কমিউনিকেশন ইংলিশ গ্রামার অ্যান্ড কম্পোজিশন’ বইটির ৩৮ পৃষ্ঠায় যেখানে আই, ইউ, উই, হি, শি, ইট, দে, মিসহ ২৫টি শব্দকে সাবজেক্ট হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
উচ্চ মাধ্যমিকের প্রফেসর এফ এম আব্দুর রবের ‘সেলফ টিচিং ইংশিল ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কমপোজিশন’ ব্ইয়ের ১২৭ পৃষ্ঠায় ভার্বের শেষে ‘আইএনজি’, ‘আইইডি’ ও ‘ইডি’ যোগ করার নিয়ম ভুলভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, ‘Verb’ এর শেষের অক্ষরটি ‘Consonent’ হলে তার আগের অক্ষরটি যদি ‘Vowel’ হয় তাহলে শেষের consonent-এর সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি কনসোনেন্ট যোগ করে আইএনজি যোগ করতে হবে।
উদাহরণ হিসেবে ‘begin-beginning, dig-digging, get- getting…এরকম ১৪টি উদাহরণ দেওয়া হয়েছে।
আবেদনকারীর বক্তব্য হচ্ছে, ১২৫টিরও বেশি শব্দ আছে যেগুলো এই নিয়মের সঙ্গে যাচ্ছে না। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলছেন, Open-এর সঙ্গে ing যোগ করে আমরা লিখছি Opening. কিন্তু আমরা যদি ওই ফর্মুলায় লিখতে যাই তাহলে লিখতে হবে Openning। কিন্তু এ বানানটি তো ভুল। ঠিক এমনিভাবে Develop, Visit, Answer, Suffer, Listen এর মত ১২৫টিরও বেশি শব্দ ভুল লিখতে হবে।
এছাড়াও ‘Verb’ সাথে থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার বুঝাতে ‘s’ বা ‘es’ বা ‘ies’ কীভাবে যোগ করতে হবে তা বলা হয়নি। এরকম অসংখ্য অসঙ্গতি, ভুল রয়েছে।