ঢাকা: বিদেশে উচ্চ বেতনের প্রলোভনে কিরগিজস্তানে গিয়ে কাজ না পাওয়া ও প্রতারণার শিকার হওয়া ১৮০ বাংলাদেশি বিশেষ এক ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোরে তারা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ও ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সমন্বয়ে ফেরত আসা নাগরিকদের বিমানবন্দরে অর্থ ও জরুরি সহায়তা দেওয়া হয়।
ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান জানান, বেশি বেতনের লোভ দেখিয়ে মানুষগুলোকে কিরগিজস্তানে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে অনেকে কাজ পাননি, বেতন ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন, অনেকে নথিপত্রহীন হয়ে পড়েছেন। পরিবারগুলো মুক্তিপণ দিতেও বাধ্য হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিজ্ঞতা
-
লালমনিরহাটের শহীদুল ইসলাম (৪৫): ওয়েল্ডিংয়ের কাজের আশায় যান। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নানা কাজ করে টিকে ছিলেন। সাত মাস বেতন ছাড়া কাজ করেন। পরে তিন মাস জেল খেটে দেশে ফিরেছেন।
-
শরীয়তপুরের প্রিন্স মিয়া (২১): ইউরোপ পাঠানোর প্রলোভনে দালালকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেন। দুবাই হয়ে বিশকেক পাঠানো হয়। ইতালি নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি ৪৪ দিন কারাভোগ করেন।
-
কুষ্টিয়ার মিলন আলী (৩৮): ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েন। চার মাস বেতন পাননি। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে তিন মাসের বেশি জেল খাটেন। তিনি অভিযোগ করেন, তীব্র রোদে দাঁড় করিয়ে রাখার মতো নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
ব্র্যাকের সহায়তা কার্যক্রম
ব্র্যাক জানায়, গত আট বছর ধরে বিদেশফেরত নাগরিকদের বিমানবন্দরে সহায়তা দিচ্ছে ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টার। এ সময়ে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে সহযোগিতা করা হয়েছে। শুধু ২০২৪ সালেই বিভিন্ন দেশ থেকে ৪০ জন প্রবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে। মানবপাচারবিরোধী লড়াইয়ে অবদান রাখায় টিআইপি হিরো–২০২৪ পুরস্কারে ভূষিত আল-আমিন নয়ন, মালয়েশিয়া থেকে ফেরত আসা রায়হান কবিরসহ একটি দল এই কার্যক্রমে যুক্ত আছেন।