ঢাকা: আগামী সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব ধরনের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের তথ্যপ্রযুক্তিগত সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে এবং সব ধরনের সাইবার অপরাধ কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে হবে। সরকার নাগরিক সেবাকে ক্রমশ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব সেবা সুরক্ষিত ও নির্বিঘ্ন রাখতে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি।
নাগরিক সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট খাতগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মিত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার হালনাগাদ করতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জনবলকে আরও দক্ষ করে তুলতে হবে।

প্রতিষ্ঠান ও জনবলকে একটি রেটিং পদ্ধতির আওতায় আনার কথাও বলেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে সাইবার সুরক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত মূল্যায়ন সহজ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ফিনান্সিয়াল সেক্টরে সাইবার অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কোনও অপরাধী যেন পার পেয়ে না যায়, সে জন্য জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে বিচার বিভাগের পাশাপাশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, ইতোমধ্যে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ক্রিটিক্যাল ইনফরমেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও কিছু প্রতিষ্ঠান এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।
আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গুজব, মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশনসহ বিভিন্ন সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি ও বিটিআরসির মধ্যে সমন্বয় জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ. মনসুর বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরের সাইবার নিরাপত্তা আরও দৃঢ় করতে ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং আরও কিছু কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এছাড়া তিনি সেক্টরাল সার্ট (CERT) গঠনের উদ্দোগের প্রশংসা করেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইনউপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
২১ মে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রনয়নের পর এই সংশোধিত অধ্যাদেশের অধীনে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত ২৬ আগস্ট জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিল গঠিত হয়।
২৫ সদস্যের এই কাউন্সিলের নেতৃত্বে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।