Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কবে শুরু, নেপিডোর কাছে জানতে চাইবে ঢাকা


২ মে ২০১৯ ২১:৪৩

বাংলাদেশ-মিয়ানমার

ঢাকা: মিয়ানমার সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকট কাটাতে ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় বৈঠক শুক্রবার (৩ মে) নেপিডোতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ঢাকার কূটনীতিকরা বলছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য নেপিডো কী করেছে, বৈঠকে ঢাকার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে তাগাদা দেওয়া হবে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এ বৈঠকে প্রত্যাবাসনের জন্য আরও একটি তালিকা ঢাকার পক্ষ থেকে নেপিডোকে দেওয়া হবে। এর আগেও এমন একাধিক তালিকা ঢাকা থেকে নেপিডোকে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

পাশাপাশি দুই দেশের শূন্যরেখায় অবস্থানকারী প্রায় সাত হাজার রোহিঙ্গাকে যেন মিয়ানমার সরাসরি ফিরিয়ে নিয়ে যায়, সে বিষয়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় বৈঠকে আবারও বিশেষ গুরুত্ব দেবে ঢাকা।

এদিকে, ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি ৮ হাজার ৩২ জনের একটি তালিকা ঢাকার পক্ষ থেকে নেপিডোকে দেওয়া হয়। এরপরও মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, গত একবছরে নেপিডো ওই তালিকার মাত্র অর্ধেক (কমবেশি ৪ হাজার) যাচাই-বাছাই করেছে।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে গত ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের মধ্যে ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠিত হয়।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে গত ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে নেপিডোর সঙ্গে সই করা চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, ৯ অক্টোবর ২০১৬ ও ২৫ আগস্ট ২০১৭ সালের পর যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের ফেরত নেবে মিয়ানমার। চুক্তি সইয়ের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

বিজ্ঞাপন

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, চুক্তি সইয়ের পর প্রায় দেড় বছর পার হলেও প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। উল্টো একাধিক অজুহাতে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে নেপিডো।

জাতিসংঘসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে জানিয়েছেন, প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেনি মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকার আন্তরিক নয়।

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক জানান, যে কোনো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াই জটিল এবং ঝামেলাপূর্ণ। এই জটিল এবং ঝামেলাপূর্ণ কাজটিকে আমরা সহজ ও সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। যাতে নির্যাতিত ও নিপীড়িত রোহিঙ্গা সম্প্রদায় তাদের বসত-ভিটায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ পায়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নাই।’

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে মিয়ানমারের নাগরিক প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় তুমুল সমালোচনা করছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, কুয়েত, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পুরো বিশ্ব।

সারাবাংলা/জেআইএল/একে

বাংলাদেশ মিয়ানমার রোহিঙ্গা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর