জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার চায় ঢাকা-টোকিও
২৯ মে ২০১৯ ২২:৪৩
ঢাকা: জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার চেয়েছে ঢাকা ও টোকিও। জাপান সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (২৯ মে) জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ওই বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
জাপানের কূটনৈতিক একটি সূত্র সারাবাংলাকে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, বৈশ্বিক নিরাপত্তারসহ একাধিক ইস্যুতে আলোচনা করেন। যার উল্লেখযোগ্য ছিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা, প্রগতি এবং স্থিতিশীলতার জন্য জাতিসংঘের আরও বড় ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। এ জন্য এই সংস্থাটির সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।’
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বের সব কয়টি দেশ একমত পোষণ করলেও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কারণেই সংকট সমাধান হচ্ছে না। এতেই বোঝা যায়, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ২৫০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হলো নিরাপত্তা পরিষদ। পনের সদস্য দেশ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ গঠিত। চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। এই স্থায়ী সদস্য দেশগুলো নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন, নতুন সদস্য দেশ অন্তর্ভুক্তি বা মহাসচিব প্রার্থীর নিয়োগের বিষয়ে ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা আছে। স্থায়ী সদস্যের পাশাপাশি জাতিসংঘে ১০টি অস্থায়ী সদস্যপদ আছে। যারা নিদিষ্ট অঞ্চল থেকে দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
২০২২ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য পদের জন্য জাপান প্রার্থী। শিনজো আবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য পদের ভোটে জাপানের পক্ষে বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। যাকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দুই দেশের মধ্যে আস্থার সম্পর্কের প্রতীক বলে অভিহিত করেছেন।
এ ছাড়া শিনজো আবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ২৫০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার জন্য জাপানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। বাংলাদেশের পাঁচটি উন্নয়ন প্রকল্পে এই ঋণসহায়তার অর্থ ব্যয় করা হবে।
আরও পড়ুন: রপ্তানিমুখী খাতে বিনিয়োগ করুন, জাপানি ব্যবসায়ীদের প্রধানমন্ত্রী
উন্নয়ন প্রকল্পগুলো হচ্ছে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন, ঢাকার যোগাযোগ উন্নয়ন প্রকল্প (ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট- লাইন ওয়ান), বৈদেশিক বিনিয়োগে উৎসাহিত করা সংক্রান্ত প্রকল্প (ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন প্রজেক্ট টু), জ্বালানি খাতের উন্নয়ন (এনার্জি ইফিসিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন প্রমোশন ফিন্যান্সিং প্রজেক্ট ফেইজ টু) এবং মাতারবাড়ি কয়লা উন্নয়ন প্রকল্প (মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ারড পাওয়ার প্রজেক্ট ফাইভ)।
জাপান সরকারের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী গত ২৮ মে থেকে টোকিও সফরের রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে অর্থমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি ও শিল্প বিনিয়োগ উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং উচ্চপর্যায়ের সংশ্লিষ্টরা সরকারি কর্মকর্তারা রয়েছেন।
সারাবাংলা/জেআইএল/একে