বাজেট আলোচনায় ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের সংস্কার দাবি
২২ জুন ২০১৯ ২১:৫৬
ঢাকা: ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সাধারণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সরকার দলীয় ও বিরোধী দলীয় বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য বক্তব্য রাখেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার দলীয় এমপিরা জানান, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবিলা করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারণেই উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব হচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের দ্বারা বিভ্রান্ত না হয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। অন্যদিকে বিরোধী দলীয় এমপিরা ব্যাংক ও পুঁজিবারের সংস্কার দাবি করেছেন।
শনিবার (২২ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে এই আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সরকারি দলের অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, ফরিদুল হক খান, আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, এম এ মতিন, আহসানুল ইসলাম টিটু, সুবর্ণা মুস্তফা, বেগম নার্গিস রহমান, মোহাম্মদ হাছান ইমাম খাঁন, বেগম তামান্না নুসরাত বুবলী, হাফেজ রুহুল আমিন মাদানি ও বেগম রুমানা আলী এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ডা. রুস্তম আলী ফরাজী,নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বি এইচ হারুনসহ অন্যরা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৎ, দেশপ্রেম, দক্ষতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ আজ সব দিক থেকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সত্যিই তিনি বদলে দিয়েছেন বাংলাদেশকে।’
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ বদলে গেছে। এখন আর দেশে ছেড়া কাপড়ে মানুষ এবং ভিক্ষুকের ডাক চিৎকার শোনা যায় না। ব্যবসা-বাণিজ্যে বাংলাদেশ আজ বিশ্বকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।’
বিএনপির রাজনীতি সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা সন্ত্রাসী দল হিসেবে এরইমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। গাধা যেমন জল ঘোলা করে পানি খায়, তেমনি বিএনপির সংসদ সদস্যরা জল ঘোলা করে শপথ নিয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সব সময় বাজেট প্রত্যাখান করেছে। সিপিডির আওয়াজ হচ্ছে বর্ষাকালে বিশেষ প্রজাতির ব্যাঙয়ের মতো।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘দেশে আজ প্রতিটি মানুষ ভালো আছেন। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন দেখে মানুষ আজ স্বস্তিতে আছেন আছেন। মানুষ যা উপলব্ধি করতে পারে তা বিশ্বাস করে। এই সরকার আজ মানুষকে কিছু দিতে পেরেছে এটা সবাই স্বীকার করছেন। আজ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভালো। ঘরের দরজা না লাগিয়ে ঘুমানো যায়। গ্রামে কৃষকরা আজ অনেক আনন্দিত।’
ব্যাংক ও পুঁজিবারের সংস্কার দাবি করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য রুস্তম আলী ফরাজি। তিনি ব্যাংক সংস্কারে কমিশন গঠনেরও দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর অবন্থা খুব খারাপ। পুঁজিবাজারের অবস্থাও খারাপ। কিছু ব্যক্তি এই ব্যাংক ও পুঁজিবাজারকে ধ্বংস করেছে। তারা নিজেরা লাভবান হয়েছেন আর প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছেন। ব্যাংক ও পুঁজিবারের সংস্কার করা দরকার। ব্যাংকের জন্য দরকার কমিশন গঠন করা। অর্থমন্ত্রী আগে বলেছিলেন ঋণখেলাপীদের ব্যাপারে কঠোর হবো, কোনো ছাড় দেবো না। কিন্তু তিনি তো কঠোর হলেন না ছাড় দিলেন।’
এ সময় তিনি দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় বাজেটর একটি অংশ সংসদে প্রধানমন্ত্রী উস্থাপন করেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাজেটেও দিয়ে বোঝালেন তিনি সব পারেন। আমাদের অর্থমন্ত্রীর ডেঙ্গু হয়েছে। আমি বলেছিলাম ছোট একটি মশা কাউকে ছাড়ে না, তিনি মন্ত্রী হন আর যে-ই হন। মশা মারার ব্যবস্থা করেন।’
অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা থেকে সকল মহার্ঘ্য অর্জনের একমাত্র রাজনৈতিক দল। পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির মাধ্যমে অভীষ্ঠ লক্ষ্য নিয়ে যাচ্ছেন।’
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের এমপি সুবর্ণা মোস্তফা বলেন, ‘অভিনয় শিল্পীরা দেশের অর্থনীতিকে বড় ভূমিকা রাখছে, দেশে-বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন। তবুও শিল্পী পেশা কোনো স্বীকৃত পেশা নয়। আমরা সরকারের কাছে এ পেশার স্বীকৃতি চাই।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে