সারাদেশে সমন্বয় করতে টিসিবি পণ্য বিক্রি স্থগিত: বাণিজ্যমন্ত্রী
১৬ মে ২০২২ ১৪:১০
ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সারাদেশে একযোগে শহর ও গ্রামে ১ কোটি পরিবারকে কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবি পণ্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। এরই মধ্যে গ্রামের তালিকা পাওয়া গেলেও শহরের তালিকা এখনো পাওয়া যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিষয়টি সমন্বয় করতে স্বল্পসময়ের জন্য টিসিবি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ মে) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অংশ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় এতে শতাধিক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই টিসিবির ট্রাক সেল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ১ কোটি মানুষকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু হবে। এ সময়ে গ্রামের সঙ্গে শহরের নিম্ন আয়ের মানুষকে একইভাবে পণ্য দেওয়া হবে। বিষয়টি সমন্বয়ের জন্যই ট্রাক সেল কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে দেশের মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ট্রাকের মাধ্যমে সোমবার (১৬ মে) থেকে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করার কথা জানিয়েছিল ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। তবে সারাদেশে একযোগে শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রোববার রাতে শেষ মুহূর্তে এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এক কোটি পরিবারের মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ গ্রামাঞ্চলে বিতরণ করা হবে। বাকি ১৫/২০ লাখ রাজধানী শহরে বিতরণ করা হয়। তবে রাজধানী ঢাকা ও বরিশাল মহানগরের টিসিবি ফ্যামিলি কার্ডের তালিকা এখনো পাওয়া যায়নি। সারাদেশের তালিকা পেলে একযোগে তা শুরু হবে। আর এই কারণে কেবল রাজধানীর ১৫/২০ লাখ লোকের জন্য ১৬ মে থেকে তা শুরু করার কথা থাকলে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়েছে।
ভোজ্য তেলের দাম বাড়া প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের বোজ্যতেলের চাহিদার ৯০ ভাগই আমাদের আমদানি করতে হয়। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়লে আমাদের দেশেও বাড়াতে হয়েছে, তখন আর না বাড়িয়ে উপায় থাকে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে চায় না। সাপ্লাই এবং চাহিদা ঠিক থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণেই থাকে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে। তাই এতো সমস্যায় পড়বে না দেশ। তবে যে যেখানে আছেন সবাই যাতে যার যার অবস্থান থেকে সাশ্রয়ী হই।
তিনি বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যে অনেককিছু কাটছাঁট করছে খরচের ক্ষেত্রে। সবাইকে এটা করতে হবে। কারণ যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে সমস্যা বাড়তে পারে।’
গমের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী মন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এখন গমের দামও বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি জিনিসপত্রের দামের ওপর পড়েছে। পাশাপাশি ভারত গম রফতানি বন্ধ করার কারণে আমরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছি। আশা করছি তা দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।’
টিপু মুনশি বলেন, আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের অবস্থা কখনো শ্রীলঙ্কার মতো হবে না। কারণ সরকার যথেষ্ট সচেতন আছে সব ব্যাপারে। তাই বিরোধীরা যতই বলুক, সেসব কথার কোন ভিত্তি নেই।
পেঁয়াজের দাম ঊর্ধমুখী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজধানীতে ৪৫ টাকা পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম সহনীয়। পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা ছাড়িয়ে গেলে ভোক্তাদের কিছুটা সমস্যা হবে। এই মূহুর্তে পেঁয়াজের দাম চড়া হলেও সেটা ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষকের প্রতি কেজি পেঁয়াাজের উৎপাদন খরচ ২০ টাকা। ফলে কৃষক ২৫ টাকার কম বিক্রি করলে তাদের লোকসান হবে। আমাদের কৃষকের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
সারাবাংলা/জিএস/এএম