ঢাকা: সরকারকে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা অনৈতিক, বেআইনি ও গণতন্ত্রবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, সরকারের অভ্যন্তরীণ তথ্য ফাঁসের হুমকি দেওয়া বা এর সুযোগ নিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা আইনের শাসনের পরিপন্থী ও দণ্ডনীয় অপরাধ।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত ‘জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নাগরিক সমাবেশে’ তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক মহল সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে। তারা সরকারের অভ্যন্তরীণ কিছু তথ্য ফাঁসের হুমকি দিয়েছে—এটি অত্যন্ত অশোভন ও অনৈতিক। সরকারকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনো গণতান্ত্রিক দলের নয়। সরকারের অভ্যন্তরে লোক নিয়োগ করে বা তথ্য ফাঁসের হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা আইনের শাসনের পরিপন্থী এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।’
মিরপুরের অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে দুদু বলেন, ‘গতকাল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৬ থেকে ২০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আমি নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। দেশে এখন মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সরকার মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। রাস্তাঘাটে বের হলেও মানুষ অনিরাপদ বোধ করছে—এ বিষয়ে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’
গণতন্ত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকার নয়, নির্বাচিত সরকারই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে। যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে স্বৈরশাসনের অবসানের যে প্রত্যাশা ছিল, তা ব্যাহত হবে। তাই নির্বাচন যেন কোনো বিশেষ দলের প্রভাবে না হয়—ডিসি, এসপি বা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিয়োগে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলেন শেখ মুজিব। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে তিনি বাকশাল গঠন করে রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন চালিয়েছিলেন। আর গত ১৫–১৬ বছর শেখ হাসিনার শাসনেও হাজারো মানুষ খুন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এই পরিবার লুটপাট ও দমননীতির মাধ্যমে দেশ চালাচ্ছে—তাদের বিচার দৃশ্যমান করতে হবে।’
ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, বাংলাদেশ বিপদের মুখে থাকবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে—ঐক্যবদ্ধ না হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে. এম. রকিবুল ইসলাম রিপন। বক্তব্য দেন ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবিরসহ অন্যরা।