ঢাকা: অবিলম্বে জুলাই সনদের আদেশ জারির দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আমরা এক টেবিলে বসতে প্রস্তুত। তবে সরকারকে মধ্যস্থতার দায়িত্ব নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশ শেষে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
গোলাম পরওয়ার প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি যদি ব্যর্থ হন, তাহলে আপনার অর্জিত মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে বসার আহ্বান জানিয়ে আপনি যে সম্মান অর্জন করেছেন, তা অক্ষুণ্ন রাখতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা জামায়াতের পক্ষ থেকে আগেই ঘোষণা দিয়েছি— আমরা প্রস্তুত।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবির পেছনে দেশি–বিদেশি নানা চক্র সক্রিয়। এর প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আটটি দল আজ পাঁচ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি দিচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম দাবি— অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসা করে পরওয়ার বলেন, ‘আপনি গণআকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান রেখে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করেছেন এবং ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব একত্র করেছেন। এখন সেই ঐকমত্য বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনার। বিলম্ব না করে অবিলম্বে জুলাই সনদের আদেশ জারি করুন। জাতীয় নির্বাচনের আগে নভেম্বরে গণভোটের মধ্য দিয়ে সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া সম্ভব।’
সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় বসার আহ্বানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা বসতে রাজি। খেলায় দুই দল থাকে, কিন্তু একজন রেফারি দরকার হয়—আপনি সেই রেফারির দায়িত্ব পালন করুন। আমরা সহনশীল, আলোচনায় আগ্রহী। জাতীয় স্বার্থে অতীতেও ছাড় দিয়েছি, প্রয়োজনে আবারও দেব। তবে সব উপদেষ্টার নিরপেক্ষ ভূমিকা আমরা চাই।”
তিনি আরও জানান, আজকের স্মারকলিপি কর্মসূচিতে আটটি দল অংশ নিচ্ছে। এর সঙ্গে আরও নতুন নতুন দল যুক্ত হবে, এই আন্দোলনে বিশাল জনতা শামিল হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা জসিম উদ্দিন সরকার, কামাল উদ্দিন, শামসুর রহমান ও গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
পরে শাপলা চত্ত্বর থেকে মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণকারীরা পুরানা পল্টন মোড়ে গিয়ে অন্য দলগুলোর সঙ্গে একত্রিত হন।