ঢাকা: বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ ও চট্টগ্রাম বন্দরসহ কৌশলগত খাতের দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ‘অন্তর্বর্তী নয়, কেবল নির্বাচিত সরকারেরই চূড়ান্ত অধিকার রয়েছে’— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) দিবাগত রাতে নিজের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত দীর্ঘ বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘জাতীয় অর্থনীতি, বন্দর পরিচালনা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য— এসব বিষয়ে দীর্ঘস্থায়ী সিদ্ধান্ত সবসময় জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই হওয়া উচিত। জনগণের ভোট ছাড়া কোনো সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার নৈতিক বা রাজনৈতিক বৈধতা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এলডিসি উত্তরণ প্রসঙ্গে তারেক রহমান অভিযোগ করেন, ‘‘সরকারের বক্তব্য ‘একমাত্রিক’ এবং ‘বিকল্পহীনতার’ একটি ভান তৈরি করা হচ্ছে।’’
তিনি বলেন, ‘একজন গাজীপুরের পোশাক কারখানা মালিক বা নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক পরিবার কীভাবে শুল্কসুবিধা হারানোর চাপ মোকাবিলা করবে— সেটা কেউ ভাবছে না। তারা ভোট দেয়নি, মতও নেওয়া হয়নি; অথচ তাদের ভবিষ্যতেই প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি।’
তারেক রহমান দাবি করেন, জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী অর্থনৈতিক ধাক্কা বা সংকট দেখা দিলে এলডিসি উত্তরণের সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়া যায়— অ্যাঙ্গোলা ও সামোয়ার উদাহরণও রয়েছে। তাই সময় বাড়ানো ‘অসম্ভব’ বলা বিভ্রান্তিকর বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে, কিন্তু যোগ্য হওয়া আর প্রস্তুত হওয়া এক বিষয় নয়। জনগণের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এমন সিদ্ধান্ত নিতে সময় চাওয়া দায়িত্বশীলতা— দুর্বলতা নয়।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রধান প্রবেশদ্বার; তাই এখানে নেওয়া যে কোনো দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রভাবিত করবে।’
তার অভিযোগ, ‘বন্দর নিয়ে যেসব কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা একটি অন্তর্বর্তী সরকারের করার কথা নয়। আলোচনাকে সীমিত করে দিয়ে জনসম্পৃক্ততাকে গুরুত্বহীন করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি কোনো ব্যক্তিকে আক্রমণ নয়; বরং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, নীতি এবং ভবিষ্যৎ সুরক্ষার প্রশ্ন।’
তারেক রহমান বলেন, ‘কেউ বলছে না যে বাংলাদেশ এগোবে না বা সংস্কার হবে না। কিন্তু দশকের ওপর প্রভাব রাখবে এমন যে কোনো সিদ্ধান্ত জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের নেওয়া উচিত।’
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের মানুষ কখনোই নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদাসীন নয়। তাদের মত ও সিদ্ধান্তই দেশের পথ নির্ধারণ করবে।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘অনেকেই সেই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছেন। এই দেশের ভবিষ্যৎ গড়বে এই দেশের মানুষই। সবার আগে বাংলাদেশ এই বিশ্বাস নিয়ে।’