ঢাকা: দেশে ভিন্নমত প্রকাশ করলেই তাকে শত্রু হিসেবে দেখার প্রবণতা ক্রমেই বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গণতন্ত্রে ফিরে যেতে হলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি বলেও তিনি জানান।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশে ভিন্নমত পোষণ করলেই তাকে শত্রু মনে করা হয়, তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারণার মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে— যা গণতান্ত্রিক যাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে। এসব থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মতের ভিন্নতা থাকতেই পারে, কিন্তু যে কোনো অবস্থায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হবে। গণতন্ত্রে ফিরে যেতে চাইলে অপরের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে মূল্য দিতে হবে। গণতন্ত্রে সব বিষয়ে একমত হওয়া সম্ভব নয়।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতি এখন একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই একটি গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসবে বলে আমরা আশাবাদী।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী সরকার যে-ই আসুক না কেন, তারা যেন ভিন্নমতকে দমন না করে বরং গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করে।
গণমাধ্যমের সংকুচিত স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে গণমাধ্যমের কর্মপরিবেশ সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী শাসনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের জায়গাটা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সেই পরিস্থিতি থেকে বের হতে হলে সংবাদকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে খালেদা জিয়াও গণমাধ্যমের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিজেদের অধিকার আদায় করতে হলে সাংবাদিক ইউনিয়নকে শক্তিশালী করতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করলে সমস্যা সমাধান হবে না। মালিকপক্ষ বা সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের দাবি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করতে হবে।’
এ সময় তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার আশু রোগমুক্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরীসহ রাজনৈতিক ও গণমাধ্যম অঙ্গনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।